পটুয়াখালী-৩ (দশমিনা-গলাচিপা) আসনে বিএনপির মনোনয়ন স্থগিত থাকায় তৈরি হয়েছে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ। এতে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ, হতাশা ও নানা গুঞ্জন। স্বাধীনতার পর এই আসনটি দখলে নেওয়ার সুযোগ এসেছে বলে মনে করছিলেন নেতাকর্মীরা। হঠাৎ মনোনয়ন স্থগিতের সিদ্ধান্তে তাদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
সাধারণ ভোটারদের ধারণা, গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি নুরুল হক নুরকে আসনটি ছাড়ার কৌশল হিসাবেই বিএনপি আপাতত মনোনয়ন স্থগিত রেখেছে। এরই মধ্যে সাবেক সংসদ-সদস্য গোলাম মাওলা রনির ছোট ভাই গোলাম জিলানি জিল্লু নিজের ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, প্রিয় গলাচিপা-দশমিনাবাসী, আপনারা ধৈর্য ধরুন, ভালো কিছু হবে ইনশাআল্লাহ। এই রহস্যময় পোস্ট ঘিরে নতুন করে জল্পনা-কল্পনা ও মেরুকরণ শুরু হয়েছে পটুয়াখালী-৩ আসনের রাজনৈতিক অঙ্গনে। বিএনপি ঘোষিত ২৩৭টি আসনের তালিকায় পটুয়াখালী-৩ না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নেতাকর্মীরা। এই আসনে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন।
দশমিনা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম শানু সিকদার বলেন, হাসান মামুন দুই যুগ ধরে শ্রম ও ত্যাগে আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসাবে পরিচিত দশমিনা-গলাচিপায় বিএনপিকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নিয়ে গেছেন। তার বিকল্প ভাবা কঠিন। দলের বাইরে কাউকে চাপিয়ে দিলে আমরা তা মেনে নেব না। অন্যদিকে গণঅধিকার পরিষদের দশমিনা উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মিলন মিয়া বলেন, নুরুল হক নুর পটুয়াখালী-৩ আসনে প্রার্থী হচ্ছেন। বিএনপির সঙ্গে জোট গঠনের আলোচনা চলছে। জোট না হলেও তিনি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নেবেন। এদিকে গোলাম জিলানি জিল্লুর পোস্ট ঘিরে রহস্য আরও ঘনীভূত হয়েছে গলাচিপা ও দশমিনায়। অনেকেই ধারণা করছেন, সাবেক সংসদ-সদস্য গোলাম মাওলা রনি বিএনপির মনোনয়ন না পেলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে ভোটে অংশ নিতে পারেন।
রনির ছোট ভাই জিল্লুর বলেন, বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে আমার ভাই অতটা আগ্রহী নন, তবে নির্বাচনের পরিবেশ অনুকূলে থাকলে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে অংশ নিতে পারেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পটুয়াখালী-৩ আসনে এখন তিন দিকের টানাপোড়েন চলছে-বিএনপি, গণঅধিকার পরিষদ ও গোলাম মাওলা রনি, যা নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে বড় ধরনের চমক সৃষ্টি করতে পারে বলে এলাকার সাধারণ মানুষের অভিমত।
ইউটি/টিএ