চিত্রনায়ক ওমর সানীর ভাষায়, “কিছু কুলাঙ্গারের কারণে দেশের চলচ্চিত্র ভয়াবহ অবস্থায় পৌঁছেছে।” নব্বইয়ের দশকের এই জনপ্রিয় নায়ক মনে করেন, সিনেমা বাঁচাতে হলে সবাইকে রাজনীতি বাদ দিয়ে চলচ্চিত্র নিয়েই ভাবতে হবে।
সম্প্রতি রাজধানীর বসুন্ধরার বাসায় চুরির মামলার খোঁজ নিতে আদালতপাড়ায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ওমর সানী। সেখানেই তিনি চলচ্চিত্রের বর্তমান সংকট নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তার ভাষায়, “গত ১০ বছর ধরে চলচ্চিত্র ভয়ংকর পরিস্থিতির মধ্যে আছে। এই অবস্থা থেকে বের হতে হলে পরিচালক, প্রযোজক, শিল্পী—সবারই রাজনৈতিক বিষয়গুলো সরিয়ে রাখতে হবে। সিনেমা নিয়েই ভাবতে হবে। কিছু দাঁড়কাক আছে, যারা শিল্পের ক্ষতি করছে—তাদের কথা বলব না, কিন্তু সবাই জানে কারা তারা।”
চলচ্চিত্রের উন্নয়নে ভূমিকা রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ওমর সানী আরও বলেন, “যত দূরেই থাকি না কেন, এই চলচ্চিত্র দিয়েই আমি ওমর সানী। আমি চাই সিনেমা ভালো জায়গায় যাক, শিল্পীরা টিকে থাকুক, সংস্কৃতি বাঁচুক। সরকারের অবস্থান যেমনই হোক, চলচ্চিত্র বাঁচাতে যা দরকার আমি করব, মৌসুমীও পাশে থাকবে।”
আবেগভরা কণ্ঠে তিনি আরও যোগ করেন, “চলচ্চিত্রের কোনো খারাপ খবর দেখলে আপনারা হয়তো ভুলে যান। কিন্তু আমরা ঘরের দরজা বন্ধ করে কাঁদি। সৃষ্টিকর্তা সেই কান্না দেখেন। কিছু কুলাঙ্গারের কারণেই চলচ্চিত্রের এই অবস্থা।”
এর আগে গত ১৬ ডিসেম্বর ভাটারা থানায় নিজ বাসায় চুরির অভিযোগে মামলা করেন ওমর সানী। মামলায় অভিযুক্ত করা হয় এস এম নিশাদ বিন জিয়া, মো. রাব্বি, কেয়ারটেকার সম্পদ দাস এবং জয় চন্দ্র দাসকে।
তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় গত ২৯ মে এসআই মো. কামরুজ্জামান আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই প্রতিবেদনে অসন্তোষ জানিয়ে ওমর সানী ‘নারাজি’ আবেদন করেন।
পরবর্তীতে ১১ আগস্ট ঢাকার মহানগর হাকিম জুয়েল রানা মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। ডিবি পুলিশের গুলশান বিভাগকে নতুনভাবে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আগামী ১১ নভেম্বর আদালতে অধিকতর প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ নির্ধারিত আছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ১৫ ডিসেম্বর সকালে ওমর সানী বাসায় তালা দিয়ে বাইরে যান। দুপুরে ফিরে দেখতে পান, বেডরুমের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। পরে কেয়ারটেকার সম্পদ দাস পাশের গাছ বেয়ে বারান্দা দিয়ে ভেতরে ঢুকে দেখতে পান, ঘর এলোমেলো, আলমারি ভাঙা। চুরি যাওয়া মালামালের মধ্যে ছিল তার ছেলে ফারদিন এহসান স্বাধীনের মামলার গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র, একটি ব্ল্যাংক চেকসহ ছয়টি চেকের পাতা, ৯ লাখ ৩০ হাজার টাকার একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ এবং স্বর্ণালংকার।