চলতি করবছরে এখন পর্যন্ত ১০ লাখের বেশি করদাতা ই-রিটার্ন দাখিল করেছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এতে বলা হয়, গত ৪ আগস্ট অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ২০২৫-২৬ কর বছরের জন্য অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিল কার্যক্রম শুভ উদ্বোধন করেন। করদাতারা www.etaxnbr.gov.bd ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সহজে অনলাইনে রিটার্ন পূরণ করে নিমিষেই অনলাইনে দাখিল করতে পারছেন। ২০২৫-২৬ করবছরে এখন পর্যন্ত ১০ লাখের বেশি ব্যাক্তি করদাতা অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিল করেছেন-যা অত্যন্ত উৎসাহ ব্যঞ্জক।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এক বিশেষ আদেশের মাধ্যমে চলতি বছর ৬৫ বছর বা এর বেশি বয়সের প্রবীণ করদাতা, শারীরিকভাবে অসমর্থ বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন করদাতা, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতা, মৃত করদাতার পক্ষে আইনগত প্রতিনিধির রিটার্ন দাখিল এবং বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি নাগরিকদের ছাড়া সব ব্যক্তি শ্রেণির করদাতার অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করেছে।
২০২৫-২৬ করবছরে বেশ কয়েক শ্রেনির করদাতাদেরকে অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাদকতা থেকে অব্যাহতি দেয়া হলেও তারা ইচ্ছা পোষণ করলে অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিল করতে পারছেন। অন্যদিকে ই-রিটার্ন সিস্টেমে নিবন্ধন সংক্রান্ত সমস্যার কারণে কোনো করদাতা অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলে সমর্থ না হলে আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের কাছে সুনির্দিষ্ট যৌক্তিকতাসহ আবেদন করলে সংশ্লিষ্ট অতিরিক্ত বা যুগ্মকর কমিশনারের অনুমোদন সাপেক্ষে পেপার রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন।
চলতি বছর করদাতার পক্ষে তার ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধিও অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিল করতে পারছেন। এছাড়া, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতাদের ক্ষেত্রে অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাদকতা না থাকলেও তার পাসপোর্ট নম্বর, জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর, ই-মেইল এড্রেস ইত্যাদি তথ্য ereturn@etaxnbr.gov.bd ই-মেইলে পাঠিয়ে আবেদন করলে আবেদনকারীর ই-মেইলে ওটিপি ও রেজিষ্ট্রেশন লিংক পাঠানো হচ্ছে। এর মাধ্যমে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতারাও ই-রিটার্ন সিস্টেমে রেজিস্ট্রেশন করে সহজেই অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারছেন।
কোনো ধরনের কাগজপত্র বা দলিল আপলোড না করে করদাতারা তাদের আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায়ের প্রকৃত তথ্য ই-রিটার্ন সিস্টেমে এন্ট্রি করে সহজে ঝামেলাহীনভাবে আয়কর রিটার্ন দাখিল করে তাৎক্ষণিকভাবে নিজেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ই-রিটার্ন দাখিলের প্রাপ্তি স্বীকারপত্র ও প্রয়োজনীয় তথ্য উল্লেখ করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আয়কর সনদ প্রিন্ট নিতে পারেন। ফলে দেশে-বিদেশে অবস্থানরত সব বাংলাদেশি করদাতাদের কাছে ই-রিটার্ন দাখিল বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
ই-রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়া সহজবোধ্য করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গত বছরের মতো চলতি বছরেও করদাতাদের অনলাইন রিটার্ন দাখিলের জন্য প্রশিক্ষণ দিয়েছে। করদাতারা ছাড়াও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চলতি বছর করদাতার ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি তথা আয়কর আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যন্টস, কস্ট এন্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যন্টস এবং চার্টার্ড সেক্রেটারিজদেরকে ও ই-রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়ার ওপর প্রশিক্ষণ দিয়েছে।
ই-রিটার্ন সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যায় করদাতাদের সহায়তা দেয়ার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড একটি কল সেন্টার স্থাপন করেছে। উক্ত কল সেন্টারের ০৯৬৪৩ ৭১ ৭১ ৭১ নম্বরে ফোন করে করদাতারা ই-রিটার্ন সংক্রান্ত প্রশ্নের তাৎক্ষণিক টেলিফোনিক সমাধান পাচ্ছেন। এছাড়া www.etaxnbr.gov.bd এর eTax Service অপশন থেকে করদাতারা ই-রিটার্ন সংক্রান্ত যে কোনো সমস্যা লিখিতভাবে জানালে তার সমাধান পাচ্ছেন।
সারাদেশের সব কর অঞ্চলে স্থাপিত ই-রিটার্ন হেল্প-ডেস্ক থেকে অফিস চলাকালীন সময়ে ই-রিটার্ন দাখিল বিষয়ক সব সেবা ও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। করদাতারা নিজ নিজ কর অঞ্চলে স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে অথবা টেলিফোনের মাধ্যমে ই-রিটার্ন দাখিল সংক্রান্ত যাবতীয় সেবা গ্রহণ করছেন। সব ব্যক্তি করদাতাদেরকে ই-রিটার্ন সিস্টেম ব্যবহার করে আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ২০২৫-২০২৬ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য বিনীত অনুরোধ জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
কেএন/টিকে