ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস আলী (৭৪) আজ বুধবার ভোরে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান। খবর পেয়ে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানোর জন্য বিকেল ৪টায় সময় নির্ধারণ করে দেয় উপজেলা প্রশাসন। আর সম্মান জানানোর পর জানাজা শেষে তাঁকে দাফন করার প্রস্তুতি নেয় পরিবার।
বিকেলে দেড় ঘণ্টা অপেক্ষার পরও সম্মান জানানোর জন্য প্রশাসনের কেউ হাজির হননি। বিরক্ত হয়ে মুসল্লিরা চলে যাওয়া শুরু করলে পরিবারের সিদ্ধান্তে ৫টার দিকে কাশুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ইউনুস আলীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
পরে লাশ দাফনের জন্য আধা কিলোমিটার দূরে গোরস্তানে নেওয়া হলে সেখানে উপস্থিত হন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আহসান উল হক। তাঁর অনুরোধে আবার কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় হাজির হয় পুলিশ। মাগরিবের নামাজের পর রাষ্ট্রীয় সম্মান দেওয়ার পর মুসল্লিদের তোপের মুখে পড়েন পুলিশ সদস্যরা।
মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস আলীর ভাই ইলিয়াস আলী অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ভাই একজন বীরসন্তান। জীবিত অবস্থায় রাষ্ট্র তাঁকে সম্মানিত করেছে। কিন্তু মৃত্যুর পর তাঁকে সম্মান জানাতে অবহেলা। এটা পুরো পরিবারকে অপমান করা হয়েছে।’
ইউনুস আলীর একমাত্র ছেলে নুর হোসেন কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘প্রশাসন জঘন্য কাজ করেছে। বাবার সম্মানকে হাজারো মানুষের কাছে হেয় করেছে। পুরো পরিবার আমরা লজ্জিত। অনেক মানুষ বাবাকে কটুকথা বলে চলে গেছে। এটার সুযোগ করে দিয়েছে পুলিশ।’
আরেক মুক্তিযোদ্ধার ছেলে জিল্লুর রহমান বলেন, ইচ্ছে করে অবহেলা করেছে পুলিশ। কেন তারা এত দেরি করে এসেছে সম্মান জানাতে। ঘটনার তদন্ত এবং জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
এ ছাড়া জানাজায় অংশ নিয়ে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান কাজি ফাহিম উদ্দীন আহাম্মদ বলেন, এটা দুর্ভাগ্যজনক।
জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আহসান উল হক বলেন, দূরের রাস্তা হওয়ার কারণে কিছু লেট (দেরি) হয়েছে। বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুরুল হুদা বলেন, সময়মতো পুলিশকে জানায়নি মুক্তিযোদ্ধার পরিবার। তাই এমনটা হয়েছে। ঠাকুরগাঁও থেকে পুলিশ সদস্যদের আসতে একটু সময় লাগবেই।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মফিজুর রহমান বলেন, সময়মতো পুলিশকে জানানো হয়েছে। আগে স্থানীয় থানার পুলিশ সদস্যরা সম্মান জানাত। এখন ঠাকুরগাঁও থেকে আসতেছে। তাই একটু সময় বিলম্ব হয়েছে।
এবি/টিকে