সম্প্রতি গাজা সিটিতে হামলা জোরদার করেছে ইসরাইল। গত চার দিনে গাজা সিটিতে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থার ( ইউএসআরডব্লিউএ) ১০টি ভবন ইসরাইলি হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে। যার মধ্যে সাতটি স্কুল এবং দুটি ক্লিনিক রয়েছে। রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সংস্থাটির প্রধান ফিলিপ লাজ্জারিনি এসব তথ্য জানিয়েছেন।
আনাদোলু প্রতিবেদনে বলছে, এসব ভবনে হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন।
এক্সে ফিলিপ লাজ্জারিনি জানান, গাজার কোনো জায়গাই নিরাপদ নয়। কেউই নিরাপদ নয়। গাজা সিটি এবং উত্তরে ইসরাইলের বিমান হামলা তীব্রতর হচ্ছে। আরও বেশি সংখ্যক মানুষ দিশেহারা এবং অনিশ্চিত হয়ে অজানার দিকে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে।
লাজ্জারিনি উল্লেখ করেছেন, আল-শাতি শরণার্থী শিবিরে স্বাস্থ্যসেবা স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছিল ইউএসআরডব্লিউএ।
তিনি বলেন, ‘আমরা ওয়াদি গাজার উত্তরে একমাত্র স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্র যেখানে সবার জন্য পৌঁছানো সহজ ছিল, সেই বিচ (আল-শাতি) ক্যাম্পে স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি। আমাদের গুরুত্বপূর্ণ পানি এবং স্যানিটেশন পরিষেবাগুলো এখন মাত্র অর্ধেক ধারণক্ষমতায় রয়েছে।’
বলেন, ‘আমাদের দল যেখানে মোট ১১,০০০ জন কাজ করছেন, উত্তর গাজার অন্যান্য অংশ এবং গাজা উপত্যকার বাকি অংশে গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছেন।’
গাজা সিটি দখলের জন্য চলমান অভিযানের অংশ হিসেবে ইসরাইলি সেনাবাহিনী সেখানকার বহুতল ভবনগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। বাসিন্দাদের দক্ষিণে খান ইউনিসের আল-মাওয়াসিতে একটি নিরাপদ মানবিক অঞ্চলে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে, যেখানে ১০০ বারেরও বেশি ইসরাইলি গুলিবর্ষণ হয়েছে এবং শত শত বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ১১ আগস্ট থেকে ইসরাইলি সেনাবাহিনী গাজা সিটিতে ১,৬০০টি টাওয়ার এবং আবাসিক ভবন ধ্বংস করেছে। ধ্বংস হয়েছে ১৩,০০০টি তাঁবু। যার ফলে ১,০০,০০০ এরও বেশি ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
গাজা সিটির অধিকাংশ বাসিন্দা এখন পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকাগুলোতে ভিড় জমাচ্ছেন, যেখানে শুক্রবার থেকে ইসরাইলি বোমাবর্ষণ তীব্র আকার ধারণ করেছে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলের চলমান যুদ্ধে প্রায় ৬৫,০০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি উপত্যকাটি প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে।
ইএ/টিকে