রাশিয়া থেকে তেল কেনায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ন্যাটো দেশগুলোকে বেইজিংয়ের ওপর ৫০ থেকে ১০০ শতাংশ শুল্কারোপের যে আহ্বান জানিয়েছেন তার বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চীন। বলেছে, বেইজিং যুদ্ধ নয়, বরং উত্তপ্ত সমস্যা সমাধানের জন্য শান্তি আলোচনায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
২০২২ সাল থেকে রাশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে আসার পর থেকে সেই যুদ্ধ থামানোর চেষ্টা করছেন। তবে ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও কোনো সমাধানসূত্র মেলেনি। ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে এখন বিকল্প উপায় বিবেচনা করছেন ট্রাম্প।
তারই অংশ হিসেবে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং চীনের ওপর ৫০ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সেই সঙ্গে ন্যাটো দেশগুলোকে রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেছেন, ন্যাটো দেশগুলো যদি রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয় তাহলে যুক্তরাষ্ট্রও দেবে।
গত শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প জানান, চীনের পণ্যে ৫০ থেকে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের আর্জি জানিয়ে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য দেশগুলোকে চিঠি লিখেছেন তিনি।
তিনি বলেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা ও মস্কোর তেল কেনার জন্য চীনের ওপর ৫০ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হলে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘আমি রাশিয়ার বিরুদ্ধে বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে প্রস্তুত আছি। যদি ন্যাটো দেশগুলো রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয় তাহলে আমিও নিষেধাজ্ঞা দেব।’ ট্রাম্পের এই হুমকির কয়েক ঘণ্টার পরই জবাব দেয় বেইজিং।
শনিবার স্লোভেনিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র ও ইউরোপীয় বিষয়ক মন্ত্রী তানজা ফাজনের সাথে সাক্ষাতের পর লুবজানায় এক সংবাদ সম্মেলনে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, ‘চীন কখনও যুদ্ধের পরিকল্পনা করে না, যুদ্ধে যোগদানও করে না। যুদ্ধ কখনও কোনো সমস্যার সমাধান করতে পারে না, বরং বিধিনিষেধ ওই সমস্যাগুলোকে আরও জটিল করে তোলে।
চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘চীন যা করে তা হলো শান্তি আলোচনাকে উৎসাহিত করা এবং সংলাপের মাধ্যমে মূল সমস্যাগুলোর রাজনৈতিক নিষ্পত্তিকে অনুপ্রাণিত করা।’
এ সময় তিনি বহুপাক্ষিকতাবাদকে উৎসাহিত করার, বহুপাক্ষিক প্রক্রিয়া শক্তিশালী করার এবং জাতিসংঘ সনদের উদ্দেশ্য ও নীতিগুলোকে যৌথভাবে রক্ষা করার আহ্বানও জানান। ওয়াং ই বলেন, ‘চীন ও ইউরোপের একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী নয় বরং বন্ধু হওয়া উচিত এবং একে অপরের মুখোমুখি হওয়ার পরিবর্তে সহযোগিতা করা উচিত।’
এমআর/এসএন