ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি এখনো কার্যকর রয়েছে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় একাধিক প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছে।
যুদ্ধবিরতির মধ্যেই গাজায় এক হামলায় দুই ইসরায়েলি সেনা নিহত হওয়ার পর ফিলিস্তিনি ছিটমহলটিতে একের পর এক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনিরা জানিয়েছেন, এসব হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছেন।
চলতি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে রবিবারের এসব ঘটনা সেটির সবচেয়ে গুরুতর লঙ্ঘন। এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘হ্যাঁ, যুদ্ধবিরতি এখনো কার্যকর রয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, হামাসের শীর্ষ নেতৃত্ব যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত নয়, বরং ‘কিছু বিদ্রোহী’ এর পেছনে থাকতে পারে। তবে যাই হোক, বিষয়টি যথাযথভাবে মোকাবিলা করা হবে-কঠোরভাবে, কিন্তু সঠিকভাবে’।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী রবিবার জানায়, তারা হামাসের অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে এবং এরপরও যুদ্ধবিরতি কার্যকর করেছে।
ইসরায়েল অভিযোগ করেছে, হামাস তাদের সেনাদের লক্ষ্যবস্তু করেছিল-যা ৯ দিন আগে শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতির পর থেকে সবচেয়ে বড় সহিংস ঘটনা। গাজার সিভিল ডিফেন্স সংস্থা জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৪৫ জন নিহত হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, তারা হতাহতের এই প্রতিবেদনগুলো খতিয়ে দেখছে। গাজার সিভিল ডিফেন্স সংস্থা হামাস কর্তৃপক্ষের অধীনে পরিচালিত।
ট্রাম্প আশা করেন তার মধ্যস্থতায় সম্পন্ন যুদ্ধবিরতি স্থায়ী হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই এটি হামাসের সঙ্গে খুবই শান্তিপূর্ণভাবে চলুক। আপনারা জানেন, তারা কিছুটা অস্থির আচরণ করছে। তারা কিছু গুলি চালিয়েছে, তবে আমরা মনে করি, হামাসের শীর্ষ নেতৃত্ব এতে জড়িত নয়।’ ট্রাম্পের বক্তব্যের কিছুক্ষণ আগেই তার ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স গাজার নতুন সহিংসতাকে ছোট করে দেখান।
তিনি বলেন, ‘এই ধরনের যুদ্ধবিরতিতে কিছু সময় শান্তি থাকবে, আবার হঠাৎ উত্তেজনা দেখা দেবে।’
ভ্যান্স বলেন, ‘হামাস ইসরায়েলের দিকে গুলি ছোড়াবে, আর ইসরায়েল পাল্টা জবাব দেবে। আমরা মনে করি, এটি দীর্ঘমেয়াদী শান্তির জন্য সবচেয়ে ভালো সুযোগ তৈরি করেছে। তবে এই প্রক্রিয়ায় উত্থান-পতন থাকবে এবং আমাদের ঘনিষ্ঠভাবে নজর রাখতে হবে।’
১০ অক্টোবর থেকে কার্যকর হওয়া এই যুদ্ধবিরতি গাজায় দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা বিধ্বংসী যুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছে। যে যুদ্ধে ইসরায়েলের হামলায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং গাজার বড় অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এই যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে বন্দি ও জিম্মি বিনিময় এবং গাজার ভবিষ্যতের জন্য একটি সমন্বিত রোডম্যাপ নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে এর বাস্তবায়নে শুরু থেকেই নানা জটিলতা দেখা দিয়েছে।
টিজে/টিকে