বিএনপি জনগণের রায়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে কোরআন-সুন্নাহবিরোধী কোনো আইন হবে না বলে জানিয়েছেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। তিনি বলেন, ‘বিএনপি ইসলামী মূল্যবোধ, রীতি-নীতি ও সংস্কৃতিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়। অন্য ধর্ম-কর্মের স্বাধীনতা নিশ্চিত ও মূল্যবোধকেও বিএনপি সম্মান করে।’
আজ রবিবার দুপুরে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার ধারা উচ্চ বিদ্যালয়ের মিলনায়তনে ধারা ইউনিয়নের আলেম-ওলামা ও ইমামদের সাথে মতবিনিময়সভায় এ কথা বলেন তিনি।
এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, “বিএনপি ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে না। কিন্তু ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সংস্কৃতি রক্ষা এবং পূর্ণ স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মীয় সেন্টিমেন্টের প্রতি সম্মান রেখে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বিএনপি সংবিধানের সূচনায় ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রহিম’ এবং ধর্মনিরপেক্ষতার পরিবর্তে ‘ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস’ সংযোজন করেছিলেন।”
তিনি বলেন, ‘ধর্মভিত্তিক একটি রাজনৈতিক দল বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে।
ক্ষমতার জন্য তারা ভারসাম্যহীন অপপ্রচার করছে।
তিনি বলেন, ‘এরা এত দিন পরগাছার মতো রাজনীতি করেছে। আগাগোড়া বিএনপির ছত্রচ্ছায়ায় রাজনীতি করে এখন এরা বিএনপির বিরুদ্ধে বিষোদগার করছে। জমায়াত ৫ আগস্টের পর রহস্যজনক কারণে একের পর এক জাতীয় স্বার্থবিরোধী অবস্থান নিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে আওয়ামী স্টাইলে প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে।’
তিনি বলেন, “যে দলের প্রধান সংবিধানে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’, ‘ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস’ স্থাপন করেছিল, আওয়ামী লীগ ক্ষমতার জোরে তা বাতিল করে দিলেও বিএনপি আবার তা পুনঃস্থাপন করতে প্রস্তাব দিয়েছে, সেই দল বিএনপি কখনো ইসলাম থেকে দূরে সরে যেতে পরে না।”
তিনি বলেন, ‘জমায়াতে ইসলামী শরিয়াহ আইনের কথা বলে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের বিভ্রান্ত করছে। তারা ক্ষমতার লোভে ভারতীয় থিংকট্যাংককে বলছে, ক্ষমতায় এলে তারা শরিয়াহ আইন চালুর কথা কখনো বলেনি।’
তিনি বলেন, ‘কয়েকটি দল ইসলমের নামে কোটা রাজনীতি করতে চায়। বিএনপি ও বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ জনগণ এটা হতে দেবে না।
আমরা সবাই বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করি। অবশ্যই অন্য ধর্মের মানুষের সাংবিধানিক অধিকারও আমরা নিশ্চিত করেছি ও করব। রাজনীতি দিয়ে যারা ইসলামকে বিভক্ত করতে চায় তাদেরকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে হবে। যারা বলে, তাদের দলের সদস্য হলে বা তাদের প্রার্থীকে ভোট দিলে জান্নাতের টিকেট পাওয়া যাবে, তারা ইসলামের বন্ধু হতে পরে না।’
তিনি বলেন, কোনো দলের সদস্য হলে বা তাদের ভোট দিলে জান্নাত পাওয়া যাবে না। জান্নাত পেতে হলে আল্লাহর পথে মেহনত করতে হবে। নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত আদায় করে আল্লাহর হুকুম-আহকাম মেনে চললে জান্নাতের সিঁড়ির খোঁজ পাওয়া যেতে পরে।
তিনি বলেন, জামায়াত মওদুদিবাদের ইসলামে বিশ্বাস করে। বিএনপি ও বাংলাদেশের মানুষ মদিনার ইসলামে বিশ্বাস করে। জমায়াত মুখে আল্লাহর আইন ও দ্বিন কায়েম করার কথা বলে, আবার ভারতসহ বিদেশিদের অনুকম্পা পেতে চুপিসারে দলীয় মনোগ্রাম থেকে আল্লাহর নাম ও ‘আকিমুদ্দিন’ বাদ দিতে দ্বিধা করে না।
তিনি বলেন, অতীতে বিএনপি সরকারে থাকাকালে মসজিদ, মাদরাসার উন্নয়নে কাজ করেছে। সেই ধারাবাহিকতায় হালুয়াঘাটে প্রায় সব মসজিদ, মাদরাসায় তিনি সরকারি অনুদান এনে দিয়েছিলেন উল্লেখ করে এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, আগামী দিনে ইনশাআল্লাহ সেই ধারা আরো জোরদার করা হবে।
তিনি বলেন, ময়মনসিংহ-১ আসন থেকে আগামী নির্বাচনে ধানের শীষ বিজয়ী হলে তিনি ইমাম, মুয়াজ্জিনদের চাকরিবিধি প্রণয়ন ও সম্মানজনক বেতনভাতা প্রদান এবং মসজিদের বিদ্যুৎ বিল মওকুফ, বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও অন্যান্য সমস্যা সমাধানে সংসদে আইন প্রণয়নে সোচ্চার থাকবেন। বিএনপি সরকারে আসলে এ বিষয়ে পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আইকে/টিকে