জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল বলেছেন, ‘নির্বাচনের বাইরেও যদি থাকে তার পরেও আসন্ন নির্বাচনে আমার বিবেচনায় মূল ফ্যাক্টর হবে আওয়ামী লীগ।’ গতকাল নিজের ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া ভিডিওতে তিনি একথা বলেন।
আওয়ামী লীগ নির্বাচনে না থাকলে নির্বাচন কেমন হবে এই প্রসঙ্গে মাসুদ কামাল বলেন, ‘তাহলে কার সঙ্গে কার প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে? আপনারা হয়তো বলবেন— বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। এই বাংলাদেশে যেকোনো পরিস্থিতিতে যদি নির্বাচন হয়, এখনকার বাস্তবতায় জামাত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকার মতো কোনো দল না। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। কিন্তু যেহেতু আওয়ামী লীগ নেই জামায়াত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।’
জামায়াতের অনেক নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা হয় উল্লেখ করে মাসুদ কামাল বলেন, ‘মজার বিষয় হলো জামায়াত নেতারা মনে করে নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে তারা ক্ষমতায় আসতে পারেন। কিসের ওপর ভিত্তি করে তারা ক্ষমতায় আসতে চাচ্ছেন, তাদের এই হিসাবটা কি একেবারেই হাস্যকর, আমার কিন্তু তা মনে হয় না। তাদের একটা হিসাব আছে। সে হিসাবটা কী?’
মাসুদ কামাল আরো বলেন, ‘আমার বিবেচনায় আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি যদি নির্বাচনের বাইরেও থাকে, তার পরেও আসন্ন নির্বাচনে মূল ফ্যাক্টর হবে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ নির্বাচনে আসলেও মূল ফ্যাক্টর, নির্বাচনের বাইরে রাখলেও দলটিই মূল ফ্যাক্টর। আওয়ামী লীগের ওপর নির্ভর করবে নির্বাচনটা কেমন হবে।’
এ প্রসঙ্গে মাসুদ কামাল বলেন, ‘প্রথমত আওয়ামী লীগ যদি সিদ্ধান্ত নেয় যে আমরা কেউ নির্বাচনে ভোট দিতে যাব না, তাহলে এই নির্বাচনে ভোটের পরিমাণ হবে অনেক কম। এত কম যেটা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নির্বাচনের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে পারে। যদি আওয়ামী লীগের কেউ ভোট দিতে না আসে তাহলে এবং ভোট না দেওয়ার পক্ষে যদি আওয়ামী লীগ কিছু কার্যক্রম করে, তাহলে কিন্তু নির্বাচনের ভোটের উপস্থিতি নিয়ে একটা আশঙ্কা তৈরি হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আবার যদি আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত নেয়— আমরা ভোট দেব, কিন্তু বিশেষ একটা দলকে পাস করাবো। সেটা করার সক্ষমতা আওয়ামী লীগের আছে।
মাথায় রাখবেন আওয়ামী লীগের আসলেই অনেক ভোট। আওয়ামী লীগের ভোটাররা যদি ভোট দিতে আসে, তখন পুরো নির্বাচনটা নির্ভর করবে আওয়ামী লীগের ভোট দাঁড়িপাল্লা যাবে নাকি ধানের শীষে যাবে নাকি অন্য কোনো মার্কায় যাবে এই সিদ্ধান্তের ওপর। যদি জাতীয় পার্টি নির্বাচনে থাকে তাহলে আওয়ামী লীগের ভোট লাঙ্গলে গেলে কিন্তু আবার আরেকটি রেজাল্ট নিয়ে আসবে। অর্থাৎ সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করবে আওয়ামী লীগ। এটাই বাংলাদেশের রাজনীতির বাস্তবতা, আপনি মানেন আর না মানেন। এনসিপির ছেলে-মেয়েরা যতই লাফালাফি করুক, এটাই বাস্তবতা। আওয়ামী লীগ খারাপ দল কোনো সন্দেহ নাই, দলটি গত ১৫ বছর অনেক কিছু করছে, তাতেও কোনো সন্দেহ নাই। কিন্তু তার পরেও বাস্তবতা হলো এদেশে একটা বিপুল জনগোষ্ঠী আওয়ামী লীগকে চায়।’
কেএন/টিকে