প্রধানমন্ত্রীসহ বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর পদত্যাগের কারণে রাজনৈতিক শূন্যতা তৈরির কারণে অস্থায়ীভিত্তিতে ক্ষমতা নিতে পারে নেপালের সেনাবাহিনী।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি পদত্যাগ করার পর নেপালে আইন ও শাসন ভেঙে পড়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনী বলেছে, “জাতীয় স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, ভৌগোলিক অখণ্ডতা, জাতীয় ঐক্য এবং নেপালী জনগণের নিরাপত্তা রক্ষা করার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে সেনাবাহিনী পুরোপুরি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
বর্তমানে নেপালে কঠিন সময় চলছে উল্লেখ করে সেনাবাহিনী বলেছে তাদের সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। বিশেষ করে তরুণদের সহায়তা একান্তভাবে কামনা করেছে তারা।
সেনাবাহিনী বলেছে, “আন্তরিকভাবে সকলের কাছে, বিশেষ করে তরুণদের কাছে, এই কঠিন সময়ে সামাজিক সম্প্রীতি, শান্তি এবং জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার জন্য গঠনমূলক ভূমিকা পালনের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি আমরা।”
এদিকে বিক্ষোভের মুখে কেপি শর্মা ওলি পদত্যাগের পর নেপালে নতুন প্রধানমন্ত্রীর খোঁজ চলছে। এরমধ্যে রাজধানী কাঠমান্ডুর মেয়র বালেন্দ্র শাহকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দিতে দাবি জানাচ্ছে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া জেন-জি।
মঙ্গলবার কেপি শর্মা দায়িত্ব ছাড়ার পর অনলাইনে জেন-জি বিক্ষোভকারীরা বালেন্দ্রকে দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সামাজিকমাধ্যমে পোস্ট করছেন।
গত সপ্তাহে ফেসবুক, ইউটিউবসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের ঘোষণা দেয় নেপাল সরকার। এর প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসেন তারা। তবে গতকাল সোমবার বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি ছোড়ে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। যার মধ্যে শুধুমাত্র কাঠমান্ডুতেই ১৮ জনসহ ১৯ জন নিহত হন। নিহতদের অনেকেই স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী ছিল।
বালেন্দ্র শাহ আগে একজন র্যাপার ছিলেন। সেখান থেকে রাজনীতিতে এসে কাঠমান্ডুর মেয়র হন তিনি। এখন তার দেশটির প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
আন্দোলনের শুরুতেই বিক্ষোভকারীদের প্রতি সমর্থন জানান বালেন্দ্র। তবে যেহেতু বিক্ষোভকারীরা বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার জন্য ২৮ বছরকে বয়স সীমা হিসেবে বেধে দেন। তাই তিনি সরাসরি আন্দোলনে যোগ দিতে পারেননি।
বিক্ষোভকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে এক পোস্টে তিনি লেখেন, “এটি তরুণ প্রজন্মের এক স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন, যাদের কাছে হয়তো আমাকেও বয়স্ক মনে হবে। আমি তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা, লক্ষ্য এবং চিন্তাভাবনা বুঝতে চাই। রাজনৈতিক দল, নেতা, কর্মী, সাংসদ ও প্রচারকদের এই সমাবেশকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করার জন্য বেশি চালাকি করা উচিত নয়।”
তিনি জানান, যদিও স্বশরীরে তিনি আন্দোলনে উপস্থিত হতে পারবেন না। তবে জেন-জির প্রতি তার পূর্ণ সমর্থন থাকবে।
সূত্র: এনডিটিভি, ইন্ডিয়া টুডে