বিরতির পর অলিম্পিয়াকোসের ঘটনাবহুল গোলে যে নাটকীয়তার আভাস মিলল, তা মিলিয়ে যেতে একদমই সময় লাগল না। প্রতিপক্ষে একজন কমে যাওয়ার সুযোগে তাদেরকে পুরোপুরি চেপে ধরল বার্সেলোনা। ফের্মিন লোপেসের দারুণ হ্যটিট্রিকে বড় জয়ের আনন্দে মাঠ ছাড়ল হান্সি ফ্লিকের দল।
ঘরের মাঠে মঙ্গলবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচটি ৬-১ গোলে জিতেছে বার্সেলোনা। জোড়া গোল করেছেন মার্কাস র্যাশফোর্ড এবং তাদের আরেক গোলদাতা লামিনে ইয়ামাল।অক্টোবরের প্রথম দিনে এই প্রতিযোগিতায় ঘরের মাঠে পিএসজির বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরেছিল বার্সেলোনা। এর তিন দিন পর লা লিগায় তারা হেরে যায় সেভিয়ার বিপক্ষে, ৪-১ ব্যবধানে।
সেই জোড়া ধাক্কা সামলে গত শনিবার ঘরোয়া লিগে জিরোনার বিপক্ষে জিতে পথে ফেরে স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নরা। এবার তারা ইউরোপ সেরা মঞ্চেও জয়ের পথে ফিরল।
প্রথম দুই রাউন্ডে মাত্র এক পয়েন্ট পাওয়া অলিম্পিয়াকোস কিক অফের পরপরই আক্রমণ শাণায়। ডি-বক্সের বাইরে থেকে জোরাল শট নেন দানিয়েল কাস্তেলো, দারুণ নৈপুণ্যে ঝাঁপিয়ে সেটা রুখে দেন ভয়চেখ স্ট্যান্সনি।
এরপর টানা কয়েকটি আক্রমণ করে বার্সেলোনা এবং দ্রুত গোলও পেয়ে যায় তারা। সপ্তম মিনিটে বল পায়ে ডি-বক্সে ঢুকে একজনকে ফাঁকি দিয়ে গোলরক্ষককেও কাটাতে গিয়ে পারেননি ইয়ামাল, তখন বল ধরে জায়গা বানিয়ে বাঁ পায়ের শটে দলকে এগিয়ে নেন লোপেস।
২০তম আচমকা গোল খেতে বসেছিল বার্সেলোনা। ডি-বক্সের বাইরে থেকে দানি গার্সিয়ার শটে বল স্বাগতিকদের একজনের গায়ে লেগে দিক পাল্টে জালে জড়াতে যাচ্ছিল, স্ট্যান্সনি আগেই অন্যদিকে ঝুঁকে পড়েছিলেন; তবে বল ক্রসবারে লাগলে বেঁচে যায় তারা।
৩৮তম মিনিটে ব্যবধান বাড়িয়ে লড়াইয়ের নিয়ন্ত্রণ নেয় বার্সেলোনা। ১৭ বছর বয়সী মিডফিল্ডার দ্রো ফের্নান্দেসের পাস ডি-বক্সে পেয়ে একজনকে কাটিয়ে, দুজনের মধ্যে দিয়ে জোরাল শটে গোলটি করেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার লোপেস।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই লড়াইয়ে নতুন প্রাণ ফেরায় গ্রিক ক্লাবটি। ৫০তম মিনিটে এল কাবি হেডে বল জালে পাঠালেও গোল মেলেনি, বরং এর আগমুহূর্তে ডি-বক্সে ডিফেন্ডার এরিক গার্সিয়ার হাতে বল লাগায় পেনাল্টি পায় সফরকারীরা।
ওই স্পট কিক থেকে মরক্কোর ফরোয়ার্ড এল কাবিই ব্যবধান কমান।
চার মিনিট পর আবার দৃশ্যপটে নতুন নাটকীয়তা; মার্ক কাসাদোকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার সান্তিয়াগো, ১০ জনের দলে পরিণত হয় অলিম্পিয়াকোস।
একজন কম নিয়ে আর শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেনি তারা। ৬৮তম মিনিটে ইয়ামালের সফল স্পট কিকে ফের দুই গোলে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। র্যাশফোর্ডকে গোলরক্ষক কন্সতানতিনোস ফাউল করলে পেনাল্টিটি পায় তারা।
কিছুক্ষণ পর দুই মিনিটে আরও দুবার জালে বল পাঠিয়ে বড় জয়ের পথে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা।
৭৪তম মিনিটে আলেহান্দ্রো বাল্দের ডি-বক্সে ছোট পাস পেয়ে শটে জালে বল পাঠান র্যাশফোর্ড। এরপর ডি-বক্সের মধ্যে থেকেই জোরাল হাফ ভলিতে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন লোপেস।
কদিন আগে চোট কাটিয়ে ফেরা ইয়ামালকে ওই দুই গোলের মাঝে তুলে নেন কোচ। বার্সেলোনার আক্রমণের ধার অবশ্য তাতে কমেনি। ৭৯তম মিনিটে পেদ্রির উঁচু করে বাড়ানো বল দারুণ এক ছোঁয়ায় নিয়ন্ত্রণের নেওয়ার ফাঁকেই একজনকে কাটিয়ে, বক্সের বাইরে থেকে নিখুঁত শটে লক্ষ্যভেদ করেন র্যাশফোর্ড।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে ধারে বার্সেলোনায় গিয়ে নিজেকে ফিরে পাওয়া এই ইংলিশ ফরোয়ার্ডের আসরে গোল হলো চারটি। তিন ম্যাচে দুই জয়ে বার্সেলোনার পয়েন্ট হলো ৬।
আরেকটি পরাজয়ে টেবিলে আরও নিচে নেওয়ার যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে গেল অলিম্পিয়াকোস।
এমআর