প্রশাসনকে আন্ডারে (কব্জায়) আনা নিয়ে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরীর বক্তব্যের বিষয়ে জামায়াতের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু জবাব দেওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু।
তিনি বলেন, থানা পুলিশ, ডিসি-এসপি বা প্রশাসন নিয়ন্ত্রণে থাকলেই যদি নির্বাচন কন্ট্রোলে চলে যায়, তাহলে আর মানুষের দরকার কী? এভাবে হলে জনগণের ভোটের অধিকার কীভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে? অতীতের এ খারাপ চর্চা দূর করতে হবে। আমরা এমন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এ ধরনের প্রচেষ্টা নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করার লক্ষণ।
রোববার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে ফেনী শহরের গ্র্যান্ড সুলতান কনভেনশন হলে জেলা এবি পার্টি আয়োজিত ফেনী-২ আসনে নিজের প্রার্থিতা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, জুলাইয়ের স্পিরিট যারা ধারণ করে তাদের নিয়ে একটি জোট করার চিন্তা করেছি। আগামী ২৫ নভেম্বর এ নিয়ে একটি ঘোষণা আসতে পারে। সেখানে এবি পার্টি, এনসিপি ছাড়াও আরও কয়েকটি রাজনৈতিক দল থাকতে পারে। এছাড়া বিএনপির পক্ষ থেকে আমাদের জন্য দু-চারটি আসন খালি রাখার কথা বলেছিল। কিন্তু এ ধরনের রাজনৈতিক জায়গায় আমরা যেতে চাইনি। বিনয়ের সঙ্গে তা গ্রহণ করিনি। আমরা নতুন দল, সে হিসেবে বলেছি নিজেদের দাঁড় করাতে চাই। আমাদের সঙ্গে যদি কোনো রাজনৈতিক সমঝোতা হয় সেটি আলাদা জিনিস। যে জোট করতে যাচ্ছি সেটিও রাজনৈতিক জোট, ইলেকশনের নয়।
ফেনীকে মডেল আসনে রূপ দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, এবি পার্টির কোনো নেতাকর্মী ঘাটলায় বসে বিচারকাজ বা সিদ্ধান্ত দিতে পারবে না। অর্থাৎ ঘাটলার রাজনীতি চলবে না। এছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের যার কাজ সে করবে, প্রভাবিত করা যাবে না। আমরা কোনো ধরনের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করব না। সরকারের বরাদ্দগুলোর বিষয়ে জনসম্মুখে জানিয়ে দেওয়া হবে, এতে প্রশাসন ন্যায়সঙ্গতভাবে কাজ করবে। সকলের সহযোগিতা থাকলে আমরা ফেনী-২ আসনকে মডেল হিসেবে রূপ দিতে পারব।
মঞ্জু বলেন, দল হিসেবে আমাদের এটি প্রথম নির্বাচন, সঙ্গে আমারও প্রথম নির্বাচনে অংশগ্রহণ। একজন সংসদ সদস্য দেশের জন্য আইন প্রণয়ন, বাজেট কার্যে অংশগ্রহণ ও হিসাব নিশ্চিত এবং এলাকার বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ভূমিকা রাখা গুরুত্বপূর্ণ কাজ। তৃতীয় কাজটি বাস্তবায়নে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তদারকি করেন। কিন্তু আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় এটিই অন্যতম ধরা হয়। আমাদের দেশে এমপির কাছ থেকে জনগণ ওয়াদা চান যে, আপনি কি করবেন? এসব থেকে বের হয়ে এসে আমি বলব, নির্বাচনে বিজয়ী হলে কী করব এটির চেয়েও কী কী করব না সেটি গুরুত্বপূর্ণ।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, এ আসনে অন্য প্রার্থীরা আমার অত্যন্ত শ্রদ্ধেয়। উনাদের তুলনায় আমি অনেক নতুন। আমরা জনগণের কাছে একটি আবেদন নিয়ে এসেছি। পরিবর্তন চাইলে চিন্তা ও কর্ম পদ্ধতির পরিবর্তন দরকার। কিন্তু আমার সিনিয়ররা এখনো পুরোনো প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। এ প্রজন্ম আর পুরোনো সেই সংস্কৃতি চান না। আমাদের কাছে পরিবর্তনের যেই বড় সুযোগ এসেছে তা আগে কখনো আসেনি।
এবি পার্টির ফেনী জেলা সভাপতি মাস্টার আহসান উল্লার সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য দেন এবি পার্টির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী শাহ আলম।
এ সময় এবি পার্টির পেশাজীবী পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট সাইফুল্যা নোমান, জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহের হোসেন বাহার, সদস্য সচিব অধ্যাপক ফজলুল হক, যুগ্ম সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম কামরুল, মামুন আনসারী, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদাত সাজু, কোষাধ্যক্ষ শাহীন সুলতানী, প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক হাবীব মিয়াজীসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ইউটি/টিএ