দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকেন্দ্র সাতক্ষীরার ভোমরা শুল্ক স্টেশনকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘কাস্টমস হাউজ’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে সরকার। অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক স্মারক পত্রের মাধ্যমে এ সংক্রান্ত অনুমোদন জারি করা হয়েছে।
এর মাধ্যমে ভোমরা স্থলবন্দর বাংলাদেশের কাস্টমস প্রশাসনিক কাঠামোয় নতুন মর্যাদা অর্জন করল। আমদানিকারকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এ সিদ্ধান্ত দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে নতুন গতি সঞ্চার করবে এবং রাজস্ব আদায়ে অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখবে।
ভোমরা কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং (সিএন্ডএফ) এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন সরকারের এ সিদ্ধান্তকে একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক হিসেবে অভিহিত করেছে। সংগঠনের সভাপতি মো. আবু হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মো. আবু মুছা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক ভোমরাকে কাস্টমস হাউজ ঘোষণার মাধ্যমে এই অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্ভাবনা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে।’
তারা সরকারের দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও সময়োপযোগী এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র কলকাতার সঙ্গে ভোমরার দূরত্ব অন্যান্য বন্দরের তুলনায় অনেক কম। ফলে ভোমরা এখন দেশের অন্যতম ব্যস্ততম স্থলবন্দরে পরিণত হবে।’
তারা আরও বলেন, ‘কাস্টমস হাউজে উন্নীত হওয়ার ফলে এখানে প্রশাসনিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে, জনবল ও অবকাঠামো উন্নয়ন ঘটবে যা ছিল ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা। এর ফলে কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগও সৃষ্টি হবে।’
ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), কাস্টমস বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানিয়েছে। সংগঠনটি আশা প্রকাশ করেছে, সরকারের এই উদ্যোগের ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে ভোমরা কাস্টমস হাউজ অচিরেই দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্রে পরিণত হবে এবং জাতীয় রাজস্ব আয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বর্তমানে ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে খাদ্যপণ্য, নির্মাণসামগ্রী, পোশাক, কসমেটিকসসহ নানা পণ্য আমদানি হয়। অপরদিকে বাংলাদেশ থেকে রফতানি হয় কৃষিপণ্য, মাছ ও শিল্পজাত দ্রব্য।
‘কাস্টমস হাউজ’ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার ফলে এখন থেকে ভোমরায় পূর্ণাঙ্গ রাজস্ব প্রশাসন, শুল্ক নির্ধারণ, আমদানি-রফতানি নথি যাচাই ও বাণিজ্য ব্যবস্থাপনার সব কার্যক্রম স্থানীয়ভাবে সম্পন্ন করা যাবে। এতে সময়, খরচ ও প্রশাসনিক জটিলতা কমবে যা ব্যবসায়ীদের জন্য বড় স্বস্তির বিষয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ী, কর্মকর্তা ও সাধারণ জনগণ সরকারের এ সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তাদের বিশ্বাস, এই ঘোষণা শুধু ভোমরা বন্দর নয়, বরং পুরো দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনৈতিক চিত্র আমূল পরিবর্তন করবে।
এসএস/টিএ