জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মোহাম্মদ ইউনুস ২২ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে রওনা হন। তার সফরসঙ্গী হিসেবে বিএনপি, জামায়াত ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর ছয়জন শীর্ষ নেতা ছিলেন। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও।
সেখানে আলোচিত সাংবাদিক খালেদ মহিউদ্দিনের মুখোমুখী হয়ে মির্জা ফখরুল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার ইস্যুসহ দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ ও তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, “আওয়ামী লীগের কথা আর কী বলব? দেশের সবচেয়ে পুরনো দল হওয়ার পরেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে তারা নিজেরাই নিজেদের মেরে ফেলেছে। সমস্ত চরিত্র বিলীন করে দিয়ে তারা একটি ফ্যাসিস্ট দলে পরিণত হয়েছে। ফলে জনগণের ভালোবাসা ও আস্থাও তারা হারিয়েছে।”
তবে সরাসরি নিষিদ্ধকরণের পক্ষে না থেকে বিএনপি মহাসচিব বলেন “একটি রাজনৈতিক দলের নেতা হয়ে আরেকটি দলকে ব্যান করার সমর্থন করি না। কিন্তু যদি তারা জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে, প্রতারণা করে, গণহত্যা চালায় তাহলে অবশ্যই বিচার হতে হবে। রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করা নিয়ে বাংলাদেশে অনেক কথা হচ্ছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে আগেও বলেছি, আমাদের চেয়ারম্যান ও অ্যাক্টিং চেয়ারম্যানও বলেছেন, আমরা কোন রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার পক্ষে নই। তবে যদি কোনো দল গণহত্যা ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের সঙ্গে জড়িত থাকে, তাহলে অবশ্যই তাদের শাস্তি পেতে হবে।”
সাক্ষাৎকারে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন প্রসঙ্গও উঠে আসে। এ বিষয়ে জনগণের মাঝে যে আস্থাহীনতা রয়েছে, তা স্বীকার করে মির্জা ফখরুল বলেন, “অবশ্যই নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে। তবে মানুষের মধ্যে যে অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে, সেটি দূর করে বিশ্বাস সৃষ্টির জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। বিভাজনের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছরের রাজনৈতিক বিভাজন বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল, গণমাধ্যম ও সাধারণ মানুষের মধ্যে অবিশ্বাস তৈরি করেছে। এখনই সেই অবিশ্বাস দূর করা জরুরি।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুস ও সফরসঙ্গী রাজনৈতিক নেতারা আগামী ২ অক্টোবর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।