জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, গণভোটের দাবি কোনো রাজনৈতিক দলের চাপের মুখে উপেক্ষা করলে জাতীয় নির্বাচন সংকটের মুখে পড়তে পারে। তাই অবিলম্বে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করতে হবে এবং গণভোটের তারিখ ঘোষণা করতে হবে।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় খুলনার ফুলতলা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের উদ্যোগে যুগ্নীপাশায় ভোটার সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, নোট অব ডিসেন্ট বিএনপি ছাড়াও অন্যান্য দলেরও আছে। ফলে ঐক্যমত্য কমিশন গণভোটের জন্য যেভাবে জুলাই জাতীয় সনদের প্রস্তাবনা তৈরি করেছে, সেটিকে চূড়ান্ত করে গণভোটের প্রস্তাবনা তৈরি করতে হবে। সেখানে কোনো নোট অব ডিসেন্ট যুক্ত হবে না, এটিই হচ্ছে গণদাবি। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংকট নিরসনে পারস্পরিক আলোচনার প্রস্তাবকে জামায়াতে ইসলামী স্বাগত জানিয়েছে। জামায়াতে ইসলামী ইতোপূর্বে বিএনপিসহ সকল দলকে আলোচনায় বসে রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সংশ্লিষ্ট প্রস্তাব একমত হওয়ার ব্যাপারে আগেই প্রস্তাব দিয়েছে। তবে এ ব্যাপারে সরকারকেই মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করতে হবে। জামায়াতে ইসলামী সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তুত আছে।
তিনি আরও বলেন, সময় ক্রমশই ফুরিয়ে যাচ্ছে। ফলে তফসিল ঘোষণার আগেই গণভোটের তফসিল ঘোষণা হওয়া জরুরি, এটিই হচ্ছে গণদাবি। জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনে সকল রাজনৈতিক দলের মধ্যে যেসব সংস্কার বিষয়ে একমত প্রতিষ্ঠা হয়েছে। জুলাই সনদে স্বাক্ষরকারী দলসমূহের সেইসব বিষয়ে এখন ভিন্নমত পোষণ করা অথবা নোট অব ডিসেন্টকে গণভোটে যুক্ত করার দাবি হচ্ছে অন্যায় দাবি। এগুলো পরিহার করে জাতীয় স্বার্থে, জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার স্বার্থে অবিলম্বে নোট অব ডিসেন্ট ছাড়াই গণভোটের প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন এবং জাতীয় নির্বাচনের আগেই গণভোটের তারিখ ঘোষণা জরুরি।
তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী সরকারের ঘোষিত জাতীয় নির্বাচনের ডেডলাইন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে অংশ নিতে প্রস্তুত। এজন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড, গণহত্যাকারীদের বিচার, ফ্যাসিস্টের দোসরদের বিচার নিশ্চিত করারও দাবি জানান।
তিনি বলেন, ২৪-এর গণআন্দোলনের ছাত্র-জনতার যুদ্ধ ছিল ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে। আর আমাদের দ্বিতীয় যুদ্ধ হলো দুর্নীতির বিরুদ্ধে। সেই দ্বিতীয় যুদ্ধে ছাত্র-জনতাকে জাতীয় সংসদের নির্বাচনের মাধ্যমে ইসলামের পক্ষের শক্তিকে পাঠাতে হবে। জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্রের দায়িত্ব পেলে প্রথম কাজ হবে বিদ্যমান শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন এনে এমন ব্যবস্থা চালু করা, যাতে সবার শিক্ষা নিশ্চিত হয়। দ্বিতীয় কাজ হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা এবং বৈষম্যমুক্ত সমাজ গঠন।
সৈয়দ আবু জাফরের সভাপতিত্বে ও শেখ জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি গাউসুল আজম হাদী, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য শেখ সিরাজুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট আবু ইউসুফ মোল্লা, ফুলতলা উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আব্দুল আলীম মোল্লা, সেক্রেটারি মাওলানা সাইফুল হাসান, জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহ-সভাপতি আলী আকবর মোড়ল, উপজেলা কর্মপরিষদ সদস্য ড. আজিজুল হক, ছাত্রশিবিরের খুলনা জেলা উত্তরের এইচ আরডি সম্পাদক হুসাইন আহম্মেদ, জেলা পাঠাগার সম্পাদক বোরহান হোসেন, ফুলতলা থানা সভাপতি আব্দুর রহীম, ফুলতলা ইউনিয়ন জামায়াত আমির মফিজুল ইসলাম, ইউনিয়ন সেক্রেটারি হাফেজ আল আমীন প্রমুখ।
ইউটি/টিএ