নেপাল ও বাংলাদেশে তরুণ প্রজন্মের আন্দোলনে সরকার পতনের প্রসঙ্গ টেনে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারকে সতর্ক করে দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার দুপুরের দিকে আদালতে এক শুনানির সময় প্রতিবেশী দুই দেশের প্রসঙ্গে কথা বলেছেন ভারতের প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই।
দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদালতের ১২ এপ্রিলের আদেশের ওপর রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সের বিষয়ে শুনানি চলাকালীন বাংলাদেশ ও নেপালে সরকার পতনের বিষয়ে কথা বলেছেন প্রধান বিচারপতি। সেই আদেশে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও রাজ্যপালদের কাছে রাজ্য সরকারের বিল অনুমোদনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল।
ভারতের সংবিধানের প্রসঙ্গ তুলে প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই বলেন, সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট যেকোনও গুরুত্বপূর্ণ আইনি বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের মতামত চাইতে পারেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা আমাদের সংবিধান নিয়ে গর্বিত।’’
নেপালে মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগে শুরু হওয়া দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে ২১ জনের প্রাণহানির উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘দেখুন আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোতে কী ঘটছে। নেপালে কী ঘটছে, আমরা দেখেছি।’’
এ সময় গত বছর বাংলাদেশে ছাত্র-জনতা নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আরেক বিচারপতি বিক্রম নাথ বলেন, ‘‘হ্যাঁ, বাংলাদেশেও।’’
গত বছরের আগস্টে সরকারি চাকরিতে কোটার বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা তুমুল আন্দোলনের মুখে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সময় দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সরকারি ভবনে ভাঙচুর এবং শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবনেও হামলা চালান আন্দোলনকারীরা। তীব্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে।
গত সোমবার নেপালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন শুরু করে দেশটির তরুণ প্রজন্ম। মাত্র দুদিনের আন্দোলনে দেশজুড়ে ব্যাপক সহিংসতার মাঝে দেশটির প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। নেপালের সাম্প্রতিক ঘটনাবলি এবং গত বছরের বাংলাদেশের পরিস্থিতির মধ্যে মিল খুঁজে পাওয়া কঠিন নয়। উভয় দেশেই ক্ষমতাসীন সরকারের পতন ঘটেছে।
ভারতের সলিসিটর-জেনারেল তুষার মেহতা এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বিল সংরক্ষণের বিষয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের রাজ্যপালদের পক্ষে যুক্তি দেওয়ার পর আজ সুপ্রিম কোর্ট ওই মন্তব্য করেছেন।
সূত্র: এনডিটিভি।
এমআর