গায়ের রং নিয়ে বহু সমালোচনার শিকার হয়েছিলেন পাওলি দাম। বাবা-মা মুক্তমনা হলেও যৌথ পরিবারের টীকা-টিপ্পনী কম শুনেননি! ঘরের বাইরে কোচিংয়ে পড়তে গিয়েও গায়ের রং নিয়ে কম কথা শুনতে হয়নি তার।
তার মতে, মনটা এক এক সময় খারাপ হয়ে যেত। আচ্ছা, কালো মানেই কুৎসিত আর ফর্সা মানেই সুন্দর?
তবে তার মন খারাপ প্রথম ভালো করে দিয়েছিলেন পরিচালক গৌতম ঘোষ।
তার সঙ্গে ‘কালবেলা’য় অভিনয় করার সময় বলেছিলেন, “পাওলি, তোর গায়ের রংটা তো দুর্দান্ত! কী ভালো ত্বক।”
বললেন, সেই প্রথম কালো মেয়ের প্রশংসা করলেন কেউ। চোখটা ভিজে গিয়েছিল। চাপা গায়ের রঙের জন্যই ‘আই লাভ ইউ’ ছবিতে দেবের ‘বোন’ হতে হয়েছিল।
তখন ইন্ডাস্ট্রিতে ধারণা ছিল, নায়িকা মানেই ফর্সা। পরে যখন অতনু রায়চৌধুরীর ‘সাঁঝবাতি’ করলাম, তখন ওই একই নায়কের নায়িকা! প্রচারে বেরিয়ে বলেছিলাম, কালো মেয়েদের উন্নতি হয়েছে। আমি দেবের ‘বোন’ থেকে নায়িকা হয়েছি!
পাওলি আরো বলেন, তখন থেকে ঠিক করেছিলাম, প্রতিবাদ জানাব। লড়াই করব আগামী প্রজন্মের জন্য, যাতে ওদের আমার মতো কষ্ট পেতে না হয়।
এবার প্রশ্ন, প্রতিবাদ জানাব কীভাবে? বড়জোর সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে কথা বলতে পারি। তার পর? লেখা ক’জন পড়েন! তাতে সমাজ কতটা বদলাবে?
এমন চরিত্রে অভিনয় করতে শুরু করলাম, যেখানে গায়ের রং হাতিয়ার। প্রতিবাদী, জোরালো, বলিষ্ঠ চরিত্র। ভিতরে জমে থাকা আগুন উগরে দিতাম। সেই সময়কার পরিচালকেরাও যথেষ্ট সহযোগিতা করেছিলেন।
ফলাফল, এখন অনেক ছবি, সিরিজের নায়িকার গায়ের রং কিন্তু চাপা! আর একটি জিনিস বুঝেছি। শুধুই নায়িকা নন, নায়কদেরও এই লড়াইয়ে এগিয়ে আসতে হবে। লিঙ্গবৈষ্যম্য যে কোনও সমস্যার সমাধান করতে পারে। আর পারে মেয়েদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা।
অন্যান্যদের উদ্দেশ্যে পাওলি বলেন, যারা আমার মতো বা আমার থেকেও শ্যামবর্ণা তারা মন খারাপ করবেন না। কালোর মধ্যে কিন্তু এক গভীর রহস্য থিতিয়ে। বলিউডের রেখাজিকে দেখুন। ওর মতো ‘প্রহেলিকা’ আর কে আছেন? আমিও নাকি ‘রহস্যময়ী’, বলেন অনেকে।
সূত্র: আনন্দবাজার
আরপি/টিকে