জাতীয় পার্টি গৃহপালিত, বিএনপি ছিল সেমি-গৃহপালিত: নাসীরুদ্দীন

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোওয়ারী বলেছেন, শেখ হাসিনার সময়ে সংসদে জাতীয় পার্টি ছিল গৃহপালিত দল, বিএনপি ছিল সেমি-গৃহপালিত। বিএনপির ব্যর্থতার কারণে দুই হাজার ভাইকে শহীদ হতে দেখেছি।

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরের রূপায়ণ টাওয়ারের সামনে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেনের ওপর হামলার প্রতিবাদে শাহবাগ থেকে বাংলামোটর পর্যন্ত মিছিল করেন নাগরিক পার্টির নেতাকর্মীরা।

প্রতিবাদ মিছিল শেষে সমাবেশে নাসীরুদ্দীন বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস আমাদের সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক তাসনিম জারাকে (নিউইয়র্কে) নিয়ে গিয়েছেন; লীগের সামনে গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃবৃন্দকে ছেড়ে দিয়েছেন। এটা ইউনূসের জন্য লজ্জার। এর জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণায়লকে ব্যর্থতার দায় নিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।

তিনি বলেন, সিভিল প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থা থেকে আওয়ামী লীগের সাঙ্গপাঙ্গদের অপসারণ করতে হবে। নইলে সরকার কতদিন টিকবে নিশ্চয়তা দিতে পারি না।

এনসিপির এই নেতা আরও বলেন, যখন জামায়াতে ইসলামীকে অলিতে-গলিতে ‘রাজাকার’, ‘পাকিস্তানি’ ট্যাগ দিয়ে পেটানো হয়েছে, তখন আমরা তাদের জন্য দাঁড়িয়েছিলাম। আজ দেখতে পাচ্ছি, অভ্যুত্থানের নেতৃবৃন্দের ওপর হামলা হচ্ছে, অলিগলিতে আওয়ামী লীগ ঘুরছে; অথচ তারা মুখে কুলুপ এঁটে ঘুরছে।

নির্বাচন কমিশন থেকে শাপলা প্রতীক না পাওয়ায় ষড়যন্ত্র দেখতে পাচ্ছেন নাসীরুদ্দীন পাটোওয়ারী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা নিবন্ধন কর্মসূচির সব কার্যক্রম সম্পন্ন করেছি। নির্বাচন কমিশনকে বলেছি, শাপলা প্রতীক পেতে আমাদের কোনো আইনি বাধা আছে? তারা বলেছে, কোনো বাধা নেই। কিন্তু কেন প্রতীক পাব না, এ বিষয়ে তারা কুলুপ এঁটেছে। আমরা সব জায়গায় ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি।

নির্বাচন কমিশন একটি রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন অ্যাম্বাসির হয়ে কাজ করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।  

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে বলব, আমরা আপনাদের অধিকারের জন্য দাঁড়িয়েছিলাম। কিন্তু যখন নির্বাচন কমিশন একটি দল ও বিভিন্ন অ্যাম্বাসির হয়ে কাজ করছে; আমাদের অধিকার হরণ করছে, আপনারা আমাদের পক্ষে দাঁড়াবেন। যদি পক্ষে না দাঁড়ান, অধিকার কীভাবে আদায় করতে হয়, তা আমরা রাজপথে ভবিষ্যতে আদায় করে নেব।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের প্রসঙ্গ তুলে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, মির্জা ফখরুল যে বক্তব্য দিয়েছেন, জামায়াতসহ অন্যান্য দল যে নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করছে, এটি ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

তিনি বলেন, আর্মির মধ্যে যারা শেখ হাসিনার অধীনে কাজ করে অসংখ্য ভাইকে খুন করেছে, গুম করেছে; সেনাপ্রধান গুম এবং খুনের মামলা থেকে তাদের বের করার জন্য অ্যাম্বাসিসহ প্রত্যেক জায়গায় ধরনা দিচ্ছেন। যারা গুম-খুনে জড়িত ছিল, আইসিটি ট্রাইবুনাল থেকে একটা লোকও নিস্তার পাবে না।

নাসীরুদ্দীন বলেন, সংসদে জাতীয় পার্টি ছিল গৃহপালিত দল, সেমি-গৃহপালিত দল ছিল বিএনপি। তাদের ব্যর্থতার কারণে আমাদের দুই হাজার ভাইকে শহীদ হতে দেখেছি। বিএনপিকে হুশে ফিরতে আহবান জানাচ্ছি। বর্তমানে জাতীয় পার্টি, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, আর্মির কতিপয় কর্মকর্তা বিভিন্ন অ্যাম্বাসির যোগসাজশে ও ভারতীয় দূতাবাস এক হয়ে এক অক্ষে অবস্থান করছে।

সমাবেশে জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম বক্তব্য রাখেন।

ইউটি/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
চট্টগ্রা‌মে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ Sep 24, 2025
img
শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখল পাকিস্তান Sep 24, 2025
img
ফায়ার ফাইটার শামীম আহমেদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ প্রধান উপদেষ্টার Sep 24, 2025
img
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অধীনে কারো নির্বাচনে যাওয়া উচিত না : ফজলুর রহমান Sep 24, 2025
img
৩৩ বছরের ক্যারিয়ারে প্রথমবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার গ্রহণ করলেন শাহরুখ খান Sep 23, 2025
img
এনসিপির মতো জনসমর্থনহীন দলকে যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়া উচিত হয়নি : হাফিজ উদ্দিন Sep 23, 2025
চীনে সুপার টাইফুন রাগাসার হানা, স্কুল-অফিস বন্ধ! Sep 23, 2025
বাদীর করা মামলায় খালাতো ভাইকে স্বামী দেখালেও জামিন পেলেন না হালিমা Sep 23, 2025
বিমানবন্দরে ফখরুল ও তাহেরকে নিয়ে বিএনপি জামায়াত অনুসারীদের উল্লাস Sep 23, 2025
মির্জা ফখরুলের বক্তব্যেরে নিন্দা জানিয়ে যে বিবৃতি দিলো জামায়াত Sep 23, 2025
ব্যথানাশক ওষুধ নিয়ে ট্রাম্পের সতর্কবার্তা, চিকিৎসকদের তীব্র প্রতিক্রিয়া Sep 23, 2025
ব্যাচেলর পয়েন্টে শিমুল অনুপস্থিত, লামিয়ার বক্তব্য! Sep 23, 2025
img
শ্রীপুরে কারখানা ও কলোনিতে আগুন Sep 23, 2025
গুজবে ভরা মৃত্যুর গল্প, এবার সত্যি বললেন শেফালির স্বামী Sep 23, 2025
img
কিংসের হোঁচট, পিছিয়ে পড়েও জিতল মোহামেডান Sep 23, 2025
তাহসান-মিথিলার গল্প পুরনো, এখন আলোচনায় তাদের আলাদা পথচলা Sep 23, 2025
img
জাতিসংঘে দীর্ঘতম ভাষণের রেকর্ড গড়লেন ট্রাম্প Sep 23, 2025
img
বগুড়ায় ৬ পুলিশ প্রত্যাহার Sep 23, 2025
রেকর্ড নয়, মাঠে লড়াইয়ে বিশ্বাস বাংলাদেশ দলের Sep 23, 2025
ভারতের বিপক্ষে হার নয়, ফাইনালের দিকেই তাকিয়ে পাকিস্তান Sep 23, 2025