রাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। পোষ্য কোটা নিয়ে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তির রেশ ধরে এই লাগাতার কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। তারা এই কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি পালন করছেন দ্বিতীয় দিনের মতো। এতে ক্যাম্পাস ফাঁকা হয়ে গেছে।

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় এই শাটডাউন কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এর অংশ হিসেবে প্রশাসন ভবনের পশ্চিম পাশে চেয়ার পেতে বসে আছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। প্রশাসন ভবনে বেশিরভাগ দপ্তরে তালা ঝুললেও কিছু কিছু অফিস খোলা রয়েছে।

আজ সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয়-২৪ হলে গিয়ে দেখা যায়, আজ অনেকেই অফিসে এসেছে। তাদের দৈনন্দিন কাজ করছেন তারা। এছাড়া পরিবহন মার্কেট, টুকিটাকি চত্বরসহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখা যায় কিছু কিছু শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আসছেন।

বুদ্ধিজীবী চত্বরের সামনে চেয়ার পেতে বসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন ফিসারিজ বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, আমাদের যেটা কমপ্লিট শাটডাউন চলছে, গত ২০ তারিখে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, প্রক্টরসহ অনেককে শারিরীক ও মানসিক ভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে তারই প্রতিবাদে। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া সম্ভব না। শুধু আমরা না গোটা বাংলাদেশের শিক্ষকেরা আজ স্তম্ভিত। যতক্ষণ পর্যন্ত এটার সুষ্ঠু বিচার না হবে ততক্ষণে আমরা কর্মসূচি চালিয়ে যাব।

এসময় একাডেমিক শাখা উপ-রেজিস্টার আবু মো. তারেক বলেন, আমাদের দাবি সুস্পষ্ট, আমাদের উপ-উপাচার্য লাঞ্ছিত হয়েছেন। সেটার সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। আমরা কোনোভাবেই কাজে ফিরে যাব না।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত রাকসু নির্বাচন নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল ক্যাম্পাসে। প্রার্থীরা নানা কৌশলে প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন। এর মধ্যে সে দিন সন্ধ্যায় বাতিল হয়ে যাওয়া পোষ্য কোটা ১০ শর্তে ফিরিয়ে আনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পর থেকে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের এক পর্যায়ে গত শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। পরে গতকাল রোববার শিক্ষক-কর্মকর্তারা লাঞ্ছিতকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও পোষ্য কোটা পুনর্বহালের দাবিতে এক দিনের পূর্ণদিবস কর্মবিরতি ঘোষণা করে। গতকাল থেকে তারা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করেন।

গত ২১ সেপ্টেম্বর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনে সভা শেষে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দেন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল আলীম। অফিসার সমিতি সংবাদ সম্মেলন করে অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘কমপ্লিট শাটডাউনের’ ঘোষণা দেন। গতকাল রাতে আবারও জাতীয়তাবাদী শিক্ষকেরা প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে বলে জানান।

এমন পরিস্থিতিতে গতকাল বিকেল ৫টায় রাকসু নির্বাচন কমিশনার জরুরি সভা করে নির্বাচনের তারিখ পেছান। আগামী মাসের ১৬ অক্টোবর ভোট ভোটগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়।

এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
শাপলা প্রতীক না দিলে নির্বাচন কীভাবে হয় দেখে নেব: সারজিস Sep 23, 2025
img
আ.লীগের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা করছি : ভিপি সাদিক কায়েম Sep 23, 2025
img
আমরা খালেদা জিয়াকে আবার নির্বাচিত করে নিয়ে আসবো : এ্যানি Sep 23, 2025
img
রাজধানীতে ঝটিকা মিছিলে আ.লীগের আরও ১৩ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার Sep 23, 2025
img
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টার সঙ্গে ইতালির রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ Sep 23, 2025
img
কার কাছে ৩০ আসন চাওয়া হয়েছে জানতে চায় জামায়াত Sep 23, 2025
img
আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে আনার কোনো সুযোগ নেই: নাহিদ ইসলাম Sep 23, 2025
img
ভারতকেও হারাতে পারবে বাংলাদেশ, আশাবাদী কোচ Sep 23, 2025
img

অর্থ উপদেষ্টা

যে ডলার আছে তা বাংলাদেশের আপৎকালীন সময়ের জন্য পর্যাপ্ত নয় Sep 23, 2025
img
মহাখালীতে পেট্রোল পাম্পে অগ্নিকাণ্ড, দগ্ধ ৭ জন জাতীয় বার্নে Sep 23, 2025
img
‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ এ শিমুল নেই, কি বলছেন লামিয়া? Sep 23, 2025
মুস্তাফিজকে ছাড়া বাংলাদেশ দল কল্পনাও করা যায় না Sep 23, 2025
img
বিশ্বকাপ খেলতে দেশ ছাড়ল বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দল Sep 23, 2025
img
বাংলাদেশে শিল্পীদের কদর কোনোদিন ছিল না : সাবিনা ইয়াসমিন Sep 23, 2025
img
সেই পুরোনো লুকে মুগ্ধতা ছড়ালেন শাবনূর Sep 23, 2025
img
তাহসানকে কখনো আমার গায়ক বলে মনে হয়নি: অনন্যা Sep 23, 2025
img
শাপলা প্রতীক পাচ্ছে না এনসিপি Sep 23, 2025
img
রবিবার থেকে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপে বসতে যাচ্ছে ইসি Sep 23, 2025
img
পূজায় ঋতুপর্ণাকে নিয়ে নিউ ইয়র্ক মাতাবেন জায়েদ খান! Sep 23, 2025
img
আখতারের ওপর হামলা নিয়ে মির্জা গালিবের মন্তব্য Sep 23, 2025