মানুষের রচিত মতবাদ বাংলাদেশে রাখতে চাই না : মুজিবুর রহমান

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, আমরা মানুষের রচিত মতবাদ বাংলাদেশে রাখতে চাই না। আমরা আল্লাহর বিধান অনুযায়ী সংবিধান তৈরি করতে চাই। ইসলামের সাথে সংঘর্ষপূর্ণ বিধানগুলোকে বাতিল করে মদিনার সনদের আলোকে, কুরআনের সংবিধান অনুযায়ী দেশ চালাতে চাই।

‎মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) বিকেলে বরিশালের বেলস পার্ক মাঠে পাঁচ দফা দাবিতে আট দল আয়োজিত সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক মজিবুর রহমান বলেন, আল্লাহ তায়ালা সুরা মায়েদার ৪৪, ৪৫ এবং ৪৭-এই তিনটি আয়াতে বলেছেন, যারা আল্লাহর নাজিলকৃত বিধান অনুযায়ী রাষ্ট্র বা বিচারকার্য পরিচালনা করে না, তারা কাফের, তারা জালেম, তারা ফাসেক। এই অপবাদ যাতে আমাদের ঘাড়ে না আসে, তাই বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে বলব- আসেন আমরা বাংলাদেশকে মানুষের আইন দিয়ে নয়, আল্লাহর নাজিলকৃত বিধান কুরআনের আইন দিয়ে চালাই।

তিনি বলেন, বিগত ৫৪ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশে কুরআন মাজিদের একটা আইনও জাতীয় সংসদে পাস হয় নাই। ৫৪ বছরে বিগত দলগুলো আল্লাহর আইন চালু করার কোনো ভূমিকা রাখে নাই। এ দল দেখাও শেষ, ওই দল দেখাও শেষ। আগামী দিন ইসলামের বাংলাদেশ।

জুলাই বিপ্লব ও বিগত সরকারের বিচার প্রসঙ্গে এই জামায়াত নেতা কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বিগত সরকার মানুষ হত্যা করেছে, খুন করেছে, গুম করেছে। তাদের বিচার শুরু হয়েছে।

কেউ যদি বলে আমরা ক্ষমতায় গেলে এসব মামলা তুলে নেব, তাহলে তা হবে জুলাই বিপ্লবের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা। যারা অন্যায় করেছে এবং যারা অন্যায়কে সাহায্য করেছে- তাদের বিচার হতে হবে। কারণ অন্যায়কারী এবং সাহায্যকারী উভয়ের অপরাধ সমান।

আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে যারা অতীতে অন্যায় কাজ করেছে, তাদের অংশগ্রহণ করা মোটেই উচিত না। ইতোমধ্যে একটি দলের কার্যকলাপ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এখন তাদেরকে যারা সাহায্য করেছিল, তাদেরও একই শাস্তি হওয়া উচিত।

সমাবেশে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে অধ্যাপক মজিবুর রহমান বলেন, আমরা দুনিয়ার জীবনে বেশি দিনের জন্য আসি নাই। আল্লাহর কাছে যখন ফিরে যাব, তখন যদি জিজ্ঞাস করা হয়- তোমার জীবন বিধান কী ছিল? আমরা সবাই বলব ইসলাম। তাই আসুন, সকল ইসলামি দল ও প্রতিষ্ঠান ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাংলাদেশে কুরআনের আইন চালু করি। আমরা এই জোট ও সমাবেশকে সফল করার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব ইনশাআল্লাহ।

চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ছাত্রজীবনে অনেকের কাছে শুনে মনে করতাম যে পীর মানে এর ভিতরে ভেজাল আছে, বেদাত আছে, বিভিন্ন ধরনের চিন্তা আছে। কিন্তু আজকে পীর সাহেবের পাশে বসে তার কথা, তার আচরণ আমার কাছে মনে হয়েছে—বাংলাদেশের ইনি পীর নয়, বাংলাদেশের ইসলাম কায়েম করার জন্য এক মহা বীর। আমি দোয়া করি আল্লাহ তাআলা তাকে ইসলাম কায়েমের একজন মস্ত বড় বীর হিসাবে বাংলাদেশের টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত কোরআন এবং সুন্নাহর আইন প্রতিষ্ঠার এই বিজয়কে যেন ত্বরান্বিত করতে পারেন।

সমাবেশে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির নেতারা বক্তব্য দেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। 

আইকে/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
পবিত্র শবে মেরাজ কবে, জানা গেল তারিখ Dec 22, 2025
img
শীত-কুয়াশা নিয়ে ৫ দিনের পূর্বাভাস নিয়ে আবহাওয়া অফিসের বার্তা Dec 22, 2025
img
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশকালে ২৭ জন আটক Dec 22, 2025
img
বিপিএলের প্রস্তুতিতে মুখোমুখি রংপুর-রাজশাহী Dec 22, 2025
img
ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র পরিদর্শন করলেন হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা Dec 22, 2025
img
তারেক রহমানকে সংবর্ধনায় প্রস্তুত হচ্ছে মঞ্চ Dec 22, 2025
img
নাইজেরিয়ায় মুক্তি পেল অপহৃত ১৩০ শিক্ষার্থী Dec 22, 2025
img
ভুয়া তথ্য ছড়ানোর অপচেষ্টা শনাক্ত করল বাংলাফ্যাক্ট Dec 22, 2025
img
ঢাকাবাসীর জন্য বড় সুখবর মেট্রোরেল কার্ড রিচার্জে Dec 22, 2025
img
মঞ্চ থেকে কারাগারের পথে মার্কিন র‍্যাপার Dec 22, 2025
img
বুন্দেসলিগায় কেইনের দ্রুততম ‘সেঞ্চুরি’ Dec 22, 2025
img
১৬ বছর পর ভাঙল অভিনেত্রী শ্রীনন্দা শঙ্করের সংসার Dec 22, 2025
img
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৯ Dec 22, 2025
img
সাবেক সাংসদ সুকুমার রঞ্জন ঘোষ আর নেই Dec 22, 2025
img
খালাস চেয়ে সাবেক আইজিপি মামুনের আপিল Dec 22, 2025
img
৪৫তম ম্যাচসেরা পুরস্কার নিয়ে রশিদ-হেলসের সাথে সাকিব Dec 22, 2025
img
সালাহউদ্দিন আম্মারকে মব-সন্ত্রাসী আখ্যা দিল রাবি ছাত্রদল Dec 22, 2025
img
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদক প্রদান সৌদি আরবের Dec 22, 2025
img
ভোট দেওয়ার জন্য ৫ লাখ ৭৫ হাজারের বেশি প্রবাসীর নিবন্ধন Dec 22, 2025
img
অস্ত্রোপচার শেষে পেটে ব্যান্ডেজ নিয়েই শুটিংয়ে ইমরান হাশমি Dec 22, 2025