ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নবনির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) আবু সাদিক কায়েম বলেছেন, বাংলাদেশকে পথ দেখায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), আর ঢাবিকে পথ দেখায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (ডুজা)।
তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান থেকে শুরু করে ডাকসু নির্বাচন পর্যন্ত প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে ডুজা সাহসী ভূমিকা রেখেছে। আগামী দিনে ডাকসুকে শিক্ষার্থীদের সত্যিকারের প্রতিনিধি প্রতিষ্ঠানে রূপ দিতে সাংবাদিক সমিতির সহযোগিতা অপরিহার্য।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ডাকসু ক্যাফেটেরিয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সঙ্গে নবনির্বাচিত নেতাদের শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ভিপি সাদিক কায়েম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে দলীয় সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। এসব সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে ডাকসু নির্বাচনকে নিয়মিত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডারে যেমন সেমিস্টারের জন্য সময় বরাদ্দ থাকে, তেমনি ডাকসু নির্বাচনের জন্যও বাধ্যতামূলক সময় নির্ধারণ করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা চাই প্রতিবছর নির্বাচনের আয়োজন হোক এবং শিক্ষার্থীদের মতামত ও অংশগ্রহণের মাধ্যমে ডাকসু সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হোক।
তিনি আরও বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সাংবাদিক সমিতি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। হাসিনার আমলে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস না পেলেও ডুজার সদস্যরা তাদের লেখনীর মাধ্যমে প্রতিবাদ করেছেন। নির্বাচনকালেও সাংবাদিকরা দিনরাত পরিশ্রম করে ভোটারদের আস্থা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সুরক্ষা দিয়েছেন।
এ সময় শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে ‘ডিজিটাল কমপ্লেইন বক্স’ চালুর ঘোষণা দেন ডাকসুর সহ-সভাপতি ফরহাদ।
এ ছাড়া ক্যান্টিনের খাবারের মানোন্নয়ন এবং স্টাফ ও ম্যানেজারদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি। ডাকসুর সব আর্থিক কার্যক্রম অডিটের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতিও দেন নতুন নেতৃত্ব।
জিএস এস এম ফরহাদ বলেন, আমরা কাউকে শিবির, মুসলিম, হিন্দু বা অন্য কোনো পরিচয়ে ভাগ করতে চাই না। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করব। কে আমাদের পক্ষে বা বিপক্ষে ছিল তা নয়, বরং শিক্ষার্থীদের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করাই হবে ডাকসুর লক্ষ্য।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রযাত্রায় সাংবাদিক সমিতি সবসময় অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। আমরা চাই প্রতিটি জায়গায় ফেয়ারনেস নিশ্চিত হোক। ক্যাফেটেরিয়া, রেজিস্ট্রার বিল্ডিং, গবেষণা লাইব্রেরি– যেখানেই সিন্ডিকেট আছে, সেখানেই পরিবর্তনের জন্য ডাকসু চাপ সৃষ্টি করবে।
মতবিনিময়কালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (ডুজা) সভাপতি মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহি বলেন, ডাকসুর প্রতিনিধিরা বর্তমানে সিনেটের সদস্য হলেও সিন্ডিকেটের সদস্য নন।
অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় সিদ্ধান্ত সিন্ডিকেট থেকেই আসে। তাই ডাকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সিন্ডিকেটে অন্তর্ভুক্ত করা গেলে শিক্ষার্থীদের স্বার্থ আরও জোরালোভাবে প্রতিফলিত হবে।
কেএন/টিকে