নরসিংদী সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, সহিংসতা ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতির তৈরি হওয়ায় ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) রাতে দলীয় প্যাডে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে কমিটি বিলুপ্তির সিদ্ধান্ত জানানো হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নরসিংদী সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া, সাংগঠনিক স্থবিরতা, অন্তর্দ্বন্দ্ব, সমন্বয়ের অভাব এবং ইউনিয়নে অস্থির পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যর্থতার দায়ে বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। শিগগিরই সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে নতুন কমিটি গঠন করা হবে।
নরসিংদী সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন বলেন, আলোকবালীতে শৃঙ্খলা রক্ষা করতে ব্যর্থ হওয়ায় ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, আধিপত্য বিস্তার, বালু উত্তোলন, চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্ব নিয়ে ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক শাহ আলম চৌধুরী এবং শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বহিষ্কৃত সদস্য সচিব আব্দুল কাইয়ুম মিয়ার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। তারা পৃথক গ্রুপ গঠন করে দলীয় কর্মসূচিতেও অংশ নিচ্ছেন।
স্থানীয়দের দাবি উভয় গ্রুপের পেছনে আওয়ামী লীগ সম্পৃক্ত প্রভাবশালী ব্যক্তিরাও ভূমিকা রাখছেন। উল্লেখ্য, আলোকবালীতে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গত দেড় মাসে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। গত ১৮ সেপ্টেম্বর মুরাদনগর গ্রামে সংঘর্ষে বিএনপি কর্মী ইদন মিয়া (৫৫) নিহত হন এবং ১০ জন গুলিবিদ্ধ হন। ১৯ সেপ্টেম্বর বীরগাঁও গ্রামে ফেরদৌসী বেগম (৪৫) গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনার পর কাইয়ুম মিয়ার সমর্থকরা বাখরনগর, মুরাদনগর, বকশালীপুর ও বীরগাঁও গ্রাম থেকে এলাকা ছাড়া হন। ২৯ সেপ্টেম্বর চারটি গ্রাম পুনর্দখলে যাওয়ার সময় দু’পক্ষের সংঘর্ষে ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাদেক মিয়া (৪২) নিহত হন এবং অন্তত ১০ জন গুলিবিদ্ধ হন।
এছাড়া ৪ নভেম্বর ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কবির হোসেনকে কুপিয়ে জখম করা হয়। সহিংসতার ধারাবাহিকতায় বকশালীপুর গ্রামের কামাল মিয়ার বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।এ ঘটনায় ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলামসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এসব ঘটনায় মোট ৫টি মামলা হয়েছে এবং আওয়ামী লীগ সম্পৃক্ত দুইজন সাংগঠনিক সম্পাদকসহ কমপক্ষে ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছ।
এসএস/টিএ