আন্দোলনের জেরে পদত্যাগ করেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। বর্তমানে দেশটির নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছে সেনাবাহিনী। তবে পরিস্থিতি যে পুরোপুরি শান্ত হয়েছে, তা কিন্তু নয়। এমন পরিস্থিতির মাঝেও টিম হোটেলে নিরাপদেই আছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের সদস্যরা।
বাংলাদেশ জাতীয় দলকে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনতে চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখছে না বাফুফে। ইতোমধ্যে সেনাবাহিনী ও বিমান বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগও করেছে ফেডারেশন।
বাফুফের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার জানানা, ‘জাতীয় ফুটবল দলকে নেপাল থেকে ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ বিমান ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে কথা বলছে বাফুফে। আগামীকালের মধ্যে দলকে দেশে ফিরিয়ে আনতে চায় বাফুফে।’
অন্যদিকে বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) এক তথ্য বিবরণীতে ক্রীড়া মন্ত্রণালয় বলেছে, নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। দলের নিরাপত্তা ও নির্বিঘ্ন প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সার্বক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।
দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলতে গত সপ্তাহে নেপালে গেছে বাংলাদেশ ফুটবল দল। প্রথম ম্যাচ মাঠে গড়ালেও আন্দোলনের জেরে ভেস্তে গেছে দ্বিতীয় ম্যাচ। আর সে ম্যাচ বাতিল হওয়ায় মঙ্গলবারই (৯ সেপ্টেম্বর) দেশে ফেরার কথা ছিল জাতীয় দলের। তবে বিমানবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশে ফেরা হয়নি খেলোয়াড়দের। তবে বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দেশে ফিরবেন জামাল-তপুরা।
নিরাপত্তা সংকটের কারণে কাঠমাণ্ডুর টিম হোটেলেই অবস্থান করছে বাংলাদেশ দল। সেখান থেকেই ভিডিও বার্তায় মিডফিল্ডার সোহেল রানা জানিয়েছেন সার্বিক পরিস্থিতি। ‘গতকালকের থেকে আমাদের আজকের অবস্থা খুবই ভালো। গতকাল নেপালে যে একটা পরিস্থিতি ছিল…কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত। যেহেতু সেনাবাহিনী সব কিছুর দায়িত্ব নিয়েছে, তো আমাদের বর্তমান অবস্থা ভালো।’
‘পরিবারের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। যেহেতু এখন নিরাপত্তার বিষয়গুলো সেনাবাহিনীর হাতে, তো এমন পরিস্থিতিতে দেশে পরিবারের সবাই এখন আর চিন্তা করছে না। হোটেলে আমরা খুব ভালো অবস্থায় রয়েছি। সব মিলিয়ে পরিবার এখন চিন্তা মুক্ত রয়েছে।’
ডিফেন্ডার তপু বর্মন জানিয়েছেন, টিম হোটেলের ফিটনেস সেন্টারে এদিন সকালে অনুশীলন করেছেন তারা। প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ না থাকায় ফিটনেস ধরে রাখার দিকে মনোযোগ দিচ্ছেন তারা।
‘আসলে গতকাল (মঙ্গলবার-৯ সেপ্টেম্বর) যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, হঠাৎ করেই আমরা একটা সমস্যার মুখোমুখি হই। আজকে যে অবস্থা আমরা সবাই বুঝতে পারছি এবং দেখছি, নেপাল খুবই শান্ত আছে। যে দুশ্চিন্তা আমাদের ছিল, আমাদের পরিবারের ছিল, প্রতিটি খেলোয়াড় সবার পরিবারের সাথে কথা বলেছে, তাদেরকে বুঝিয়েছে আসলে কী সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি এবং এখন কেমন আছি। নিশ্চিতভাবেই আমার মনে হয়, আমরা এখন যেভাবে আছি, নিরাপদ আছি।’
‘আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে, আমরা কিন্তু আজকে জিম সেশন করেছি। পেশাদার খেলোয়াড় ও জাতীয় দলের খেলোয়াড় হিসেবে দুই-তিন দিন তো ট্রেনিং বন্ধ রাখা যায় না। এই পরিপ্রেক্ষিতে কোচ আমাদের অনুশীলনের শিডিউল দিয়ে দিয়েছেন। আজকে সকালে জিম সেশন করেছি। আমরা ৩৬ জন এখানে আটকে আছি। আশা করি, আমরা দ্রুত দেশে ফিরে যাব।’
খেলোয়াড়দের দেশে ফেরার দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়নি এখনও। তবে সোহেল জানালেন, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি তাবিথ আউয়াল উদ্যোগী হওয়ায় দ্রুত ফেরার সম্ভাবনা দেখছেন তারা।
‘আমরা ইতোমধ্যে জানতে পেরেছি, আমাদের সভাপতি তাবিথ আউয়াল ভাই এবং উপদেষ্টা (আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া) সবার সঙ্গে কথা বলছে যে, কিভাবে আমাদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে নেওয়া যায়। এ নিয়ে তারা কাজ করছে। সবসময় আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে এবং খোঁজখবর নিচ্ছে।’