বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমাদের যুদ্ধ শেষ হয়ে যাইনি। আপনারা সব সময় সতর্ক ও সজাগ থাকবেন। সতর্কতার সঙ্গে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে এগিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, সেই সব রাজনৈতিক দলগুলোকে জানাতে চাই, যারা আজকে ভুল করছেন এই চিন্তা করে যে, নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করলে তারা উপকৃত হবেন। কিন্তু এতে বাংলাদেশের মানুষ উপ্রকৃত হবে না।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দিকে শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা বিশ্ব তাকিয়ে। প্রতিটি গণতান্ত্রিক দেশ চায় বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হোক এবং তারেক রহমান সেটার নেতৃত্ব দিক।
তিনি বলেন, বিএনপির জন্মই সংস্কার দিয়ে। প্রেসিডেন্ট জিয়ার ১৯ দফা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ম্যাডাম জিয়ার ১৬ সালের ভিশন ৩০ এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা —এটাই তো হলো সংস্কারের মূল ভিত্তি। ঠাকুরগাঁও ছিল আওয়ামী লীগের ঘাঁটি, সেই ঘাঁটিকে দূর করে এখন বিএনপির ঘাঁটি হয়েছে। ঠাকুরগাঁওয়ে ৩টি আসনেই আমরা বিপুল ভোটে বিজয় লাভ করব। বর্তমানে বহু তরুণ নেতৃত্ব বের হয়েছে। তাদের নেতৃত্বেই বিএনপি এখন অনেক শক্তিশালী।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ২০১৫ বছর লড়াই-সংগ্রাম করে একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশ পেয়েছি। ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করতে পেরেছি। আমাদের অধিকারগুলোকে প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ পেয়েছি। এরই মধ্যে আমাদের প্রায় ২ হাজার তরুণ নেতাকর্মী প্রাণ দিয়েছেন। ৬০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে। ঠাকুরগাঁওয়েই সাড়ে ৭ হাজার মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে এবং ১২ জন শহিদ হয়েছেন।
তিনি বলেন, আমাদের নেতার সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার আলোচনা হয়েছে এবং নির্বাচনের সময় নির্ধারিত হয়ে গেছে। সেই সময় বাংলাদেশের শত্রুরা বারবার বাংলাদেশকে অস্থিশীল করতে চেয়েছে এবং স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকে হত্যা করেছে সেই চক্রান্তকারী আবারও বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করার চেষ্টা করছে।
তিনি আরও বলেন, জাতি যখন তাকিয়ে আছে, একটা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা নির্বাচিত সরকার গঠন করব, পার্লামেন্ট গঠন করব, গণতন্ত্রে ফিরে যাবো—ঠিক তখনই এই সমস্যাগুলো তৈরি করা শুরু করেছে।
এর আগে, সকালে দ্বি-বার্ষীক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ ছাড়া, দলটির ভাইস চেয়ারম্যান সামসুজ্জামান দুদু প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন।
জেলা বিএনপির সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নুর করিমের সভাপতিত্বে দ্বি-বার্ষীক সম্মেলন আরও বক্তব্য দেন রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু, সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুল খালেক, সহসাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলাম শরিফ, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আবু হানিফ মুক্তা, জেলা মহিলাদলের সভাপতি ফোরাতুন নাহার প্যারিস, ছাত্রদলের সভাপতি মো. কায়েস আলীসহ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২৪ মে জেলা বিএনপির সম্মেলন হয়েছিল। সেই সম্মেলনে সভাপতি সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত তৈমুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন সাবেক পৌর মেয়র মির্জা ফয়সল আমিন।
দীর্ঘ ৮ বছর পর আজ (সোমবার) জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে নতুন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন জেলার বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. পয়গাম আলী। আর সভাপতি প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায় আগেই জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র মির্জা ফয়সল আমিনকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়।
ইউটি/টিএ