প্রতারণা ও বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে সরকারি জমিতে নির্মিত ফ্লোর স্পেস ক্রয়-বিক্রয়ের নামে ২২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক দুই ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ডেভেলপারসহ আট জনের বিরুদ্ধে পৃথক তিন মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (১০ নভেম্বর) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মো. রুহুল হক বাদী হয়ে মামলাগুলো দায়ের করেন। দুদকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রথম মামলায় অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে। ওই মামলায় সরকারি জমির উপর ত্রুটিপূর্ণ ফ্লোর স্পেস ক্রয়-বিক্রয়ের নামে প্রতারণা ও আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন— আলমপনা বিল্ডার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মো. আসাদ, অগ্রণী ব্যাংক পিএলসির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও, সৈয়দ আব্দুল হামিদ, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শামস-উল ইসলাম, সাবেক মহাব্যবস্থাপক আবুল বাশার সেরনিয়াবাত, সাবেক উপ-মহাব্যবস্থাপক সাধন চন্দ্র মন্ডল ও সাবেক সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা ও বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে সরকারি জমিতে নির্মিত ফ্লোর স্পেস ক্রয়-বিক্রয়ের নামে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তারা বাংলাদেশ ব্যাংক ও অগ্রণী ব্যাংকের নীতিমালা অমান্য করে নিজেদের আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন।
দ্বিতীয় মামলায়ও অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় প্রতারণা, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ৭ কোটি ২০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। আসামিরা হলেন— আলমপনা বিল্ডার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আসাদ, অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আব্দুল হামিদ, সাবেক মহাব্যবস্থাপক আবুল বাশার সেরনিয়াবাত, সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আওলাদ হোসেন, সাবেক উপ-মহাব্যবস্থাপক সাধন চন্দ্র মণ্ডল ও সাবেক সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন।
এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ব্যাংকের নীতিমালা অমান্য করে প্রতারণা ও জাল কাগজ সৃষ্টিপূর্বক তা খাঁটি হিসেবে ব্যবহার করেন। নিজেদের আর্থিকভাবে লাভবান করার উদ্দেশ্যে তারা ক্ষমতার অপব্যবহার, বিশ্বাসভঙ্গ ও অপরাধমূলক অসদাচরণে জড়িত হন এবং ব্যাংক থেকে ৭ কোটি ২০ লাখ টাকা অবৈধভাবে উত্তোলনপূর্বক আত্মসাৎ করেন।
তৃতীয় মামলায় ১৪ কোটি টাকা আত্মসাতে ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। ব্যাংকের সাবেক আট কর্মকর্তাসহ এক ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানের এমডির বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক।
মামলার আসামিরা হলেন— আলমপনা বিল্ডার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আসাদ, অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আব্দুল হামিদ, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শামস-উল ইসলাম, সাবেক মহাব্যবস্থাপক আবুল বাশার সেরনিয়াবাত, সাবেক মহাব্যবস্থাপক মো. দেলোয়ার হোসেন, সাবেক উপ-মহাব্যবস্থাপক সাধন চন্দ্র মন্ডল, সাবেক সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন এবং সাবেক সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মোহাম্মদ আব্দুল খালেক। তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়।
আইকে/টিএ