লেবাননে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় বেন্ত জবেইল শহরে চালানো এই ড্রোন হামলায় একই পরিবারের তিন শিশুসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত দুজন।
নিহতদের মধ্যে ওই তিন শিশু ও তাদের বাবা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ছিলেন। হামলায় নিহত ওই শিশুদের মা আহত হয়েছেন। মূলত গত বছরের নভেম্বর থেকে মার্কিন-মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকার পরও প্রতিবেশী লেবাননে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এনএনএ জানিয়েছে, রোববারের ওই হামলায় একটি মোটরসাইকেল ও একটি গাড়িকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়। এতে আরও দুজন আহত হন। লেবাননের পার্লামেন্ট স্পিকার নাবিহ বেরি জানিয়েছেন, নিহত তিন শিশু- সেলিন, হাদি ও আসিল- এবং তাদের বাবা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ছিলেন। শিশুদের মা আহত হয়েছেন।
ইসরায়েল দাবি করেছে, ওই হামলায় হিজবুল্লাহর একজন সদস্য নিহত হয়েছে, তবে বেসামরিক লোকজনও প্রাণ হারিয়েছে বলে স্বীকার করেছে তারা।
ইসরায়েল প্রায়ই দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে আসছে। তেলআবিবের দাবি, ইরান-সমর্থিত এ সংগঠন যাতে আবার সামরিক শক্তি গড়ে তুলতে না পারে, সেজন্যই এসব হামলা চালাচ্ছে তারা। গত যুদ্ধেই হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতৃত্বের বেশিরভাগ নিহত হয়, যার মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রধান হাসান নাসরাল্লাহও ছিলেন।
এদিকে সর্বশেষ এই হামলা ও হত্যাকাণ্ডের পর স্পিকার নাবিহ বেরি প্রশ্ন তোলেন- “লেবাননের শিশুরাই কি ইসরায়েলের জন্য অস্তিত্ব সংকট তৈরি করছে? নাকি বিনা জবাবদিহিতায় বেসামরিক মানুষ হত্যা করাই আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য আসল হুমকি?”
লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালাম এ হামলাকে “নতুন হত্যাযজ্ঞ” আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “এটি নৃশংস অপরাধ, দক্ষিণে নিজ গ্রামে ফিরে আসা মানুষদের ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে এই হামলা চালানো হয়েছে।”
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর নিন্দা জানানোর আহ্বানও জানান তিনি।
লেবাননের শ্রমমন্ত্রী মোহাম্মদ হায়দার অভিযোগ করেন, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে দক্ষিণাঞ্চলে ফিরে আসা সাধারণ মানুষকে নিশানা করছে। তিনি বলেন, “এই পরিকল্পনা সফল হবে না, কারণ দক্ষিণের মানুষের ইচ্ছাশক্তি অপরাধীর শক্তির চেয়ে বেশি শক্তিশালী।”
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবসহ লেবাননের ভেতরে হিজবুল্লাহবিরোধী গোষ্ঠীগুলো সংগঠনটিকে নিরস্ত্র করার জন্য চাপ দিয়ে আসছে। চলতি মাসের শুরুতে লেবানন সেনাবাহিনী সরকারকে হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার একটি পরিকল্পনা উপস্থাপন করে।
তবে হিজবুল্লাহ স্পষ্ট জানিয়েছে, ইসরায়েল হামলা চালানো ও দক্ষিণ লেবাননের অংশ দখল করে রাখা অব্যাহত রাখায় তারা অস্ত্র পরিত্যাগ করবে না।
ইএ/এসএন