৩১ দফা না কি জুলাই সনদ অগ্রাধিকার কী হবে এ নিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান খোলামেলা উত্তর দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বিবিসি বাংলার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তারেক রহমান সংস্কার, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং রাজনীতির বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন। প্রায় দুই দশক পর প্রথম কোনো গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবও দিয়েছেন তিনি। তার সাক্ষাৎকারের একটি অংশ তুলে ধরা হলো।
৩১ দফা না কি জুলাই সনদ, অগ্রাধিকার কী হবে
বিবিসি বাংলার প্রশ্ন ছিল এই সংস্কারের বিষয়গুলোতে যেখানে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো নিয়ে একটা জুলাই সনদ প্রণয়নের কথা। সেটাও বাস্তবায়নের উপায়গুলো নিয়ে বা বাস্তবায়নের পথ নিয়ে দলগুলোর মধ্যে একটা বিতর্ক আছে। অনেক দল বলছে যে, নির্বাচনের আগেই আইনি ভিত্তি দেওয়া বা বাস্তবায়ন করা। আর বিএনপি বলছে, নির্বাচিত সংসদ সেটা করবে। এই জায়গাটা থেকে বেরিয়ে আসার উপায়টা কি, বিএনপির চিন্তাটা এখন কি?
তারেক রহমান বলেন,
দেখুন, এখানে আবার আমাকে বলতে হচ্ছে, আমরা কিন্তু কোন হাইড অ্যান্ড সিক করছি না। যদি আমাদের সেরকম অসৎ উদ্দেশ্য থাকতো মনের ভেতরে থাকতো একটা, বলতাম আরেকটা যে ঠিক আছে ওকে অসুবিধা নাই। তারপরে ইনশাআল্লাহ আমরা সরকার গঠনে সক্ষম হলে আমরা হয়তো করতাম না। তো আমরা যেটা মনে করছি আমরা সেটাই বলছি।
এখন বিষয় হচ্ছে দেখুন, এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ইম্পর্টেন্ট একটি বিষয়। দেখুন, আমরা যদি ইভেন রিসেন্ট যে ঘটনা, নেপালেও যদি দেখি আপনি দেখেন ওরা কিন্তু এতকিছুর মধ্যে যাচ্ছে না, ওরা বলছে যে, গুরুত্বপূর্ণ যা বিষয় আছে, সংস্কার বলেন বা বিভিন্ন বিষয় গুরুত্বপূর্ণ যা বিষয় আছে-নির্বাচিত প্রতিনিধি যারা আসবেন, জনগণের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধি যারা আসবেন তারা সেগুলোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবে বলেন তারেক রহমান।
তারপরেও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট সবকিছু বিবেচনা করে রাজনৈতিক দলগুলো বসেছে, অন্তর্বর্তী সরকার আহ্বান করেছে। এখানে যতটুকু হয়েছে, আমরা বলেছি এখন যতটুকু হয়েছে, যেগুলো শুধুমাত্র আইন দিয়ে করলে হয়ে যায়, সেগুলো হয়ে যাক। যেগুলোর সাংবিধানিক এনডোর্সমেন্ট লাগবে, সেগুলো আমরা মনে করি যে নির্বাচিত সংসদ হওয়ার পরে সেখানে গ্রহণ করাটাই ভালো হবে বলেও জানান তিনি।
কারণ, আপনি যদি নির্বাচিত সংসদের কথা বলেন, অথচ তাকে বাদ দিয়ে যদি আপনি আউট অফ দি বক্স কিছু করেন এবং এটা যদি রেওয়াজ হয়ে যায় তাহলে এটা আমরা মনে করি যে, এটা সাংবিধানিকভাবে হোক, আইনগতভাবে হোক বা যে দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার-বিবেচনা করেন না কেন-ভবিষ্যতের জন্য এটা একটি খারাপ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। সেজন্য আমরা মনে করি, যেটা দেশের জন্য সামগ্রিকভাবে ক্ষতির একটি কারণ হবে। সেজন্যই আমরা এটার সাথে একমত না বলেন তারেক।
বিবিসি বাংলা- এখন বিএনপির যেহেতু ৩১ দফা আছে, যদিও যেসব বিষয়ে আলোচনায় এসেছে, অনেক বিষয়ে মিল আছে। তো বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে বা সরকার গঠন করে, তখন ৩১ দফা নাকি জুলাই সনদ কোনটা অগ্রাধিকার পাবে?
তারেক রহমান বলেন,
আমরা যেগুলোতে একমত হয়েছি, প্রথমে আমরা সেগুলোর ওপরেই জোর দিব। সেটা আপনি যে নামেই বলেন না কেন, স্বাভাবিকভাবে আমরা ঐকমত্য কমিশনে যেগুলোতে সকলে মিলে একমত হয়েছি, আমরা প্রথমে সেগুলোতে ইনশাআল্লাহ সরকার গঠনের সুযোগ পেলে প্রথমে সেগুলোতেই অবশ্যই জোর দিব। আর তারপরে আপনি যেটা ৩১ দফার কথা বললেন, অবশ্যই ৩১ দফা আমাদের রাজনৈতিক কমিটমেন্ট জনগণের প্রতি। আমরা তো আমাদের ৩১ দফার মধ্যে যেগুলোর এটার সাথে মিলে গিয়েছে, সেগুলো তো আমরা করবই। এর বাইরে যেগুলো থাকবে ৩১ দফায় আছে, সেগুলোও বাস্তবায়ন করবো।
কারণ ওটা তো আমাদের রাজনৈতিক কমিটমেন্ট। এটাও যেমন পলিটিক্যাল কমিটমেন্ট, ওটাও আমাদের পলিটিক্যাল কমিটমেন্ট। এটা আমরা রাজনৈতিক দলগুলো মিলে একত্রিত হয়ে বলেছি। ওটাও আমরা অনেকগুলো রাজনৈতিক দল একত্রিত হয়েই কিন্তু ৩১ দফা দিয়েছি বলেন তারেক রহমান।
ইএ/টিকে