পুরান বৌ নতুন শাড়ীতে প্রদর্শনের প্রয়োজন নেই: চরমোনাই পীর

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, বিদেশিদের প্রেসক্রিপশনে এই বাংলাদেশের মানুষ চলতে চায় না, এদেশের স্বাধীনতার ৫৩ বছরের অতিক্রমের পরেও মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় নাই। এদেশের মানুষ ইসলামকে ক্ষমতায় দেখতে চায়, তাই জুলাই সনদের বাস্তবায়নের মধ্যে দিয়েই আগামীর জাতীয় নির্বাচনে লক্ষ্মীপুরের ৪টি আসনেও হাতপাখার প্রার্থীদের বিজয় করে ক্ষমতায় নেওয়ার আহবান জানান তিনি।

শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) দলটির জেলা শাখার আয়োজনে লক্ষ্মীপুর লিল্লাহ মসজিদ মাঠে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর দলীয় কোন প্রতিনিধি এখন পর্যন্ত সংসদে যায় নাই। আসলে বাস্তবতা হলো সুযোগ অনেক ছিল। বিগত সময়ে হাসিনা সরকার অনেকবার চেষ্টা করেছে আমাদেরকে নেয়ার জন্য,সর্বশেষ বিরোধীদল হবার জন্য প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু এমপি-মন্ত্রী আর প্রভাবের জন্য ইসলামী আন্দোলন রাজনীতি করেনা। ইসলামী আন্দোলন রাজনীতি করে এবাদতের উদ্দেশ্য আল্লাহ্ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের জন্য।

চরমোনাই পীর বলেন,আমরা বিগত দিনে দুনিয়াবি যেসব দল সরকারে এসেছে তাদের সাথে একাত্ম না হওয়ার কারন হলো আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনের ঘোষিত সেই হুকুমত পালন করার জন্য। আল্লাহ্ বলেন,তোমরা ভাল কাজের বা ভাল লোকের সঙ্গ নাও আর খারাপ সঙ্গ থেকে দূরে থাক। যার এই ৫৩ বছর দেশ পরিচালনা করেছিল তাদের আমরা দেখেছি,এই দেশটাকে দূর্নীতিতে তারা একবার দুইবার নয় পাঁচবার তামাম দুনিয়াতে এক নাম্বার বানিয়েছিল। বিএনপি কয়েকবার দূর্নীতির দিক থেকে ফাস্ট আওয়ামীলীগও দূর্নীতির দিক থেকে ফাস্ট।

এদের পরিচালনা আমরা দেখেছি হাজার হাজার মায়ের সন্তানকে পাখীর মতো গুলি করে রাস্তায় ফেলে রেখেছে। এরা বেগম পাড়ায় হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে আমরা দেখেছি। টাকা কামাই করি আমরা,আর পাচার করে ওরা। লক্ষ লক্ষ মানুষকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে তাদেী সংসার বিলীন করেছে। এসব কাজগুলো অবশ্যই খারাপ কাজ। তাই এদের ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে আমরা ব্যাবহার হতে পারিনা।

এজন্য বহু ঘাত-প্রতিঘাতের পরে আল্লাহ্ তায়ালা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশকে আজ দেশের মাটিতে মাথা উঁচু করে সম্মানের সহিত দাঁড়ানোর সুযোগ করে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন,আপনারা দেখেছেন ৫৩ বছর যে জুলুম-নির্যাতন-আয়নাঘর-চাঁদাবাজির মাধ্যমে তারা দেশ পরিচালনা করেছে। আজ ২৪শের পর আমাদের দেশটাকে সুন্দর করে সাজিয়ে গড়ে তোলার সুযোগ এসেছে। ইসলামকে ক্ষমতায় নেওয়ার একটা পরিবেশ তৈরী হয়েছে। আর লক্ষ্মীপুর-নোয়াখালী সহ এদেশের বেশীরভাগ মাটি ইসলামের জন্য খাঁটি।

এখন আপনাদের দোয়ায় আমরা যেন আর বিদেশীদের দালালাী,তাদের প্রেসক্রিপশনে গোলামীর জিঞ্জিরায় যেন চলতে না হয় সেজন্য একটা সুযোগ এসেছে ৫ই আগস্টের পর। আমি প্রতিদিন খবরে পড়ি একটি দলের চাঁদাবাজি থেকে একজন পান দোকানদারও রেহাই পায়নাই। আজকে যদি এই জালেমদের থেকে, চাঁদাবাজ থেকে,টেন্ডারবাজ থেকে এবং বিদেশী তাবেদার থেকে আমাদের দেশটাকে মুক্ত করতে হয়,তাহলে আমরা যারা দেশ প্রেমিক, ইসলাম প্রেমিক, মানবতা প্রেমিক তারা সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদেশ থেকে ক্ষমতা প্রেমিকদের উৎখাত করতে হবে।

অনারারী ক্যাপ্টেন(অব:) মুহাম্মদ ইব্রাহিম এর সভাপতিত্বে ও মাওলানা ইউসুফ আল মাহমুদ এর সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওঃ ইমতিয়াজ আলম, ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় দাওয়াহ ও প্রশিক্ষন সম্পাদক আ হ ম আলাউদ্দিন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় এসিসট্যান্ট সেক্রেটারি ইমরান হোসাইন নুর, জেলা সহ-সভাপতি মাওঃ দেলাওয়ার হোসাইন, মাওঃ মহিউদ্দিন, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন লক্ষ্মীপুর জেলার সভাপতি ডাঃ নাছির আহমেদ, যুব আন্দোলন জেলা সভাপতি মাওঃ মোখলেসুর রহমান, ছাত্র আন্দোলন জেলা সভাপতি মুহাঃ ইউনুস খাঁন, লক্ষ্মীপুর-১ থেকে দলীয় সংসদ সদস্য প্রার্থী জাকির হোসেন পাটোয়ারী,লক্ষ্মীপুর-২ এর প্রার্থী মাওলানা মুহাম্মদ হেলাল উদ্দিন,লক্ষ্মীপুর-৪ এর প্রার্থী মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ,ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ এর এ্যাসিন্টান্ট সেক্রেটারী মুহাম্মদ ইমরান হোসাইন নূর প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

কেএন/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
‘সরকার পতনের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের হাত ছিল না’, সিএনএন-নিউজ এইটিনকে হাসিনা Nov 15, 2025
img
একটি দল ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে জান্নাতের টিকিট বিক্রি করছে : জসিম উদ্দিন Nov 15, 2025
img
শুরু হলো ফারিণের জীবনের নতুন অধ্যায়! Nov 15, 2025
img
জীবনটাই এক ধরণের ‘ছেড়ে দেওয়ার’ অনুশীলন: ইরফান খান Nov 15, 2025
img
ইতিহাস বিকৃতি এই দেশের মানুষ কখনো মেনে নেবে না : সোহেল তাজ Nov 15, 2025
img
রাজনীতিতে স্বচ্ছতা না থাকলে নানা সংশয় তৈরি হয়: জিল্লুর রহমান Nov 15, 2025
img
পরিবার শুধু রক্তের সম্পর্ক নয়: সিদ্ধার্থ মালহোত্রা Nov 15, 2025
img
ভালোবাসার আসল রূপ ছোট ছোট যত্নের মধ্যে: আনুশকা শর্মা Nov 15, 2025
img
ধানমণ্ডিতে মারধরের শিকার সেই নারী গ্রেপ্তার Nov 15, 2025
img
বিহার জয়ের পর এবার পশ্চিমবঙ্গ দখলের ইঙ্গিত মোদীর Nov 15, 2025
img
জীবনের ১ম নায়িকা মা: বোমান ইরানি Nov 15, 2025
img
১৬ বছর পর রাজস্থান রয়্যালসে জাদেজা Nov 15, 2025
img
শেষ পর্যন্ত ১ম টেস্ট থেকে ছিটকে গেলেন জশ হ্যাজলউড Nov 15, 2025
img
বাংলাদেশে বেড়েছে ইন্টারনেট ব্যবহারের স্বাধীনতা : ফ্রিডম হাউসের প্রতিবেদন Nov 15, 2025
img
আবার বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের উৎপাদন বাড়তে পারে Nov 15, 2025
img
মন্টি আপুর সাথে সম্পর্ক নিয়ে তো প্রশ্ন উঠে না, জাহানারার উদ্দেশে জ্যোতি Nov 15, 2025
img
নির্বাচনী ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে: নিয়াজ খান Nov 15, 2025
img
সাভারে যুবলীগের ২ নেতা আটক Nov 15, 2025
img
হোয়াটসঅ্যাপে আসছে থার্ড-পার্টি চ্যাট সুবিধা Nov 15, 2025
img
আওয়ামী লীগ নেতার কবর জিয়ারত করলেন বিএনপির এমপি প্রার্থী Nov 15, 2025