জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু)।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি সড়ক ঘুরে বটতলায় এসে শেষ হয়৷
বিক্ষোভ মিছিল শেষে জাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ছাত্রলীগ রক্তপিপাসু রূপ দেখিয়ে এ দেশে স্বৈরশাসনের সূচনা করেছিল। ২৪ এর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আগে পর্যন্ত তারা বিডিআর বিদ্রোহ হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্তরের হত্যাকাণ্ড, সাঈদী সাহেবের রায়কে কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ড, জুলাই ম্যাসাকার সব কিছু করে তারা যে রক্তের হলি খেলে এ দেশের মানুষকে অত্যাচার করে গিয়েছিল। আজও ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ এই নিষিদ্ধ সংগঠনগুলো তারা তাদের আঁশফলন দেখিয়ে যেতে চায়। তারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঝটিকা মিছিল করে তাদের উপস্থিতি জানান দিতে চায়। সর্বশেষ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকাল প্রধান ফটকের সামনে তারা যেই কয়েকজন ছাত্র নামধারী, সাবেক প্রাক্তন শিক্ষার্থী নামধারী সন্ত্রাসী। ছাত্রলীগ নামধারী কুলাঙ্গারা তারা তাদের কয়েকটা চেহারা দেখিয়ে চলে গেছে।
তিনি বলেন, আমরা বলতে চাই, তাদের যেই সুযোগ আসলে বাইরে থেকে নয়, ভেতর থেকে দেওয়া হচ্ছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আমি হুঁশিয়ারি দিতে চাই, আপনারা নিশ্চিত করুন, আপনারা কি এখনো সেই আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দোসরদের এখানে পুনর্বাসন করতে চান? নাকি আপনারা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ম্যান্ডেড নিয়ে থাকতে চান? আপনারা যদি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ম্যান্ডেট ভুলে যেতে চান, আমাদেরকে যদি এই জায়গায় গ্রহণ করার মানসিকতা না থাকে, বিচারের মানসিকতা না থাকে। আমরা এই জায়গা থেকে হুঁশিয়ারি দিতে চাই, আপনাদের সেই বাসনাকে আমরা কবর দিতে প্রস্তুত রয়েছি।
জাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি) আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, আমরা খুবই লজ্জিত হয়েছি যখন দেখেছি, গতকাল রাতে আমাদের প্রধান ফটকের সামনে এসে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী এসে মানববন্ধন করে যায়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে যে সব ব্যক্তিরা বসে আছেন, এটা কিন্তু আপনাদের জন্য অনেকটা লজ্জার। আমরা আপনাদেরকে হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, এরপর থেকে যদি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০০ একরের মধ্যে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের একজন নেতাকর্মীও এ ধরনের কর্মসূচি করার দুঃসাহস দেখায়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাওয়ার আগে আমরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাবো।
ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলোকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জুলাইয়ে যেমন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে, তাদের সংগঠন ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে সবাই মিলে লড়াই করেছিলাম, আমরা তেমনি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সমস্ত ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন একসঙ্গে যাতে আবারও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করতে পারি, তার জন্য আমি সমস্ত ছাত্র সংগঠনকে বিনয়ের সাঙ্গে আহ্বান করবো।
পিএ/এসএন