গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধবিরতি প্রত্যাশার চেয়েও ভালোভাবে চলছে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। হামাস সহযোগিতা না করলে সম্পূর্ণ প্রচেষ্টা ভেস্তে যাবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। তবে গাজার ফিলিস্তিনিরা বলছেন, যুদ্ধবিরতির পর থেকে তাদের জীবনে বাস্তব কোনো পরিবর্তন আসেনি। ইসরাইল এখনও বিক্ষিপ্তভাবে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে এবং ত্রাণ সহায়তা আটকে দিচ্ছে।
ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতির মধ্যেও চরম নৃশংসতা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। গত ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় ৮৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতি টিকিয়ে রাখতে ইসরাইল সফর করছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স।
গত মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং জামাতা ও সিনিয়র উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনারের সাথে ইসরাইলে যান জেডি ভ্যান্স। এক বক্তব্যে তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতির বাস্তবায়ন এখন পর্যন্ত ইতিবাচক অগ্রগতির মধ্যদিয়ে এগোচ্ছে।
তবে তিনি সময়সীমা জানাতে অস্বীকৃতি জানান, কবে নাগাদ হামাসকে নিরস্ত্র করতে হবে যা এখনও আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, হামাস যদি সহযোগিতা না করে, সম্পূর্ণ প্রচেষ্টা ভেস্তে যাবে। তিনি বলেন, ‘ইসরাইল চুক্তির মূল লক্ষ্য পূরণে উল্লেখযোগ্যভাবে সহযোগিতা করছে। তবে সামনে এখনও অনেক কাজ বাকি।’
চুক্তি কার্যকর হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস শক্তি প্রদর্শনের জন্য গাজায় সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন করেছে, প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে এবং একাধিক ঘটনায় ইসরাইলি সেনাদের হত্যা করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হামাসের সামরিক সক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তাদের পুনর্গঠন ক্ষমতা রয়েছে। ইসরাইলি কর্মকর্তা ও বিশ্লেষকদের মতে, হামাসের প্রায় ৯০ শতাংশ রকেট ধ্বংস হয়েছে। তবে তাদের বিস্তৃত টানেল সিস্টেম এখনও মূল শক্তি, যা ইসরাইলের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির পর থেকে গাজায় ৫৩০টি ট্রাক খাদ্য পৌঁছেছে যা প্রায় ৫ লাখ মানুষের জন্য দুই সপ্তাহের খাবার। তবে প্রতিদিনের লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার টনের জোগান এখনো পূরণ হয়নি। এদিকে গাজার গণমাধ্যম দফতর জানায়, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর এখন পর্যন্ত মাত্র ৯৮৬টি ট্রাক ঢুকেছে যা চুক্তির ছয় হাজার ছয়'শ ট্রাকের তুলনায় অতি সামান্য।
এদিকে গাজা পুনর্গঠন এবং ইসরাইল-ফিলিস্তিন দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান পুনরায় জীবিত করার ক্ষেত্রে ইউরোপকে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে বলে জানিয়েছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উর্সুলা ফন ডার লাইয়েন। তিনি আরও বলেছেন, ইউরোপের স্বাধীনতা ও বৈশ্বিক প্রভাব তার নিকটতম অঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকা রাখার ওপর নির্ভর করছে।
ইএ/এসএন