৯ অক্টোবর ঢাকায় এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে হংকংয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচ। এ উপলক্ষ্যে জাতীয় দলের স্প্যানিশ হেড কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা ২৮ সদস্যের প্রাথমিক স্কোয়াড ঘোষণা করেছেন। আগামীকাল (২৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ফুটবলারদের রিপোর্টিং। তবে রিপোর্টিংয়ের জন্য নিজেদের ৫ ফুটবলারকে (গোলরক্ষক সুজন হোসেন, ডিফেন্ডার মেহেদী হাসান, রহমত মিয়া, শাকিল আহাদ তপু ও ফরোয়ার্ড সুমন রেজা) ছাড়ছে না মোহামেডান।
মোহামেডানের ম্যানেজার ইমতিয়াজ আহমেদ নকীব এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমাদের ক্লাবের অনুশীলন চলমান রয়েছে। কোচের চাহিদা অনুযায়ী ফিটনেস ও কম্বিনেশনে সকল ফুটবলারকে প্রয়োজন। এজন্য আমরা জাতীয় দলে এখনই খেলোয়াড় ছাড়তে পারব না। তবে নিয়মানুযায়ী ম্যাচের ৭২ ঘন্টা আগে অবশ্যই খেলোয়াড়রা জাতীয় দলের ক্যাম্পে যাবে।’
২৫ সেপ্টেম্বর ক্লাবগুলোকে খেলোয়াড় ছাড়ার চিঠি দিয়েছে বাফুফে। আজ সন্ধ্যায় মোহামেডানের এমন অবস্থান জানা গেছে। তবে ক্লাবটির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো চিঠি দেয়নি। এ নিয়ে নকীবের অবস্থান, ‘ফেডারেশন থেকে আমাকে ফোন করেছিল আমি জানিয়ে দিয়েছি। আবার যদি জিজ্ঞেস করে বলব।’
সেপ্টেম্বর উইন্ডোতে বসুন্ধরা কিংস দুই সপ্তাহ পর খেলোয়াড় জাতীয় দলের ক্যাম্পে ছেড়েছিল। সেই সময় তারা ফিফার আইন ছাড়াও প্রাক মৌসুম প্রস্তুতির জন্য খেলোয়াড় ছাড়বে না বলে চিঠি দিয়েছিল। এতে বাফুফে জাতীয় দল কমিটি জরুরি সভায় বসেছিল। কিংসকে চিঠি দিলেও তারা অনড় অবস্থানেই ছিল। বসুন্ধরা কিংস খেলোয়াড় না ছাড়ায় তখন অন্য ক্লাবগুলোও অসন্তোষ হয়েছিল।
অক্টোবর উইন্ডোতে বসুন্ধরা কিংস আগামীকালই তাদের সকল খেলোয়াড়কে জাতীয় দলের জন্য ছাড়বে বলে জানা গেছে। তবে এবার মোহামেডান খেলোয়াড় ছাড়বে না। মোহামেডানের মতো তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি ঢাকা আবাহনীর ৫ ফুটবলারও জাতীয় দলে ডাক পেয়েছে। জাতীয় দলে খেলোয়াড় ছাড়া নিয়ে আবাহনীর ম্যানেজার সত্যজিত দাশ রুপু বলেন, ‘আমাদের ক্লাবের অনুশীলন বন্ধ। খেলোয়াড়রা কাল রিপোর্টিং করবে। কোনো ক্লাব যদি ফুটবলার না ছাড়ে তখন আবাহনীও বিষয়টি পুনঃবিবেচনা করবে।’
গত এক দশকে জাতীয় দলে খেলোয়াড় না ছেড়ে একাধিকবার খবরের শিরোনাম হয়েছিল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ও বসুন্ধরা কিংস। ঢাকা মোহামেডান এবারই প্রথম এমন পথে হাটছে।
ফুটবলসংশ্লিষ্টদের অনুমান, লিগ চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান ঘরোয়া লিগের ফিকশ্চারে অসন্তোষ ও লিগ ইস্যুতে ফেডারেশনের সঙ্গে এমন দূরত্বে নাকি এমন অবস্থানে। ফেডারেশন থেকে মোহামেডানের নীতি-নির্ধারক অনুরোধের পর খেলোয়াড় না ছেড়ে থাকতে পারে কিনা সেটাও দেখার বিষয়। মোহামেডানের গোলরক্ষক কোচ ছাইদ হাসান কানন বাফুফে নির্বাহী সদস্য, আবার জাতীয় দল কমিটিরও অন্যতম সদস্য।
জাতীয় দলের হংকংয়ের বিপক্ষে ৯ ও ১৪ অক্টোবর হোম-অ্যাওয়ে ম্যাচের জন্য প্রিমিয়ার লিগ এক রাউন্ড হয়েই স্থগিত হয়েছে। জাতীয় ফুটবল দলের অন্যতম দুই ভরসা হামজা চৌধুরি ও সামিত সোম যথাক্রমে ৬ ও ৭ অক্টোবর ঢাকায় এসে পৌঁছাবেন। তারা আন্তর্জাতিক ফুটবলের নিয়ম অনুসারেই বাংলাদেশ দলের সঙ্গে যোগ দেবেন আবার ম্যাচ খেলে সংশ্লিষ্ট ক্লাবে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে জাতীয় দলের ক্যাম্প উইন্ডোগুলো সপ্তাহ খানেকের বেশি হয় না। তবে বাংলাদেশের বাস্তবতা খানিকটা ভিন্ন। তাই ঘরোয়া লিগ একটু আগেভাগে স্থগিত করে জাতীয় দলের অনুশীলন হয়। হংকংয়ের দুই ম্যাচ বাংলাদশের এশিয়া কাপের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনুশীলনের শুরু থেকে পূর্ণাঙ্গ দল না পেলে কোচের পরিকল্পনায় স্বাভাবিকভাবেই ব্যঘাত ঘটবে।
এমকে/এসএন