থাইল্যান্ডের ব্যাংককে জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো মিস ইউনিভার্সের ৭৪তম আসর। বিশ্বের অন্যতম এই মর্যাদাপূর্ণ আসরে বাংলাদেশ থেকে অংশ নিয়েছিলেন তানজিয়া জামান মিথিলা। ১২২টি দেশের প্রতিযোগীদের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে তিনি জায়গা করে নিয়েছিলেন সেরা ৩০-এ। যদিও শেষ হাসিটা হাসা হয়নি, তবু বাংলাদেশের জন্য এটি একটি ঐতিহাসিক অর্জন।
মিথিলার যাত্রাটি মোটেও সহজ ছিল না। প্রিলিমিনারি রাউন্ড থেকেই নিজের আত্মবিশ্বাস ও সৌন্দর্য দিয়ে বিচারকদের নজর কাড়েন তিনি। বিশেষ করে প্রিলিমিনারি পর্বে নীল রঙের বিকিনিতে সুইমস্যুট রাউন্ডে তার উপস্থিতি ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রশংসা কুড়ায়। ‘পিপলস চয়েস’ ভোটিংয়েও তিনি বেশ এগিয়ে ছিলেন, যদিও ভোটিং নিয়ে তার কিছুটা হতাশা ছিল।
অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, ভোটিংয়ে এগিয়ে থেকেও কেন সেরা ৩০-এই থামতে হলো? আসলে মিস ইউনিভার্সের মতো আসরে কেবল দর্শকদের ভোটই যথেষ্ট নয়। সেরা ৩০ বা পরবর্তী রাউন্ডে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ইভেন্টে প্রতিযোগীর পারফরম্যান্স, বুদ্ধিমত্তা, বাচনভঙ্গি এবং সর্বোপরি বিচারক বা জুরি বোর্ডের চুলচেরা বিশ্লেষণ মূল ভূমিকা পালন করে। এই সামগ্রিক মানদণ্ডেই নির্ধারিত হয় বিজয়ীদের তালিকা।
তবে ১২২ দেশের সুন্দরীদের ভিড়ে সেরা ৩০-এ জায়গা করে নেওয়াও কম গর্বের বিষয় নয়। মিথিলার এই অর্জনে উচ্ছ্বসিত তার ভক্তরা। মিস ইউনিভার্সের আয়োজকদের একাংশ ‘মিসোলজি অফিশিয়াল’ মিথিলাকে বিশেষ অভিনন্দন জানিয়ে একটি পোস্টে লিখেছে, “বাংলাদেশ এবং তানজিয়া জামান মিথিলাকে অনেক অভিনন্দন ইতিহাসের প্রথম প্লেসমেন্ট অর্জন এবং দেশের জন্য বড় সম্মান বয়ে আনার জন্য। তাদের বিশাল প্রচেষ্টা এবং সমর্থন বৃথা যায়নি।”
মিথিলার এই সাফল্যে ‘মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ’ কর্তৃপক্ষও তাকে অভিনন্দন জানিয়ে লিখেছে, “এটি বাংলাদেশের জন্য একটি ইতিহাস গড়ার মুহূর্ত। অভিনন্দন তানজিয়া জামান মিথিলা এবং ধন্যবাদ সকল সমর্থককে।” এছাড়াও দেশের বিনোদন অঙ্গনের তারকারাও মিথিলার এই অর্জনকে স্বাগত জানিয়েছেন।
নানা বিতর্ক ও নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে শেষ পর্যন্ত মেক্সিকোর ফাতিমা বশ -এর মাথায় উঠল ‘মিস ইউনিভার্স ২০২৫’-এর মুকুট। আসর শুরুর আগেই এক প্রি-পেজেন্ট মিটিংয়ে থাই পেজেন্ট পরিচালকের হাতে অপমানিত হয়েছিলেন ফাতিমা, যা নিয়ে প্রতিযোগীদের মধ্যে ক্ষোভ ও ওয়াক-আউটের ঘটনাও ঘটেছিল। কিন্তু সেই অপমানকে শক্তিতে রূপান্তর করে দর্শকদের প্রিয়পাত্রী হয়ে ওঠেন ২৫ বছর বয়সী এই সমাজকর্মী। তাকে মুকুট পরিয়ে দেন গতবারের বিজয়ী ডেনমার্কের ভিক্টোরিয়া কেজার থেলভিগ। বিউটি পেজেন্টের ‘সুপার বোল’ খ্যাত এই আসরে ফাতিমার এই জয় নারীশক্তির এক অনন্য উদাহরণ।
এবারের আসরে প্রথম রানারআপ হয়েছেন স্বাগতিক দেশ থাইল্যান্ডের প্রবীনার সিং। এছাড়াও সেরা ৫-এ জায়গা করে নিয়েছেন ভেনেজুয়েলা, ফিলিপাইন এবং আইভরি কোস্টের সুন্দরীরা। সুইমস্যুট রাউন্ডের পর ৩০ জনকে বাছাই করা হয়, যা পরে ইভিনিং রাউন্ড শেষে ১২ এবং সবশেষে ৫ জনে নামিয়ে আনা হয়। এবারই প্রথমবারের মতো ফিলিস্তিনের প্রতিনিধিত্ব করেন নাদিন আইয়ুব, যিনি সেরা ৩০-এ জায়গা করে নিয়েছিলেন।
এসএন