সৌদি প্রো লিগের ক্লাব আল হিলাল থেকে সান্তোসে পাড়ি জমান নেইমার জুনিয়র। দেশের ক্লাবে নিজেকে নতুন রূপে ফিরে পেতে সব ধরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। নেইমারের প্রচেষ্টা বলে দেয়, তিনি শতভাগ ফেরার পথেই!
             
        
ব্রাজিলিয়ান লিগে সবশেষ ফোর্তালেজার বিপক্ষে বদলি হিসেবে নামেন নেইমার। ম্যাচের ৬৭ মিনিটে সতীর্থ মিডফিল্ডার ভিক্টর হুগোর স্থানে মাঠে নামেন তিনি। সব মিলিয়ে ২৩ মিনিট খেলেছেন। এ সময় দুটি শট নিয়েছেন, তিনটি সুযোগ তৈরি করেছেন। চারবার ড্রিবলের চেষ্টা করে সফল হয়েছেন দুটিতে। পরিসংখ্যান যতই বলুক, চোখে পড়েছে নেইমারের আত্মবিশ্বাস।
বলের ওপর দারুণ নিয়ন্ত্রণ, নিখুঁত পাস, মাঝেমধ্যে ঝলমলে ছোঁয়া—সব মিলিয়ে মনে হয়েছে পুরোনো নেইমারই যেন ফিরেছেন। ফলে নতুন করে কথা হচ্ছে তাঁকে নিয়ে। তিনি সান্তোসে থাকবেন, নাকি ভিড়বেন নতুন কোনো ক্লাবে।
নেইমারের বয়স এখন ৩৩ বছর। বলা চলে, তার ইউরোপের রাস্তা অনেকটাই বন্ধ। সিরি এ লিগে ইন্তারের সঙ্গে একপ্রকার যোগাযোগ চলছে নেইমারের এজেন্টের। সেখানকার সুযোগ ফিফটি-ফিফটি। ফলে ঘুরে ফিরে একটাই নাম আসছে—ইন্টার মিয়ামিতে মেসির সঙ্গী হতে পারেন নেইমার।
লিওনেল মেসির সঙ্গে নেইমারের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। খেলেছেন লুইস সুয়ারেজের সঙ্গেও। বার্সেলোনা ও পিএসজিতে দারুণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল মেসির সঙ্গে। তাছাড়া এমএলএসে খেলার স্বপ্ন নাকি অনেক দিন ধরেই দেখছেন নেইমার। কারণ সেখানে জীবনযাপন সহজ, তার ওপর আছে খ্যাতি।
সের্জিও বুসকেতস এবং জর্দি আলবা শিগগিরই অবসর নিচ্ছেন। এক্ষেত্রে মেজর লিগ সকারের অন্যতম ক্লাবটির সুযোগ হবে নতুন প্লেয়ার কেনার। চারদিকে ফিসফিস, নেইমারকেই পছন্দ ক্লাবের। এর পেছনেও মেসি ও সুয়ারেজের আগ্রহ।
সাবেক যুক্তরাষ্ট্রের গোলকিপার ও ফুটবল বিশ্লেষক ব্রাড ফ্রিডেল বলেন, ‘নেইমারকে আনা একটি ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত হবে। এটি মূলত চুক্তি কিভাবে তৈরি করা হচ্ছে তার ওপর নির্ভর করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘লিজেন্ড খেলোয়াড়দের সঙ্গে চুক্তি করার সময় বাণিজ্যিক সুযোগ-সুবিধা এবং বেতন খরচ দুইটাকেই মাথায় রাখতে হয়।’
ঝুঁকিপূর্ণ মনে হলেও ফ্রিডেল মনে করেন, নেইমারকে ভিড়ালে খেলার বাইরেও লাভের সুযোগ থাকবে মিয়ামির। তিনি বলেন, ‘নেইমারের মতো লিজেন্ডকে আনার সময় বাণিজ্যিক দিক থেকে বড় সুযোগ থাকে—অর্থাৎ মাঠের বাইরে অনেক টাকা উপার্জন করা সম্ভব। তবে ক্রীড়াগত ঝুঁকি বেশি থাকে, বিশেষ করে যদি সে যদি চোটে পড়ে। আঘাত না হলে ঝুঁকি তার বয়স এবং অতীতের চোট এবং সে কতটা কার্যকরী খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে থাকতে পারবে, সেটির ওপর নির্ভর করবে।’
লুইস সুয়ারেজের বয়স বর্তমানে ৩৮। হাঁটুর চোটে ভুগছেন তিনি। প্রায়ই ছিটকে পড়েন। এমনও হতে পারে, মিয়ামি পরবর্তী সেশনে তাকে ছাড়তে পারে। সেটা হলে এমএসএনের স্বপ্ন পূরণ হবে না। নেইমার যে আগ্রহ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলে পা দেবেন, সেটা ভেস্তে যেতে পারে।
ফ্রিডেল বলেন, ‘এমএলএস হলো এমন একটি লিগ যা নেইমারের বর্তমান লেভেলের থেকে একটু নিচের। এখানে আরও কয়েক বছর খেলতে পারবে সে। লিওনেল মেসি যেমন খেলছে, নেইমারও তাই করতে পারবে।’
সবশেষ কোপা আমেরিকা ফাইনালে আর্জেন্টিনার কাছে হারের পর মেসিকে জড়িয়ে নেইমারের কান্নার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এরপর ড্রেসিংরুমেও একসঙ্গে আড্ডা দিতে দেখা যায় দুজনকে।
 
সুযোগ পেলেই মেসিকে প্রশংসায় ভাসান নেইমার। আর্জেন্টাইন অধিনায়ককে অসাধারণ মানুষ উল্লেখ করে নেইমার একবার বলেছেন, ‘সে অসাধারণ একজন মানুষ। মেসি আমার জন্য দারুণ এক আয়না, অসাধারণ একজন আদর্শ। আদর্শের পাশাপাশি সে আমার বন্ধুও। আমাদের প্রচুর আড্ডা হয়।’
আইকে/ টিএ