বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, সবাইকে চোখ–কান খোলা রাখতে হবে এবং নির্বাচনের কর্মসূচি পরিপূর্ণভাবে পালন করতে হবে। জনগণের কাছে পৌঁছাতে হবে, দুয়ারে দুয়ারে যোগাযোগ করতে হবে, মা–বোনদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে হবে এবং ধানের শীষের জোয়ার পুরো দেশে বাস্তবায়ন করতে হবে।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) চট্টগ্রামের বাঁশখালীর জলদি পাইলট হাই স্কুল মাঠে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। স্মরণসভায় অংশ নেওয়ার আগে নেতারা বাঁশখালীর গুণাগরিতে মরহুম জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর কবর জিয়ারত, পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া–মোনাজাত করেন।
আমীর খসরু বলেন, বিগত দিনের পরাজিত শক্তি কখনোই নির্বাচনে জিততে পারবে না। তাই তারা নির্বাচন বিলম্বিত করতে চাইছে এবং দেশের মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য জনগণের ১৭ বছরের ত্যাগকে বাধাগ্রস্ত করছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা আগামীর নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। জনগণের চাহিদা পূরণ, শিক্ষা–স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে আমাদের লক্ষ্য স্পষ্ট।
দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য স্বাস্থ্যসেবা বিনামূল্যে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী দিনে স্বাস্থ্যসেবার জন্য পরিবারের পকেট থেকে আর টাকা খরচ করতে হবে না। সবার জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা বিনামূল্যে প্রদান করা হবে, কারিগরি শিক্ষা দেওয়া হবে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে এবং সকলের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা হবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, কারিগরি শিক্ষার অভাবে দেশের অনেক শ্রমিক নিম্নমানের চাকরিতে নিয়োজিত। আমরা তাদের দক্ষতা বাড়িয়ে ভবিষ্যতে আয়ের পরিমাণ বহুগুণ বৃদ্ধি করবো, ইনশাআল্লাহ।
আমীর খসরু বলেন, দেশের প্রতিটি মানুষকে অর্থনীতির সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুফল ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে। বিগত দিনে যে গোষ্ঠী লুটপাট করেছে, আমরা তা বন্ধ করে দেব। আগামীতে দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের সুফল সবার কাছে পৌঁছে যাবে। তিনি বলেন, তারেক রহমান দেশ পরিচালনায় একটি বিস্তৃত কর্মসূচি দিয়েছেন। প্রত্যেক মানুষ যাতে দেশের উন্নয়নের অংশীদার হতে পারে, সে লক্ষ্যেই বাংলাদেশ পরিচালিত হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচিত সরকার ছাড়া কোনো দেশ চলতে পারে না। ১৪ মাস ধরে একটি অনির্বাচিত সরকারের অধীনে বাংলাদেশ চলছে। ফলে সবকিছু স্থবির হয়ে গেছে, মিল–কারখানা বন্ধ, অর্থনীতি নিম্নমুখী, বিনিয়োগ বন্ধ—এবং প্রতিদিন পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। তাই ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই নির্বাচন সম্পন্ন করে দেশে একটি নির্বাচিত সংসদ ও সরকার গঠন করতে হবে, যা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে।
তিনি আরও বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে ধানের শীষের বিজয় হলে আগামীর দেশের যে সুফল জনগণের কাছে পৌঁছাতে পারেননি, তা বাস্তবায়ন করা হবে। বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা সংস্কারের যে অঙ্গীকার করেছে, তা পরিপূর্ণভাবে পালন করা হবে।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও মরহুম জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর সন্তান জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় প্রধান বক্তার বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য করেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ ইদ্রিস মিয়া।
এবি/টিকে