যুদ্ধাপরাধের রায়ে মৃত্যুদণ্ড পেলেন কাবিলা

যুদ্ধাপরাধ ও রাষ্ট্রদ্রোহের দায়ে মধ্য আফ্রিকার দেশ ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর (ডিআর কঙ্গো) সাবেক প্রেসিডেন্ট জোসেফ কাবিলাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এম২৩ বিদ্রোহীদের সহায়তার অভিযোগে তার অনুপস্থিতিতেই সামরিক আদালত এ রায় ঘোষণা করে। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, যুদ্ধাপরাধ ও রাষ্ট্রদ্রোহের দায়ে কঙ্গোর সাবেক প্রেসিডেন্ট জোসেফ কাবিলাকে (৫৪) অনুপস্থিত অবস্থায় মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে দেশটির সামরিক আদালত। গত শুক্রবার দেওয়া এ রায়ে কাবিলাকে রাষ্ট্রদ্রোহ, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। অভিযোগগুলোর মধ্যে হত্যা, যৌন সহিংসতা, নির্যাতন ও বিদ্রোহে উসকানির মতো বিষয়ও রয়েছে।

কাবিলার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি পূর্ব কঙ্গোতে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো বিদ্রোহী গোষ্ঠী এম২৩-কে সহায়তা করেছেন। তবে আদালতে হাজির না হয়ে কাবিলা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং আদালতকে “দমননীতির হাতিয়ার” বলে আখ্যা দেন। তার বর্তমান অবস্থান অজানা।

প্রসঙ্গত, ২০০১ সালে আততায়ীর গুলিতে নিহত বাবা লরঁ কাবিলার পর ক্ষমতায় আসেন জোসেফ কাবিলা। টানা ১৮ বছর দেশ শাসন করে ২০১৯ সালে তিনি ক্ষমতা হস্তান্তর করেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স সিসেকেদিকে। তবে পরে সম্পর্কের অবনতি হলে ২০২৩ সালে কাবিলা স্বেচ্ছা নির্বাসনে চলে যান।

গত এপ্রিলে তিনি জানান, পূর্বাঞ্চলে চলমান সংঘাত নিরসনে ভূমিকা রাখতে চান। এরপর চলতি বছরের মে মাসে এম২৩-নিয়ন্ত্রিত গোমা শহরে হাজির হন তিনি।
কঙ্গোর প্রেসিডেন্ট সিসেকেদি অভিযোগ করেন, কাবিলাই এম২৩ বিদ্রোহীদের পেছনের মূল পরিকল্পনাকারী। এরপর সিনেট তার সাংবিধানিক দায়মুক্তি প্রত্যাহার করে দেয় এবং এর মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়ার পথ উন্মুক্ত হয়।

এই বছর এম২৩ বিদ্রোহীরা খনিজসমৃদ্ধ পূর্বাঞ্চলের বড় অংশ দখল করে নেয়। দখলকৃত অঞ্চলের মধ্যে গোমা, বুকাভু শহর এবং দুটি বিমানবন্দরও রয়েছে। জাতিসংঘসহ একাধিক পশ্চিমা দেশ অভিযোগ করেছে, প্রতিবেশী রুয়ান্ডা এম২৩-কে সমর্থন দিচ্ছে এবং হাজারো সেনা কঙ্গোতে পাঠিয়েছে।

তবে কিগালি অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে, তারা শুধু সংঘাতের প্রভাব নিজেদের ভূখণ্ডে ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে কাজ করছে।

পরে চলতি বছরের জুলাইয়ে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সরকারের যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেও সহিংসতা এখনও থামেনি। কঙ্গো পূর্বাঞ্চলে রক্তপাত এখনও অব্যাহত রয়েছে।

টিজে/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
গোপালগঞ্জ বিএনপির জন্য এবার গোল্ডেন চান্স : সিরাজ Oct 01, 2025
img

ডিএসই পরিচালক

সন্ত্রাসে অর্থায়ন ও অর্থপাচার প্রতিরোধে সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে Oct 01, 2025
img
রাশিয়া-চীনের সম্পর্ক অভূতপূর্ব পর্যায়ে রয়েছে: পুতিন Oct 01, 2025
img
আ. লীগকে জনগণের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে: ডা. জাহিদ Oct 01, 2025
img
সরকার বা আদালত নয়, আ.লীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেবে জনগণ : ডা. জাহিদ Oct 01, 2025
img
জামায়াত আমিরের সঙ্গে ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ Oct 01, 2025
img
বোরকা পরে হাসপাতালে পরীমনি Oct 01, 2025
img
আমরা নির্বাচনের পাইপলাইনে ঢুকে পড়েছি : বজলুল করিম চৌধুরী Oct 01, 2025
img
নতুন কমেডি সিরিজ নিয়ে দর্শকদের সামনে হাজির হচ্ছেন টিম রবিনসন Oct 01, 2025
img
প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য জনমনে প্রশ্ন তুলেছে: রিজভী Oct 01, 2025
img
জনগণই অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা দিয়েছে : অ্যাটর্নি জেনারেল Oct 01, 2025
img
উপকূলীয় এলাকায় মন্দির-পূজামণ্ডপে কোস্টগার্ডের নিরাপত্তা জোরদার Oct 01, 2025
img
মুক্তির পর প্রথম সপ্তাহেই চমক দেখাল ‘রঘু ডাকাত’ Oct 01, 2025
img
আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধতা শিগগিরই উঠছে না : আইন উপদেষ্টা Oct 01, 2025
img
বিক্ষোভে অচল পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মির, ১ জনের প্রাণহানি Oct 01, 2025
img
একদিনেই ট্রাফিক আইন ভাঙায় ২২০৮ মামলা ডিএমপির Oct 01, 2025
img
স্বর্ণ চোরাকারবারি শ্যাম ঘোষের ১০ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ Oct 01, 2025
img
মিয়ানমারের ভেতরেই রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান : ইউএনএইচসিআর প্রধান Oct 01, 2025
img
সৌদির প্রয়াত গ্র্যান্ড মুফতির নামে রিয়াদে সড়কের নামকরণ Oct 01, 2025
img
জামায়াত আমিরের সঙ্গে ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ Oct 01, 2025