ইসলামী ব্যাংকের চাকরিচ্যুত ৪০০ এবং ওএসডি হওয়া প্রায় পাঁচ হাজার কর্মকর্তার পক্ষ থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই ঘোষণা দেন তারা।
আগামী রবিবার (৫ অক্টোবর) থেকে তারা অফিসে না গিয়ে কর্মবিরতি শুরু করবেন। কর্মকর্তারা জানান, চাকরিচ্যুতি ও ওএসডি প্রত্যাহার, অতীতের হামলার বিচার এবং কর্মস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা কোনোভাবেই কাজে যোগ দেবেন না।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন মো. হুমায়ুন সিকদার, এমদাদ হোসাইন, মো. মোক্তার রসিদ।
তারা বলেন, ‘আপনারা ইতিমধ্যেই অবগত আছেন—ইসলামী ব্যাংকে কর্মরত চট্টগ্রামের প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কর্মকর্তা বর্তমানে এক অভূতপূর্ব মানবিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে প্রায় ৪০০ জন কর্মকর্তাকে সম্পূর্ণ অন্যায় ও অমানবিকভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। পাশাপাশি আরো প্রায় পাঁচ হাজার কর্মকর্তাকে ওএসডি করে কর্মস্থলে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রাখা হয়েছে।
এর আগে আমাদের ওপর হামলা হয়েছে, মারধর করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এসব অন্যায় ও নিপীড়নের পরও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করে আসছি।’
লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, ‘বিনা কারণে টার্মিনেট করা কর্মকর্তাদের স্বপদে পুনর্বহাল, প্রহসনমূলক পরীক্ষা বয়কটের জন্যে আমাদের কর্মকর্তাদের যে পানিশমেন্ট ট্রান্সফার দেওয়া হচ্ছে তা অনতিবিলম্বে বন্ধ করা, গত সরকারের আমলে প্রদত্ত অবৈধ প্রমোশনের তদন্ত, বৈষম্যহীন ও রাজনীতিমুক্ত কর্মপরিবেশ সৃষ্টি, শর্ত আরোপ করে সকল প্রকার অ্যাসেসমেন্ট টেস্ট বন্ধ এবং চট্টগ্রামের কর্মকর্তাদের ওপর চালানো মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি এবং বৃহত্তর চট্টগ্রামের সব কর্মকর্তাকে পুনরায় কর্মস্থলে ফিরিয়ে আনতে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে আমরা দাবি জানিয়ে আসছি।
কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমাদের সেই দাবিগুলোর বিষয়ে ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কিংবা সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।’
সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাওয়ার জন্য বাধ্য হয়েছেন জানিয়ে কর্মকর্তারা বলেন, ‘আমরা আমাদের দাবির বিষয়ে যথাযথ উদ্যোগ নিতে সময় দিয়েছি। কিন্তু এখনো ন্যায়বিচার পাইনি। এ জন্য আমরা রবিবার (৫ অক্টোবর) থেকে আর কর্মস্থলে যাব না এবং সর্বাত্মক কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করব। যতদিন পর্যন্ত আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হবে না, ততদিন পর্যন্ত এই কর্মসূচি বলবৎ থাকবে।’
গণমাধ্যম কর্মীদের উদ্দেশে তারা বলেন, ‘আমাদের এই দাবির কোনোটিই অতিরঞ্জিত নয়—এটা মানুষের মৌলিক অধিকার, পরিবারের অন্ন-ব্যবস্থা, সম্মানের প্রশ্ন। আমরা যদি আজ একত্রিত না হই, আগামীকাল আমাদের সন্তানরা একই মর্মান্তিক অনিশ্চয়তায় কাঁদবে। তাই আমাদের হাহাকার দেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দিন। কেননা এটি শুধু আমাদের প্রতিবাদ নয়, এটি দেশের প্রতিটি কর্মজীবী মানুষের ন্যায়বিচারের আর্তনাদ।
আইকে/টিকে