যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা উপকূলে সাগরের তলদেশে বহু বছরের পুরোনো গুপ্তধন খুঁজে পেয়েছে একদল ডুবুরি। ফ্লোরিডার বিখ্যাত ‘ট্রেজার কোস্ট’ থেকে উদ্ধার হওয়া এই গুপ্তধনের বাজারমূল্য প্রায় ১০ লাখ ডলার (প্রায় ১২ কোটি ১৭ লাখ টাকা)। উদ্ধারকৃত সম্পদের মধ্যে রয়েছে এক হাজারের বেশি স্বর্ণ ও রৌপ্যমুদ্রা।
ধারণা করা হচ্ছে, এই মূল্যবান মুদ্রাগুলো বলিভিয়া, মেক্সিকো ও পেরুর স্প্যানিশ উপনিবেশগুলোতে তৈরি করা হয়েছিল। ১৭১৫ সালে গয়না বহনকারী জাহাজের একটি বহরে করে বিপুল পরিমাণ গুপ্তধন স্পেনে পাঠানো হচ্ছিল। কিন্তু বহরটি ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায় এবং সেই মূল্যবান সম্পদ সমুদ্রের তলদেশে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে হারিয়ে যায়। জাহাজের ওই বহরে ১১টি জাহাজ ছিল এবং ঝড়ের কারণে প্রায় এক হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন। ফ্লোরিডার ট্রেজার কোস্টে গুপ্তধনের খোঁজ পাওয়া নতুন কোনো ঘটনা নয়; বরং গত কয়েক বছরে এই এলাকা থেকে কোটি কোটি ডলারের ধাতব মুদ্রা উদ্ধার করা হয়েছে।
এবার উদ্ধার করা মুদ্রাগুলো শুধু আর্থিক বিচারে নয়, ঐতিহাসিক মূল্যও অসীম। গ্রীষ্মে উদ্ধার হওয়া কয়েকটি মুদ্রায় সেগুলো কবে ও কোথায় তৈরি হয়েছে, তা এখনো স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে। ইতিহাসবিদদের জন্য এটি অত্যন্ত মূল্যবান তথ্য।
গুপ্তধন অনুসন্ধানকারী মার্কিন প্রতিষ্ঠান কুইন জুয়েলসের বিশেষজ্ঞ ডুবুরি দল এই বিরল গুপ্তধন উদ্ধার করেছে। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা স্যাল গুটোসো বলেন, "এটা শুধু গুপ্তধন উদ্ধার নয়; বরং এগুলোর নিজস্ব গল্প রয়েছে। প্রতিটি মুদ্রা ইতিহাসের একটি অংশ।" তিনি একবারে এক হাজারের বেশি মুদ্রা উদ্ধারের বিষয়টিকে বিরল ও অসাধারণ ঘটনা বলে মনে করেন।
কুইন জুয়েলসের ডুবুরিরা পানির নিচের ধাতু শনাক্তকরণ যন্ত্র এবং হাতে ধরা ফ্যান ব্যবহার করে বালু সরিয়ে সমুদ্রের তলদেশ পরীক্ষা করেন। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ১৭১৫ সালের এই ‘ট্রেজার ফ্লিট’ জাহাজডুবির স্থানে উদ্ধারকাজের একচেটিয়া অধিকার তাদের।
ফ্লোরিডার আইন অনুসারে, এই অঙ্গরাজ্যে পাওয়া সব গুপ্তধনের মালিক স্থানীয় সরকার। খননকারীরা অনুমতি নিয়ে গুপ্তধন উদ্ধারের কাজ চালাতে পারেন, তবে উদ্ধারকৃত সম্পদ অঙ্গরাজ্যের মালিকানাধীন থাকে।