তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোনো পরিষদ নয়, বরং এটি দেশের সব রাজনৈতিক দলের সমর্থনের ওপর ভিত্তি করে গঠিত হয়েছিল। শনিবার (১৫ই নভেম্বর) রাজধানীর বিস অডিটরিয়ামে 'উইমেন ইন ডেমোক্রেসি' আয়োজিত একটি গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এই মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, যদিও অনেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে একটি প্রকৃত সরকার হিসেবে মনে করেন না, তবুও সব দলের সমর্থন থাকার কারণে যেকোনো সমস্যার সমাধান করা সম্ভব ছিল।
সরকারের চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে তিনি অভিযোগ করেন, প্রশাসন গঠনের পর প্রথম আট মাস বিভিন্ন আন্দোলন ও সংকট মোকাবেলায় ব্যস্ত থাকতে হয়েছে। এরপর ঈদের পর থেকে পুরোনো প্রশাসনিক কাঠামো পুনরায় প্রভাব বিস্তার শুরু করে। মাহফুজ আলমের মতে, অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান বেশ নাজুক বা 'দোলাচলপূর্ণ'; একদিকে হেলে পড়লে অন্যদিকেও তার প্রভাব পড়ে। এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলোরও দায়িত্ব রয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
দায়বদ্ধতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকারের সাফল্যের চেয়ে ব্যর্থতার দায়ভার মূলত তাদের ওপরই বর্তায়, যাদের ওপর আস্থা রেখে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তাই তিনি সকলের ভূমিকা পর্যালোচনা করে সম্মিলিতভাবে সমাধানের পথ খোঁজার আহ্বান জানান।
আলোচনায় নারী নিরাপত্তা এবং সাইবার বুলিংয়ের প্রসঙ্গ উঠলে তথ্য উপদেষ্টা এর জন্য সমাজের অনড় মানসিকতা এবং নেতিবাচক রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে দায়ী করেন। তিনি দাবি করেন, রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে ফ্যাসিবাদ নির্মূল করা গেলেও সামাজিক স্তরে যে ফ্যাসিবাদ রয়ে গেছে, তা এখনো দূর করা যায়নি। তিনি আরও বলেন, সামাজিক বুলিংয়ের মতো সমস্যার সমাধান কেবল আইন দিয়ে সম্ভব নয়, এর জন্য সামাজিক আলোচনার প্রয়োজন।
দেশের রাজনৈতিক কাঠামোর সমালোচনা করে মাহফুজ আলম বলেন, যদি দেশের 'পলিটিক্যাল সেটলমেন্ট' বা রাজনৈতিক সমঝোতার পরিবর্তন না হয়, তবে সার্বিক পরিবর্তনের সম্ভাবনাও কম। এ বিষয়ে দেশের অভিজাত শ্রেণি যথেষ্ট আলোচনা করছে কিনা, তা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন।
তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, একসময় যারা নির্যাতিনের শিকার হয়েছিলেন, তাদের মধ্যেই কেউ কেউ এখন নির্যাতকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছেন, যা নিয়ে গভীরভাবে ভাবার সময় এসেছে। তার মতে, রাষ্ট্রীয়, ধর্মীয়সহ সব ক্ষেত্রেই আলোচনার মাধ্যমেই কেবল স্থায়ী সমাধান আসতে পারে।
এবি/টিকে