কার্লো আনচেলত্তি ব্রাজিলের কোচের দায়িত্ব নিয়েই জানিয়েছিলেন, নেইমারের জন্য জাতীয় দলের দরজা খোলা। কিন্তু সান্তোসের হয়ে খেলা ৩৩ বছর বয়সী তারকাকে এখন পর্যন্ত স্কোয়াডে ডাকেননি। আনচেলত্তি স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছেন, একমাত্র পুরোপুরি ফিট হলেই কেবল তার দলে জায়গা মিলবে। বিশ্বকাপের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে নেইমারের জাতীয় দলে ফেরার সম্ভাবনা যেন ততই ফিঁকে হয়ে আসছে।
নেইমার কি আবার ব্রাজিল জাতীয় দলে ফিরবেন? কার্লো আনচেলত্তি স্পষ্ট করে দিয়েছেন–পথ খোলা আছে, কিন্তু ব্রাজিলিয়ান তারকার হাতে মাত্র ছয় মাস সময় আছে প্রমাণ করার যে তিনি ২০২৬ বিশ্বকাপের দলে থাকার যোগ্য।
ব্রাজিল জাতীয় দল এখন বড় ধরনের পুনর্গঠনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আনচেলত্তি পুরোপুরি পরিষ্কার ধারণা পেতে চান যে কোন ২৬ জনকে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে নিয়ে যাবেন। আর সেই আলোচনায় সবচেয়ে আলোচিত নাম–নেইমার জুনিয়র।
বর্তমানে আফ্রিকা সফরে থাকা স্কোয়াডের বাইরে থাকা সান্তোস তারকার বিশ্বকাপের টিকিট পাকা নয়। তবে তাকে বাতিলও করা হয়নি। আনচেলত্তি নিশ্চিত করেছেন, নেইমার এখনও সম্ভাব্য তালিকায় আছেন, তবে সান্তোসের এই তারকার কাছে স্পষ্ট বার্তাও দিয়েছেন—তার বিশ্বকাপ ভাগ্য নির্ভর করছে সামনে কয়েক মাসে মাঠে কী করেন তার ওপর।
আনচেলত্তি বলেন, 'নেইমার বিশ্বকাপে যেতে পারে এমন খেলোয়াড়দের তালিকায় আছে। শেষ তালিকায় জায়গা করতে তার হাতে ছয় মাস সময় আছে।'
আনচেলত্তি পরিষ্কার করে দিয়েছেন, সিদ্ধান্ত পুরোপুরি হবে মাঠের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে। প্রশ্ন নেইমারের প্রতিভা নিয়ে নয়—এ নিয়ে কারও সন্দেহ নেই। আসল প্রশ্ন তার শারীরিক অবস্থা, কারণ গত এক বছরে ইনজুরি, ব্যর্থতা এবং নিয়মিত খেলার অভাব তার ছন্দ নষ্ট করেছে।
আনচেলত্তি সতর্কবাণী দিয়ে বলেন, 'নেইমার সেরে উঠেছে, কিন্তু তাকে পারফরম্যান্স দেখাতে হবে। ব্রাজিলিয়ান লিগ শেষ হলে তার কিছু ছুটি থাকবে, এরপর আবার তাকে নিজের মান ও শারীরিক সক্ষমতা প্রমাণ করতে হবে।'
বার্তাটি একেবারে স্পষ্ট–ব্রাজিল কোনো 'নাম'–এর পেছনে ছুটবে না, নেওয়া হবে যারা খেলছে ও পারফর্ম করছে। আর বিশ্বকাপে যেতে চাইলে নেইমারকে সেই মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হতে হবে। চতুর্থ বিশ্বকাপে খেলতে হলে তাকে নিজেকে আবার প্রমাণ করতেই হবে।
যদিও নেইমার এখনো অনন্য প্রতিভা, তবু ব্রাজিল এখন নতুন নাম ও বেশি দলভিত্তিক পরিচয়ে পরিবর্তনের পথে। আনচেলত্তি লুকাননি তার পরিকল্পনা–তার লক্ষ্য সবচেয়ে শক্তিশালী দল গড়ে তোলা। অর্থাৎ প্রত্যেক খেলোয়াড়কে মূল্যায়ন করা, এমনকি যারা এখনো সেরা ফর্মে নেই তাদেরও।
এই ইতালিয়ান কোচ আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানিয়েছেন। তিনি সক্রিয়ভাবে খুঁজছেন একজন প্রকৃত নাম্বার-৯। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যে পজিশনটি নিয়ে ব্রাজিল ভুগছে এবং যার উপস্থিতি আক্রমণভাগের পুরো কাঠামোই বদলে দিতে পারে। এই পরিবর্তন সরাসরি নেইমারের ভূমিকার ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে, যিনি ঐতিহাসিকভাবে মাঠের আক্রমণভাগে পূর্ণ স্বাধীনতা উপভোগ করে এসেছেন।
শেষ কথা হলো—এখনই কিছু নির্দিষ্ট নয়। তবে আনচেলত্তি রোডম্যাপ এঁকে দিয়েছেন, যেখানে নেইমারের লক্ষ্য হবে– পুরোপুরি সুস্থ হওয়া, নিয়মিত খেলা, ম্যাচে প্রভাব রাখা এবং তার শরীর যে পুরো মৌসুমের ধকল সামলে নেবে তা প্রমাণ করা। এই চার শর্ত পূরণ করতে পারলে নেইমার বিশ্বকাপের দলে ফিরতে পারবেন, আর ব্যর্থ হলে আনচেলত্তির ব্রাজিল তাকে ছাড়াই এগিয়ে যাবে।
ইএ/টিকে