সাফল্যে ভরপুর ফুটবল ক্যারিয়ারে বহু দলের বিপক্ষে গোল করেছেন লিওনেল মেসি। গোল করার পর স্বভাবসুলভ উদযাপনও করেছেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। কখনো কখনো সেই উদযাপন হয়েছে বাধঁভাঙাও। তবে একটি ক্লাবের বিপক্ষে মেসিকে থেমে যেতে হয়েছে। প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়ে উল্টো ক্ষমা চেয়েছেন ইন্টার মায়ামির তারকা ফুটবলার।
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘স্পোর্টকে’ দেওয়া দীর্ঘ এক সাক্ষাৎকারে ফুটবল ক্যারিয়ারে নানান বিষয় নিয়ে মন খুলে কথা বলেন মেসি। কোনো এক প্রসঙ্গে ক্যারিয়ারের আবেগঘণ এক মুহূর্তের স্মৃতিচারণ করেন রেকর্ড আটবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী।
ঘটনা ২০১৫ সালের। প্রায় এক দশক আগে বার্সেলোনার হয়ে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলতে নেমেছেন লাজুক আর বিনয়ী স্বভাবের মেসি। ফাইনালে আর্জেন্টিনার ক্লাব রিভার প্লেটের বিপক্ষে ৩-০ গোলে জেতে মেসিরা। জোড়া গোল করেন লুইস সুয়ারেজ।
সেই ম্যাচের ৩৬ মিনিটে প্রথম গোলটি আসে মেসির নৈপুণ্যেই। গোল করার পর আকাশের দিকে ইশারা করে যথেষ্ট শান্তভাবেই উদযাপন করেন মেসি। স্বদেশী ক্লাবের বিপক্ষে গোল করার পর কেন চিরচেনা উদযাপন করেননি ‘এলএম টেন’?
জাপানে অনুষ্ঠিত ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচে রিভার প্লেটের প্রায় ১৬০০০ সমর্থক উপস্থিত হয়। মূলত আর্জেন্টাইন মহাতারকার স্বদেশী সমর্থকরা দীর্ঘ যাত্রা করে হারের পর হতাশার নিয়ে ঘরে ফিরবে, সেটা খানিকটা মেসির মনে পীড়া দেয়। তাইতো বিনয়ী মেসি উদযাপন থেকেই নিজেকে দমিয়ে রাখেন।
সেই ঘটনা শোনা যাক মেসির মুখ থেকেই, ‘আমি জানি কতটা পরিশ্রম করেছেন সেসব ভক্তরা এই সফর করেছিল এবং তারা কতটা রোমাঞ্চিত ছিল। আর তখন আমি, একজন আর্জেন্টাইন, প্রথম গোল করে তাদের সব উদ্দীপনা নষ্ট করলাম। আমি জানি না আমি সত্যিই ক্ষমা চেয়েছিলাম কিনা, তবে এটা এক ধরনের ক্ষমা প্রদর্শনের মতোই ছিল।’
অবশ্য মেসির এমন আচারণের পরও রিভার প্লেটের কিছু সমর্থকদের উগ্রতা থেকে বাঁচতে পারেননি। ম্যাচ শেষে টোকিও বিমানবন্দর থেকে ক্লাবটির সমর্থকরা মেসির উপর ক্ষোভ ঝাড়ে। পরে এমন ঘটনার জন্য আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়ে ক্ষমা চায় রিভার প্লেট। মেসি তাঁর ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন রিভারের প্রতিদ্বন্দ্বী নিউয়েলস ওল্ড বয়সের যুব দলের হয়ে। কিন্তু আর্জেন্টিনায় কখনো পেশাদার হিসেবে খেলেননি তিনি।
ইন্টার মায়ামির প্রাণভোমরা ভবিষ্যতে আর্জেন্টিনায় ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনার কথাও বলেন, ‘আমাকে খুবই ছোট বয়সে দেশ ছেড়ে যেতে হয়েছে, আর তাই আর্জেন্টিনায় খেলাটা সম্ভব হয়নি। আমাকে ইউরোপে যেতে হয়েছে, বার্সেলোনার সঙ্গে শুরু করতে হয়েছে এবং সেখানেই কেরিয়ার গড়তে হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে একদিন আর্জেন্টিনিয়ান ফুটবলে ফিরে যেতে চাই। তারপর কি হবে, তা কেবল ঈশ্বরই জানেন।’