অভিবাসন নিয়ে নিজের পূর্বের কঠোর অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য দক্ষ বিদেশি কর্মী প্রয়োজন।
ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি মন্তব্য করেন, নির্দিষ্ট কিছু কাজের ক্ষেত্রে মার্কিনিদের যোগ্যতার ঘাটতি রয়েছে।
ট্রাম্পের মতে, দীর্ঘদিন ধরে বেকার থাকা আমেরিকানদের বিশেষায়িত কাজের জন্য উপযুক্ত করে তোলা কঠিন। বিশেষ করে প্রতিরক্ষার মতো সংবেদনশীল ক্ষেত্রে অদক্ষ কর্মীদের নিয়োগ দিলে তা দেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এই কারণেই তিনি এইচ-১বি ভিসার মাধ্যমে বিদেশি মেধাবীদের যুক্তরাষ্ট্রে আনার পক্ষে মত দিয়েছেন।
সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী লরা ইনগ্রাহাম যখন বলেন যে, 'আমাদের প্রচুর প্রতিভা আছে', ট্রাম্প তার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। প্রেসিডেন্ট বলেন, 'না, আমাদের মোটেও নেই। আমাদের নির্দিষ্ট কিছু প্রতিভার অভাব আছে।' তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, 'আপনি বেকার তালিকা থেকে কাউকে তুলে এনে বলতে পারেন না যে, আমি তোমাকে কারখানায় পাঠাচ্ছি, আমরা মিসাইল তৈরি করবো।'
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্যের ফলে অভিবাসী ছাত্রদের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সুযোগ আবার বাড়তে পারে। ট্রাম্পের এই বক্তব্য এমন এক সময়ে এলো যখন তার প্রশাসন অভিবাসনের বিরুদ্ধে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে।
গত সেপ্টেম্বরে ট্রাম্প প্রশাসন নতুন এইচ-১বি ভিসা আবেদনের ওপর এক লাখ ডলারের বিশাল ফি আরোপ করে, যা অনেককে হতাশ করেছিল। ধারণা করা হচ্ছে, নতুন এই মন্তব্যের পর সেই ফি কমানো হতে পারে। এইচ-১বি এমন একটি ভিসা, যার মাধ্যমে মার্কিন সংস্থাগুলো বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন বিদেশি কর্মীদের নিয়োগ দিতে পারে।
তবে ট্রাম্পের এই বক্তব্যের সঙ্গে তার প্রশাসনের সাম্প্রতিক কিছু পদক্ষেপের বৈপরীত্য দেখা যাচ্ছে। গত সপ্তাহেই মার্কিন শ্রম বিভাগ এইচ-১বি ভিসার অপব্যবহার নিয়ে 'প্রজেক্ট ফায়ারওয়াল' নামে ১৭৫টি তদন্ত শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, এই ধরনের তদন্ত মেধাবীদের যুক্তরাষ্ট্রে আসতে নিরুৎসাহিত করবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ব্যাপক অভিবাসন দমন অভিযান শুরু করেন। তবে দক্ষ কর্মী নিয়ে তার এই সাম্প্রতিক মন্তব্যকে অনেকে অভিবাসন বিষয়ে তার আগ্রাসী অবস্থান থেকে কিছুটা নমনীয় হওয়ার ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন।
সূত্র: সিএনএন
আইকে/টিএ