‘বিএনপি যদি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান না নেয় আজকের প্রেক্ষাপটে তাহলে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কিন্তু শেখ হাসিনা দাঁড়াতে হবে না, আওয়ামী লীগও দাঁড়াইতে হবে না। একটা রাজনৈতিক শক্তি কিন্তু দাঁড়াবে। এ কথা আমি বলবো। আরে আমি তো পলিটিক্যাল সাইন্সের ছেলে। বিএনপি দাঁড়ালে ভালো। আমি তো আছিই বিএনপিতে।’
সম্প্রতি একটি টক শোতে হাজির হয়ে এসব কথা বলেন বিএনপির আলোচিত নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মো. ফজলুর রহমান। তিনি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও জামায়াতের দেশবিরোধী অবস্থান নিয়েও কথা বলেন।
মুক্তিযুদ্ধকে আওয়ামী লীগ কুক্ষিগত করে রেখেছে, শুধুমাত্র আ. লীগ দলটাই মুক্তিযুদ্ধ করেছে- বিষয়টা এমনভাবে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছে। এইসব অভিযোগ প্রসঙ্গে ফজলুর রহমান বলেন, ‘খুব সোজা হিসাব। ৭০ সনে শেখ মুজিবের দল জিতলো। সবাই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে দিলো এবং ৭১ % ভোট পেল আওয়ামী লীগ একা।
৮%, ১০ % ভোট পেল তিনটা মুসলিম লীগ, ৬% পারসেন্ট ভোট পেল জামায়াত গোলাম আজমের নেতৃত্বে। অর্থাৎ ২৯ % ভোট বাইরে, আর একা শেখ মুজিবের দল ভোট পেল ৭১ %। ১৬২ টা সিট পূর্ব পাকিস্তানে পেল। তাহলে একটা দল বলবে না তো কয়টা দল বলবে? ১৬০ টা সিট যে একটা দল পায়, তারা তো এইটাই বলবে। তারপরেও তো শেখ মুজিব মওলানা ভাসানীরে গিয়ে পায়ে ধরে সালাম করে বলেছে, হুজুর আমার সাথে থাকেন। আর এই হুজুরই তো প্রথম বলছে- এই মুজিব তুমি স্বাধীনতা ঘোষণা করো। তোমার সাথে আমি থাকবো।’
জামায়াত মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে উল্লেখ করে ফজলুর রহমান বলেন, ‘জামায়াত বলছে কি বলছে? মুক্তিযুদ্ধ যারা করে এরা হলো ভারতের দালাল। নাম দিয়েছে দুষ্কৃতিকারী। টিক্কা খান যখন তিনদিনে ৫ লক্ষ লোক মেরে ফেলল ২৫ মার্চ এর রাত থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত, শুধু ৯০ হাজার লোক মেরেছে সেই বুড়িগঙ্গা নদীর থেকে ধরে কেরানীগঞ্জ নয়াবগঞ্জ পর্যন্ত। তখন টিক্কা খানের সঙ্গে প্রথম যে দেখা করে পায়ে ধরে সালাম করলো তার নাম গোলাম আজম। আপনি ছবি দেখেন ইতিহাসে। গোলাম আজম গিয়ে টিক্কা খানকে বললো- হুজুর আপনার সাথে আমি আছি।’
বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমার দলের রাজনৈতিক যদি শিষ্টাচার বলে কোনো কথা থাকে, তাহলে আমাকে নেওয়া উচিত। আমি শিষ্টাচারও চাই না। আমি বলছি ঠিক আছে আমি তো মানুষ, আমার তো ভুল হতে পারে। কিসের জন্য করছে আমি কিন্তু জানিনা। আমি জানিনা, আমারে দল থেকে বলে নাই আপনি এই ভুলটা করছেন। আপনি তো দোষী মানুষ। আমি নাকি কুরুচিপূর্ণ বক্তৃতা দিয়েছেন। আমি কুরুচিপূর্ণ বক্তৃতা দিলে আপনার চ্যানেলে আমাকে ডাকতেন না।’