শাপলা কলির ডিজাইন পাইনি, নির্বাচনী প্রচারণার কাজে নামতে পারছি না: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, নির্বাচন কমিশন থেকে শাপলা কলির ডিজাইন পায়নি। আমরা নির্বাচনী প্রচারণার কাজে নামতে পারছি না। এই ধরনের পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আমরা যাচ্ছি।

রোববার (২৩ নভেম্বর) সকালে শহীদ আবু সাঈদ কনভেনশন হলে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, আমাদের দল গঠনের পরে রেজিস্ট্রেশনের জন্য সব পেপার সাবমিট করার পরে আমাদের প্রত্যেকটা দলীয় অফিসে হয়রানি করা হয়েছে। বিভিন্ন সংস্থার যারা ব্যক্তিবর্গ রয়েছেন, তারা সেখানে যারা ভাড়া দিয়েছিল, তাদের ডিস্টার্ব করেছিল। মাঠ পর্যায়ে তাদের হুমকি থেকে শুরু করে পারিবারিক হেনস্তা পর্যন্ত করেছিল। প্রতীকের ক্ষেত্রে আমাদের তারা জুতার তলা ক্ষয় করেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বৃহত্তর স্বার্থে দেশের পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা শাপলাকলি মার্কা নিয়েছিলাম। কিন্তু এখন পর্যন্ত ইলেকশন কমিশন থেকে আমরা আমাদের শাপলা কলির যে ডিজাইনটা এটা এখনো পাইনি। আমরা নির্বাচনী প্রচারণার কাজে নামতে পারছি না। এই ধরনের পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আমরা যাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, জুলাই সনদ এবং সংস্কার প্রক্রিয়া ঐকমত্য কমিশন থেকে আদেশ বাস্তবায়ন পর্যন্ত আমাদের একটা জার্নি ছিল। আমরা বলেছিলাম, সংস্কার বিচার তারপরে হলো নির্বাচন। সংস্কারের কার্যক্রম একটা প্রক্রিয়ায় গিয়েছে। এখন আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর ওপরে এটা বাস্তবায়ন কীভাবে আমরা করব? তাদের কমিটমেন্ট ইস্যু এবং বিচারের জায়গায় শেখ হাসিনার রায় হয়েছে। আমরা গতকালকে মিছিল করেছিলাম যে তার রায়টা যেটা হয়েছে এটা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় সরকারকে যাওয়ার জন্য। আমরা এই দুইটা প্রক্রিয়ার শেষ করে, ইলেকশন প্রসেসে যাচ্ছি। আমরা যে কমিটমেন্টটা দিয়েছিলাম সেই কমিটমেন্টটা আমরা রেখেছি। আগামীতে ইনশাআল্লাহ সংসদে গিয়ে জনগণকে যে কমিটমেন্টগুলো সেগুলো ইনশাআল্লাহ বাস্তবায়ন করার প্রচেষ্টা চালাবো।

২৪ গণঅভ্যুত্থানের চেতনা বিক্রি করা হচ্ছে? এমন প্রশ্ন তুলে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল সেখানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং ন্যায়বিচার। এই তিনটি চেতনা থেকে মুক্তিযুদ্ধকে শুধু আওয়ামী লীগ নিজের পকেটস্থ করেছিল। ফলে চেতনা অর্থ খারাপ না, স্পিরিট জিনিসটা খারাপ না, যদি সাম্য, মানবিক, মর্যাদা এবং ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে একটি দেশ আমরা গড়তে পারতাম, তাহলে আজকে ২০২৪ এ এসে আমাদের ২০০০ শহীদ হতো না। তেমনিভাবে যারা কুলি, মজুর শ্রমিক আমাদের শিক্ষার্থী ভাইয়েরা রাজপথে এসে রক্ত দিয়ে ছিলেন। তারা একটা স্পিরিটের জন্য রক্ত দিয়েছিলেন। তাদের স্পিরিটটা ছিল বাংলাদেশে একটা নিউ সেটেলমেন্ট হবে। বাংলাদেশে একটা সোশ্যাল কন্টাক্ট হবে। বাংলাদেশের পলিটিক্যাল কালচার যেটা রয়েছে সেটার পরিবর্তন হবে। এই অভ্যুত্থানের স্পিরিট ছিল আর কোনো ব্যক্তি বা পরিবার করতে পারবে না। এই অভ্যুত্থানের স্পিরিট ছিল আমরা নারীদের জন্য একটি সুন্দর সমাজ তৈরি করব। এই অভ্যুত্থানের স্পিরিট ছিল আমাদের যারা মিডিয়া সেক্টরে ভাইয়েরা কাজ করছেন তাদের জন্য আমরা সুন্দর এনভায়রনমেন্ট সৃষ্টি করে দেব।

তিনি আরও বলেন, গণঅভ্যুত্থানের যারা লড়াইটা করেছিল তাদের সংসদে যাওয়াটা অপরিহার্য। এই জন্য আমরা যারা ভালো ক্যান্ডিডেট তাদের ঘোষণা করব। আজকে তাদের ভাইভা শুরু হবে। তারা শাপলা কলি মার্কা নিয়ে সংসদে যাবে। তারা আপনাদের যে স্পিরিট গুলো রয়েছে, আমরা সংসদে গিয়ে সত্যিকার অর্থে বাস্তবায়ন করবো।

বিচার বিভাগ স্বাধীন নয় জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা বিচার বিভাগ স্বাধীন করতে চাই। এটা গণঅভ্যুত্থানের চেতনা। যেই চেতনাগুলার কথা বলি আমরা সেগুলো যদি সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করতে পারি, তাহলেই ভবিষ্যৎ যে বাংলাদেশের স্বপ্নটা আমি আপনি দেখি সেটা আমাদের গঠন করা সম্ভব।

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, নির্বাচন কমিশনে যারা আওয়ামী লীগ ছিল, তাদের তারা রিমুভ করে নাই। প্রশাসনে যারা আওয়ামী লীগ ছিল তাদের এখনো রেখে দিয়েছে। প্রস্তাবনা উঠেছিল দলীয় বিবেচনায় বিভিন্ন জায়গায় প্রশাসনিক নিয়োগ না দিয়ে স্বচ্ছ একটা প্রক্রিয়ার মধ্যমে দেওয়া। আমাদের প্রশাসনের যিনি এখন হেড এই কার্যক্রমটা ইউনূস স্যার হাতে নিয়েছেন।

আমাদের যে রাজনৈতিক কালচার রয়েছে, সেই দলগুলোকে বিভিন্নভাবে আগে যেভাবে ডিজিএফআই থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংস্থা ব্যবহার করে হুমকি-ধামকি দিয়ে বিভিন্ন অ্যালায়েন্সে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। সেভাবেই এখন এই প্রক্রিয়াগুলো চলমান রয়েছে।

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, আমরা একটা রেভলেশনারি ফোর্স হিসেবে কাজ করেছিলাম। আমরা এখন ডেমোক্রেটিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যাচ্ছি। কিন্তু এই ডেমোক্রেটিক প্রক্রিয়ায় আমরা যখন তরুণদের নিয়ে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, আজকে আমরা যেখানে উপস্থিত হয়েছি আমাদের ১০টা বোর্ড রয়েছে। প্রত্যেকটা বোর্ডে ১০ জন করে মেম্বার রয়েছেন। আমাদের এই পর্যন্ত ১ হাজার ৪৮৪ আবেদন ফর্ম দিতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের প্রতি আসনে গড়ে পাঁচজন করে প্রার্থী রয়েছেন। আমরা অনলাইন এবং অফলাইন দুটি প্রক্রিয়ায় ফর্ম ছেড়েছিলাম। আমাদের অফলাইনে ৭৬১ জন ফর্ম নিয়েছে। আমাদের অনলাইনে ৭২৩ জন ফর্ম নিয়েছিলেন। সুতরাং আমরা আজকে তাদের ভাইভা শুরু করেছি। আমাদের যারা বিভাগীয় সম্পাদক আপনারা জানেন তাদের নিয়ে আমরা বসেছি। এখানে ১০টা সাংগঠনিক বিভাগ আমরা করেছি।

আরপি/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
'জি লে জারা' বাতিল নয়, তবে অনিশ্চিত তারকা তালিকা Nov 23, 2025
img
কমনওয়েলথ মহাসচিবকে নির্বাচনের অগ্রগতি জানালেন সিইসি Nov 23, 2025
img
ছেলেটাকে খুব ছুঁয়ে দেখতে মন চায়: মাহিয়া মাহি Nov 23, 2025
img
আইরিশদের বড় ব্যবধানে সিরিজ হারাল বাংলাদেশ Nov 23, 2025
img
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে নারী চিকিৎসকের মৃত্যু Nov 23, 2025
img
টিয়ার-থ্রি শহরে ১০০ নতুন সিনেমা পর্দা খুলছে পিভিআর Nov 23, 2025
img
বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখতে চাইলে শেখ হাসিনাকে ফেরত দিন: ফারুক Nov 23, 2025
img
ভূমিকম্পের ক্ষতি মোকাবেলায় দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা Nov 23, 2025
img
বিরতির পর আবার পর্দায় ফিরছেন বিদ্যা সিনহা মিম Nov 23, 2025
img
ইন্দোনেশিয়ায় ৫ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প Nov 23, 2025
img
বড়দিনকে সামনে রেখে লিসবনে আলো উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন Nov 23, 2025
img
৩০ দলের মতামতের ভিত্তিতে কাঠামোগত সংস্কারের সূচনা সম্ভব: অধ্যাপক আলী রীয়াজ Nov 23, 2025
img
গডফাদার-সন্ত্রাসীরাই এমপি হয়, এই ধারণা আমরা ভাঙবো: তাসনিম জারা Nov 23, 2025
img
৪৭তম বিসিএস পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে রেললাইন অবরোধ করেছে বাকৃবির শিক্ষার্থীরা Nov 23, 2025
img
বড় আকারের ভূমিকম্প মোকাবিলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার Nov 23, 2025
img
জুলাই আন্দোলনের বিরোধিতাকারী শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে রুল Nov 23, 2025
img
আর্থিক খাতে ‘বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরো’ অবস্থা: গভর্নর Nov 23, 2025
img
যে যেভাবে পারছে, তলার পর তলা উঠিয়ে দালান তৈরি করছে: রিজভী Nov 23, 2025
img
শুল্কের হুমকি দিয়ে ৫ যুদ্ধ থামিয়েছি: ট্রাম্প Nov 23, 2025
img
শাপলা কলির ডিজাইন পাইনি, নির্বাচনী প্রচারণার কাজে নামতে পারছি না: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী Nov 23, 2025