দেশের ওষুধ শিল্পকে বৈশ্বিক মানে এগিয়ে নিতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান

আমাদের বিপুল জনসংখ্যা বোঝা নয় বরং মানবসম্পদ, তাই ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যাকে কর্মের হাতিয়ারে পরিণত করে মানবসম্পদে পরিণত করলেই দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) দুপুর ১টায় রাজধানীর শেওড়াপাড়ার মেহফিল কনভেনশন হলে ঢাকা ১৫ আসনের ওষুধ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির (বিসিডিএস) কেন্দ্রীয় নেতা এএএম আব্দুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র সহ সভাপতি মাহবুবুর রহমান মাসুমের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দিন মানিক।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ আমাদের প্রিয় জন্মভূমি। আয়তনে খুবই ছোট হলেও আমাদের জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি। কেউ কেউ এ বর্ধিত জনসংখ্যাকে বোঝা মনে করলেও মানুষ কখনো কোনো দেশের জন্য বোঝা নয় বরং তা অবশ্যই মানবসম্পদ। তাই আমাদের দেশের মানুষ শক্তিশালী জনশক্তিতে পরিণত করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, রাসূল (সা.) দুর্বল মানুষের চেয়ে সবল মানুষকে বেশি পছন্দ করতেন। আর এ সবল দু’ভাবে হতে পারে। এক শারীরিকভাবে সবল, আর অপরটি হচ্ছে ঈমানী শক্তিতে বলীয়ান। মূলত সুস্থতা আল্লাহ তায়ালার বড় নিয়ামত। তাই অসুস্থ হওয়ার আগে সুস্থতাকে গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। আর দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিতে হলে একটি স্বাস্থ্যবান জনশক্তির কোনো বিকল্প নেই। তাহলেই আমরা আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সক্ষম হব।

জামায়াত আমির বলেন, আমাদের দেশের একশ্রেণির চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। তারা ওষুধ কোম্পানিগুলোর কাছে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে তাদের হয়ে কাজ করে থাকেন। এক্ষেত্রে তারা নীতি-নৈতিকতার কোনো ধার ধারেন না বরং নিজেদের বৈষয়িক সুবিধাকে বেশি গুরুত্ব দেন। মূলত, দুনিয়াবী জিন্দিগির শান-শওকত বাড়ানোর জন্য লোভে পেয়ে বসে। এজন্য তারা হালাল-হারামের ধার ধারেন না। তারা মানুষের জীবন নিয়ে রীতিমতো দায়িত্বহীন আচরণ করেন।

তিনি বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পের অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে বলেন, নিকট অতীতে আমাদের দেশের ওষুধ শিল্প ছিল বিদেশি কোম্পানি নির্ভর। কিন্তু সে অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। এখন ৩৮ দেশে আমাদের দেশ থেকে ওষুধ রপ্তানি করা হয়। তিনি দেশীয় ওষুধ শিল্পকে বৈশ্বিক মানে এগিয়ে নিতে সংশ্লিষ্টদের কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।

ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, সব চিকিৎসক যেমন খারাপ নন, ঠিক তেমনি সবাই ভালোও নন। একশ্রেণির ওষুধ কোম্পানি চিকিৎসকদের পেছনে অহেতুক বিনিয়োগ করেন। এরা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য কোম্পানির অনুকূলে কাজ করে জনগণকে ধোঁকা দেন। হারাম-হালাল বিবেচনা করা হয় না। অথচ যাদের জন্য এসব করা হয় তারা কিন্তু আদালতে আখেরাতে তাদের পক্ষে সাক্ষ্য দেবে না।

তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমাদের বিবেক বিরুদ্ধ কাজ করলে চলবে না বরং সবাইকে ভালো হতে হবে। আর ভালো হলে দুনিয়াতে সবার বাহবা পাওয়া না গেলে আল্লাহর পক্ষ থেকে মহাপুরুষ্কার রয়েছে। তিনি জীবনের সব ক্ষেত্রে একমাত্র আনুগত্য করতে তিনি চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট সহ সবার প্রতি আহ্বান জানান।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, পেশাজীবী জোনের সহকারী পরিচালক জিয়াউল হাসান, কাফরুল জোনের সহকারী পরিচালক মো. শহিদুল্লাহ, আসনের সদস্য সচিব শাহ আলম তুহিন কাফরুল দক্ষিণ থানা সেক্রেটারি আবু নাহিদ, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট থানার আমির সোহেল রানা, সাহিত্য-সংস্কৃতি থানার আমির আবেদুর রহমান, কাফরুল পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত আমির আতিক হাসান রায়হান, আদর্শ শিক্ষক পরিষদের সভাপতি প্রফেসর কামাল উদ্দিন, ব্যবসায়ী বিভাগের সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মাদ ইসমাঈল, ডা. হাসানুল বান্না, জসিম উদ্দিন, হাফেজ আশিকুর রহমান, আবু নাহিদ ও মুফতি মাসুদুর রহমান প্রমুখ।

এমআর 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
পবিত্র শবে মেরাজ কবে, জানা গেল তারিখ Dec 22, 2025
img
শীত-কুয়াশা নিয়ে ৫ দিনের পূর্বাভাস নিয়ে আবহাওয়া অফিসের বার্তা Dec 22, 2025
img
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশকালে ২৭ জন আটক Dec 22, 2025
img
বিপিএলের প্রস্তুতিতে মুখোমুখি রংপুর-রাজশাহী Dec 22, 2025
img
ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র পরিদর্শন করলেন হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা Dec 22, 2025
img
তারেক রহমানকে সংবর্ধনায় প্রস্তুত হচ্ছে মঞ্চ Dec 22, 2025
img
নাইজেরিয়ায় মুক্তি পেল অপহৃত ১৩০ শিক্ষার্থী Dec 22, 2025
img
ভুয়া তথ্য ছড়ানোর অপচেষ্টা শনাক্ত করল বাংলাফ্যাক্ট Dec 22, 2025
img
ঢাকাবাসীর জন্য বড় সুখবর মেট্রোরেল কার্ড রিচার্জে Dec 22, 2025
img
মঞ্চ থেকে কারাগারের পথে মার্কিন র‍্যাপার Dec 22, 2025
img
বুন্দেসলিগায় কেইনের দ্রুততম ‘সেঞ্চুরি’ Dec 22, 2025
img
১৬ বছর পর ভাঙল অভিনেত্রী শ্রীনন্দা শঙ্করের সংসার Dec 22, 2025
img
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৯ Dec 22, 2025
img
সাবেক সাংসদ সুকুমার রঞ্জন ঘোষ আর নেই Dec 22, 2025
img
খালাস চেয়ে সাবেক আইজিপি মামুনের আপিল Dec 22, 2025
img
৪৫তম ম্যাচসেরা পুরস্কার নিয়ে রশিদ-হেলসের সাথে সাকিব Dec 22, 2025
img
সালাহউদ্দিন আম্মারকে মব-সন্ত্রাসী আখ্যা দিল রাবি ছাত্রদল Dec 22, 2025
img
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদক প্রদান সৌদি আরবের Dec 22, 2025
img
ভোট দেওয়ার জন্য ৫ লাখ ৭৫ হাজারের বেশি প্রবাসীর নিবন্ধন Dec 22, 2025
img
অস্ত্রোপচার শেষে পেটে ব্যান্ডেজ নিয়েই শুটিংয়ে ইমরান হাশমি Dec 22, 2025