মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বড় ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়রের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধদল তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের সঙ্গে ‘গোপনে’ বৈঠক করেছেন। গত সপ্তাহে ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত এই বৈঠক পূর্বনিধারিত ছিল না।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আইকে এ তথ্য জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
বুধবার প্রথমবার এ সফরের খবর প্রকাশ্যে আনেন তুরস্কের প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) চেয়ারম্যান ওজগুর ওজেল। তিনি অভিযোগ করেন, গাজা ইস্যুতে এরদোগান ট্রাম্পের ছেলের সঙ্গে ‘গোপন আলোচনা’ করেছেন।
ওজেল এক সমাবেশে বলেন, ‘প্রটোকলে তাকে শুধু ব্যবসায়ী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, কিন্তু সফরের সময় তার নাম উচ্চারণ করা হয়নি।
তিনি আরও যোগ করেন, ‘ফিলিস্তিন রক্তাক্ত হচ্ছে, অথচ লবিং কোম্পানির মাধ্যমে তারা ট্রাম্পের ছেলের সঙ্গে ব্যবসা করছে।’
তার অভিযোগ, ‘ফিলিস্তিনি ইস্যুতে এরদোগান ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে সমালোচনা করার ভান করেন, কিন্তু আসল পৃষ্ঠপোষক ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একটি শব্দও বলেন না।’
তবে এরদোগানের ঘনিষ্ঠ এক তুর্কি সূত্র জার্মান সংবাদমাধ্যম ডিডাব্লিউ-কে জানান, ট্রাম্প জুনিয়র সত্যিই প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, কিন্তু সেটি ছিল কেবল ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’। ওই সূত্রের দাবি, গাজা কিংবা অন্য কোনো বিষয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি, ওজেলের অভিযোগের সঙ্গে বাস্তবতার মিল নেই।
ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়রের কোনো সরকারি দায়িত্ব না থাকলেও তাকে হোয়াইট হাউসে প্রভাবশালী হিসেবে দেখা হয়। বর্তমানে তিনি ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের নির্বাহী সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। জানা গেছে, তার সঙ্গে কয়েকজন ব্যবসায়ীও তুরস্ক সফরে ছিলেন।
তুরস্কের সঙ্গে তার সম্পর্ক নতুন নয়। ২০১৬ সালে তিনি ইস্তাম্বুলে একটি শিকার অভিযানে যোগ দেন এবং বৈঠক করেন। তুরস্কে ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের বিনিয়োগ রয়েছে, যেখানে স্থানীয় কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে ট্রাম্প টাওয়ার্স প্রকল্প পরিচালিত হচ্ছে।
এদিকে এরদোগানের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্প সিনিয়রের সম্পর্কও ভালো বলে জানা যায়। তুর্কি কর্মকর্তারা মিডল ইস্ট আই-কে জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বৈঠকের ফাঁকে ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করতে চান এরদোগান। আঙ্কারা আশা করছে, এ বৈঠকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান চুক্তি, সিরিয়ার কুর্দিদের দামেস্ক সরকারের সঙ্গে একীভূতকরণ, সম্ভাব্য এফ-৩৫ কেনার পথ এবং সিরিয়া ও গাজা ইস্যুতে ইসরাইল-তুরস্ক উত্তেজনা নিয়ে আলোচনা হবে।
নথিপত্র ঘেঁটে আরও দেখা গেছে, ট্রাম্প জুনিয়র নিয়মিত মধ্যপ্রাচ্যে ভ্রমণ করেন। এর আগে তিনি তার বাবার সঙ্গে সরকারি সফরে রিয়াদ ও দোহাও সফর করেছেন।
এমআর/টিকে