ওয়াসার ঠিকাদাররা অনুমতি ছাড়া রাস্তা কেটে জনভোগাান্তি সৃষ্টি করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) চসিক কার্যালয়ে বিভাগীয় সমন্বয় সভায় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মেয়র ওয়াসার কারণে সৃষ্ট নগরীর দুর্ভোগ প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ওয়াসা সমন্বয়হীনভাবে রাস্তা কাটছে। এতে কোটি কোটি টাকার উন্নয়নকাজ নষ্ট হচ্ছে এবং জনগণের কষ্ট বাড়ছে। কোনো সড়ক টেন্ডারের আওতায় আছে বা নতুন করে নির্মাণ হবে, তার তালিকা আমরা দেব। সেই সড়কগুলোতে কোনোভাবেই কাটাকাটি করা যাবে না। অনুমতি ছাড়া রাস্তা কাটলে চসিক তা সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করে দেবে। সড়কে খনন করলে ওয়াসাকে প্রতিটি সড়ক হস্তান্তরের আগে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দিতে হবে- কোথায় কত ক্ষতি হয়েছে এবং সংস্কারে আসল খরচ কত লাগবে। অন্যথায় একতরফাভাবে দায়ভার নেবে না চসিক।
মেয়র বলেন, ওয়াসার স্যুয়ারেজ প্রকল্পের কাজের কারণে নগরীতে যে জনদুর্ভোগ তৈরি হয়েছে, তা আমরাও লক্ষ্য করছি। ওয়াসার পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, তারা ৯৩ কিলোমিটার সড়ক কেটেছে এবং এর মধ্যে ৪৮ কিলোমিটার সড়ক খননেনর পর সিটি কর্পোরেশনকে হস্তান্তর করেছে। এজন্য সংস্কারের ব্যয় বাবদ চসিককে ৮২ কোটি টাকাও দেওয়া হয়েছে। সিটি কর্পোরেশন সংস্কার করছে না। কিন্তু তারা যে পরিমাণ টাকা দিয়েছে তার ২ থেকে ৩ গুণ খরচ করে সিটি কর্পোরেশন থেকে সড়ক সংস্কারে কাজ করতে হয়। অনেক জায়গায় আমরা নতুন রাস্তা শেষ করার পরই ওয়াসা আবার সেখানে খনন কাজ শুরু করেছে। এতে জনগণের কষ্ট বাড়ছে, আর কোটি কোটি টাকার উন্নয়নকাজ নষ্ট হচ্ছে।
প্রকৌশল বিভাগকে নির্দেশনা দিয়ে মেয়র বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোর ভাঙা রাস্তা ও গর্তগুলো দ্রুত প্যাচওয়ার্কের মাধ্যমে সংস্কার করতে হবে। চলমান উন্নয়নকাজও দ্রুত সম্পন্ন করার তাগিদ দেন তিনি। সেইসাথে প্রতিটি রাস্তার সঙ্গে কার্যকর ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন, যাতে জলবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
মেয়র বলেন, বাইরে থেকে দৃশ্যমান প্রতিটি সাইনবোর্ডের জন্য নির্ধারিত কর পরিশোধ করতে হবে। একইভাবে বড় বড় ডিফল্টাররা বছরের পর বছর হোল্ডিং ট্যাক্স দেয় না। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। তবে সাধারণ মানুষ যাতে আতঙ্কিত না হয়, সেদিকে নজর রাখার নির্দেশ দেন মেয়র। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, জন্মসনদ বা অন্যান্য সেবার সঙ্গে হোল্ডিং ট্যাক্সকে জড়িয়ে দেওয়া যাবে না। রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনে রাজস্ব সপ্তাহ চালু করা হবে। এতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ব্যবসায়ীরা কর পরিশোধ করবেন। তবে যারা ইচ্ছাকৃতভাবে ফাঁকি দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে হবে।
তিনি জানান, শিগগিরই চট্টগ্রাম বাসীর জন্য আমার চট্টগ্রাম নামে একটি অ্যাপস চালু করা হবে। এই অ্যাপস মাধ্যমে নাগরিকরা যেকোন সময় কোথায় ময়লা পড়ে আছে ছবি তুলে ময়লার অবস্থান জানাতে পারবেন। এতে করে আমাদেরও পরিস্কার কার্যক্রম সচল রাখতে সুবিধা হবে। একইসাথে কোথায় সড়ক গর্ত আছে, কোথায় কি সমস্যা রয়েছে তা ছবি তুলে সাথে সাথে আমাদের মাঝে পাঠাতে পারবেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, চসিকের সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা সরোয়ার কামাল, প্রধান প্রকৌশলী আনিসুর রহমান, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা ও প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমাম হোসেন রানা।