অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ অনিশ্চিত থাকা সত্ত্বেও বিচার বিভাগ সংস্কারে অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, বিগত ১৫ বছর ‘সাংবিধানিক বিচ্যুতি’র’ ফলে বিচার বিভাগের ওপর তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ন্যস্ত হয়েছে। এই তিনটি গুরুদায়িত্ব হচ্ছে সংবিধানের প্রতি জনগণের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, অন্তর্বর্তী সরকারের আইনগত ভিত্তিকে সহায়তা করা এবং বিচার বিভাগের স্বায়ত্তশাসন পুনরুদ্ধার করা।
গত সোমবার ‘পরিবর্তনশীল প্রেক্ষাপটে আইনশাস্ত্র, বিনিময়’ শীর্ষক এক কর্মশালায় বিচার বিভাগের প্রধান এসব কথা বলেন।
গত বছর আগস্টে প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
এরপর তিনি বিচার বিভাগ সংস্কারের রূপরেখা ঘোষণা করেন। সেই রূপরেখা বাস্তবায়নের কাজ করে যাচ্ছেন উল্লেখ করে বিচার বিভাগের প্রধান বলেন, ‘ঐতিহাসিক রায়, অধ্যাদেশ ও নীতিগত সমন্বয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানবাদকে (কনস্টিটিউশনালিজম) পুনরুজ্জীবিত করেছে।’
তিনি বলেন, গত ১৬ মাসের মান নির্ধারক ন্যায়বিচারের দৃষ্টান্ত ভবিষ্যতের যেকোনো সরকার অনুসরণ করতে পারবে।
বিচার বিভাগীয় পারস্পরিক কূটনীতি শক্তিশালী করার পাশাপাশি পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিচার বিভাগের সংস্কারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার আহবান জানান প্রধান বিচারপতি।
কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ সফরে আসা নেপালের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ মান সিং রাউত এবং নেপালের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশের বিচার বিভাগে চলমান সংস্কার কার্যক্রমের অভিজ্ঞতা নিতে গত ১ নভেম্বর বাংলাদেশ সফরে আসেন নেপালের প্রধান বিচারপতি। গত ২ নভেম্বর তিনি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের এজলাসে বসে বিচারকাজ দেখন। পরে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেন।
গত সোমবার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে সুপ্রিম কোর্ট বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন সুপ্রিম কোর্ট রিপোর্টার্স ফোরাম (এসআরএফ) ও ল রিপোর্টার্স ফোরাম (এলআরএফ) নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সেখানে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কারের রূপরেখা বাস্তবায়নে গণমাধ্যম কিভাবে ভূমিকা পালন করছে, সে বিষয়ে নেপালের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেন সাংবাদিক নেতারা। এরপর ‘পরিবর্তনশীল প্রেক্ষাপটে আইনশাস্ত্র, বিনিময়’ শীর্ষক কর্মশালায় বাংলাদেশ ও নেপালের প্রধান বিচারপতি অংশ নেন বলে মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান সুপ্রিম কোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম।
নেপালের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সফরসঙ্গী হয়ে এসেছিলেন বিচারপতি স্বপ্না প্রধান মাল্লা, বিচারপতি বিনোদ শর্মা এবং নেপাল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান রেজিস্ট্রার বিমল পৌডেল। গতকাল বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তারা ঢাকা ত্যাগ করেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এমকে/এসএন