বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ সংক্রান্ত চুক্তিগুলোর মূল তথ্য উন্মুক্ত করতে আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক প্রকাশিত ‘অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা প্রতিবেদন ২০২৫’-এ মোট ৮টি পরামর্শ দেয়। এরই ৭ ও ৮ নম্বর পরামর্শে তথ্য উন্মুক্ত করার এই আহ্বান জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আইন বা বিধির মাধ্যমে প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলনের জন্য চুক্তি ও লাইসেন্স দেওয়ার মানদণ্ড ও প্রক্রিয়া নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ সরকার। কার্যক্ষেত্রে সেসব বিধিমালা অনুসরণ করা হচ্ছে বলেও মনে করে ওয়াশিংটন। তবে সরকারি ক্রয়চুক্তি সম্পর্কিত সীমিত তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় এতে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সরকার পরিবর্তনের কারণে দেশের সর্বোচ্চ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারের হিসাব নিরীক্ষা করেনি। তবে সংক্ষেপে কিছু ফলাফল প্রকাশ করেছে, যেগুলো জনগণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
অপরদিকে, বাংলাদেশের আর্থিক স্বচ্ছতা আরও বাড়াতে যেসব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- অর্থবছর শেষে যুক্তিসংগত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন প্রকাশ করা, বাজেট নথি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নীতিমালা অনুযায়ী প্রস্তুত করা, বাজেটে নির্বাহী দফতরগুলোর ব্যয় খাত আলাদাভাবে উপস্থাপন করা, সরকারের আয়-ব্যয়ের পূর্ণাঙ্গ চিত্র বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করা, সর্বোচ্চ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী স্বাধীনতা প্রদান এবং যথেষ্ট সম্পদ ও সময়োপযোগী পূর্ণাঙ্গ বাজেট নথিতে প্রবেশাধিকারের নিশ্চয়তা দেওয়া, নিরীক্ষা প্রতিবেদনে সুপারিশ, বিশ্লেষণ ও পূর্ণাঙ্গ বর্ণনা প্রকাশ করা, প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলনের জন্য চুক্তি ও লাইসেন্স প্রদানের তথ্য প্রকাশ করা এবং সরকারি ক্রয়চুক্তির তথ্য জনসমক্ষে আনা।
এই ৮ টি পরামর্শ ছাড়াও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার প্রাকৃতিক সম্পদ সংক্রান্ত তথ্য উন্মুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু এখনও আগের সরকারগুলোর মতোই সরকারি কর্মকর্তাদের পেছনে রাষ্ট্রের ব্যয়ের হিসাব উন্মুক্ত করছে না। বাজেট এবং নিরীক্ষার তথ্যও পাবলিক ডোমেইনে উন্মুক্ত না।
উল্লেখ্য, প্রতিবেদনটি প্রতি বছর প্রকাশ করে থাকে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট। এতে আগের অর্থবছরের তথ্য বিশ্লেষণ করে জানানো হয় কোন কোন দেশ ন্যূনতম অর্থনৈতিক স্বচ্ছতার মানদণ্ড পূরণ করেছে, আর কে করেনি।
এর উদ্দেশ্য হল- কোনো দেশের বাজেট প্রক্রিয়া, সরকারি খরচ, কর সংগ্রহ ও প্রাকৃতিক সম্পদ থেকে অর্জিত আয়ের স্বচ্ছতা মূল্যায়ন করা। এর মাধ্যমে বোঝা যায়, কোনো দেশের সরকার জনগণের টাকার হিসাব কতটা উন্মুক্তভাবে প্রকাশ করছে। সেইসাথে, এর কোনো অপব্যবহার হয়েছে কি না অথবা রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যবহারে কোনো দুর্নীতি হয়েছে কি না তা-ও জানা যায়। প্রতিবেদনটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত নিতেও প্রভাব ফেলে।
ইএ/টিকে