ব্রুনাইয়ের দারুসসালামে মানবপাচারের অভিযোগে মো. খাইরুল বাশার নামে এক বাংলাদেশি নাগরিককে সাড়ে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি এক লক্ষ বিশ হাজার ব্রুনাই ডলার জরিমানা ও ১২ বেত্রাঘাতের আদেশ দিয়েছে আদালত।
গত বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) আদালতের শুনানিতে খাইরুল বাশার তার অপরাধ স্বীকার করে নিলে ব্রুনাইয়ের হাইকোর্টের বিচারক মুহাম্মদ ফয়সাল বিন হাজী কেফলি এই রায় দেন।
খাইরুল বাশার ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ৩০ মার্চ পর্যন্ত ছয়জন বাংলাদেশিকে ভালো চাকরির প্রলোভনে ব্রুনাইয়ে নিয়ে আসেন এবং তাদেরকে জোরপূর্বক শ্রমে বাধ্য করেন। তার বিরুদ্ধে মানব পাচার ও চোরাচালান আইনে ছয়টি অভিযোগ আনা হয়।
বিচারক তার রায়ে উল্লেখ করেন, আসামির এই অপরাধ কোনো সুযোগসন্ধানী বা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং দুর্বল একটি গোষ্ঠীর ওপর শোষণ করার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। এটি অপরাধের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
বিচারক আরও জানান, আসামির মিথ্যা প্রতিশ্রুতির কারণে ভুক্তভোগীরা যে দুর্দশার শিকার হয়েছেন, তা গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
ভুক্তভোগীদের জবানবন্দি অনুযায়ী, তাদের কাছ থেকে চাকরির জন্য মোটা অঙ্কের টাকা নেয়া হয়েছিল। কিন্তু ব্রুনাইয়ে পৌঁছানোর পর তাদের কোনো কাজ দেয়া হয়নি, খুব কম বেতনে এবং অনিশ্চিত কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। তাদের পাসপোর্টও জব্দ করে রাখা হয়েছিল। তারা মাসিক টাকা দিতে ব্যর্থ হলে তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর হুমকিও দেয়া হয়েছিল।
আদালত এই অপরাধকে মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন এবং নিষ্ঠুর কাজ বলে অভিহিত করেছে, যেখানে পাচারকারীরা ভুক্তভোগীদের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে তাদের শোষণের হাতিয়ার বানায়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন ডেপুটি পাবলিক প্রসিকিউটর হাজাহ রোযাইমাহ বিনতে হাজী আবদুল রহমান এবং হাজাহ সিটি মুয়িজজাহ বিনতে হাজী সাবলি। অন্যদিকে আসামির পক্ষে ছিলেন দায়ুদ ইসমাইল অ্যান্ড কোম্পানির আইনজীবী।
টিজে/টিকে