শেখ হাসিনার পক্ষে বিবৃতি দেওয়া শিক্ষকদের দ্রুত তদন্ত করে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে চার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) এক যৌথ বিবৃতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ এই দাবি জানিয়েছে। শেখ হাসিনার পক্ষে অবস্থান নেওয়া এসব শিক্ষকদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের আহ্বান জানিয়েছে এই নেতারা।
বিবৃতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক এস এম ফরহাদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জিএস মাজহারুল ইসলাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জিএস সাইদ বিন হাবিব স্বাক্ষর করেছেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মানবতাবিরোধী অপরাধী শেখ হাসিনার পক্ষে ‘বাংলাদেশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষকবৃন্দ’ নাম ব্যবহার করে বিবৃতি দেওয়ার সংবাদটি জনগণকে স্তব্ধ ও বিক্ষুব্ধ করেছে। প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, এই বিবৃতিতে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০১ জন শিক্ষক স্বাক্ষর করেছেন বলে দাবি করা হলেও স্বাক্ষর তালিকায় রয়েছে ৬৫৯ জনের নাম।
আদালত যাকে মানবতাবিরোধী অপরাধী হিসেবে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে, সেই খুনির পক্ষে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এমন পক্ষ নেওয়া বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের প্রতি সরাসরি অবজ্ঞা এবং জুলাই বিপ্লবের শহীদ ও আহতদের প্রতি চরম অবমাননা।
বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী খুনি হাসিনার পক্ষে দেওয়া এই বিবৃতিতে কিছু শিক্ষককে না জানিয়েই তাদের নাম স্বাক্ষর তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট সব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে এই বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী শিক্ষকদের চিহ্নিত করতে দ্রুত তদন্ত শুরু করতে হবে। মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত খুনির পক্ষে অবস্থান নেওয়া শিক্ষকদের আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে অব্যাহতি দিতে হবে।
শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, যে সকল শিক্ষক মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত খুনি হাসিনার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, তাদের সব ধরনের ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করুন।
বিবেকহীন এসব শিক্ষকদের সামাজিক ও একাডেমিক সব ক্ষেত্র থেকে প্রতিহত করুন। মানবতাবিরোধী অপরাধীর পক্ষ নেওয়া এই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থা নিশ্চিতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে সম্মিলিত ছাত্র সংসদ আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
আইকে/টিএ